মঙ্গলবার ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি কাজী জিহাদুল কবির ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ঘটনায় দু’টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি কাজী জিহাদুল কবিরকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট লুৎফন্নাহার নাজীমকে প্রধান করে অপর আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কুতুবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাখাওয়াত হোসেনের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে ৭ ডিসেম্বর (শনিবার) বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা। খবর পেয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান ও নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে শ্রেণিকক্ষে পাঠায়। ওই বিষয়টি নিয়ে সোমবার (৯ ডিসেম্বর) বিকেলে কুতুবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে মিটিং করেন উপজেলা প্রশাসন। তখন প্রধান শিক্ষকের অনিয়ম তদন্তের জন্য কমিটি গঠন করে দিলে তার প্রতিবাদ জানায় শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় অভিভাবকরা। তারা প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ দাবি করে ফের বিক্ষোভ করে। এসময় উপজেলা প্রশাসন, পুলিশসহ সংশ্লিষ্টরা বিক্ষোভকারীদের বুঝানোর চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে বিক্ষুব্ধরা উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউএনও'র গাড়ি ভাঙচুর করে। পরে পুলিশ প্রায় ৪০ রাউন্ড গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বিক্ষোভে বিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষার্থী, সাবেক শিক্ষার্থীসহ কিছু স্থানীয়রা অংশ নেয়। রাতে অতিরিক্ত পুলিশ ও র্যাব মোতায়েন করা হয়।
মঙ্গলবার সকালে ঘটনাস্থলে তদন্তে আসেন ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি জিহাদুল কবির, জেলা পুলিশ সুপার (ভারপ্রাপ্ত) উত্তম কুমার পাঠকসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা। কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল ছাড়াও আক্রান্ত ব্যক্তি, সাংবাদিকসহ অনেকের কাছ থেকে ঘটনার বর্ণানা শোনেন।
এদিকে সোমবার রাতে ঘটনাস্থল ও আশপাশ থেকে ২৫ জনকে আটক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে শিবচর থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) মারুফুল হক বাদী হয়ে ৫২ জনকে চিহ্নিত আসামি ও অজ্ঞাতনামা আরো ১ হাজার থেকে ১২শ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এছাড়া গতকাল রাতে আটক ২২ আসামিকে মাদারীপুর আদালতে পাঠানো হয়।
শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, সোমবার বিকেলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা চেয়ারম্যান বিদ্যালয়ে যান। সেখানে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সমঝোতা বৈঠকে অবরুদ্ধ হওয়ার খবর পেয়ে পুলিশ নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ ও ফাঁকা গুলি ছুড়ে। ওই এলাকায় র্যাব, পুলিশ অভিযান শুরু করেছে।
শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসাদুজ্জামান বলেন, গত তিনদিন ধরে শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবি জানিয়ে আসছিল। সোমবার বিকেলে উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা মাধ্যমিক অফিসারকে নিয়ে এলাকায় যাই। সেখানে ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে সসঝোতা করার চেষ্টা করি। কিন্তু শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী প্রশাসনের আশ্বাস না মেনে বিক্ষোভ করে। এসময় তারা দুটি গাড়ি ভাঙচুর করে।
ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি জিহাদুল কবির জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। বিভিন্ন জনের সঙ্গে আমরা লিখিত আকারে সাক্ষ্যগ্রহণ করেছি। অতি শিগগিরই প্রতিবেদন এবং দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০১৯
এসএইচ