শেষ সময়ে এসে ফুল বিক্রেতাদের যেন দম ফেলানোর ফুসরত নেই৷ একেরপর এক ক্রেতা আসছেন দোকানগুলোতে, আর নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী ফুল দিয়ে পুষ্পার্ঘ্য বানিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। সূর্য সন্তানদের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য আবেগঘন মানুষের উপচে পড়া ভিড়।
রোববার (১৫ ডিসেম্বর) রাতে দিকে স্মৃতিসৌধের দক্ষিণ পাশে ফুলের দোকানগুলোর বিক্রেতা ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দোকানগুলোতে এখন শোভা ছড়াচ্ছে সাভারের বিরুলিয়া থেকে আমদানি করা ফুল। এসব ফুল দিয়ে চলছে বিভিন্ন ধরনের ফুলের তোড়া, ফ্লাওয়ার রিং ও পুষ্পার্ঘ্য তৈরি। আগামীকাল (সোমবার) গুরুত্বপূর্ণ দিন হওয়ায় গত দুদিন ধরেই কেনাবেচা জমেছে তাদের। তবে শেষ সময়ের কারণে ফুলের দাম বেশি বলে মনে করছেন ক্রেতারা।
দোকানগুলো ঘুরে দেখা গেছে, ফুলের দোকানের কর্মীরা ফুলের তোড়া বানাচ্ছে, কেউবা আবার সুতা দিয়ে গাধা ফুলের মালা করে ফোমের উপরে আঠা দিয়ে জুড়ে দিচ্ছে। তার মধ্যে গোলাপ ফুল গেঁথে তৈরি করা হচ্ছে ফুলের পুষ্পার্ঘ্য। আর এসব পুষ্পার্ঘ্য নিতে লাইন ধরে দাড়িয়ে রয়েছেন ক্রেতারা। ফুলে পুষ্পার্ঘ্য তৈরি শেষ হলে কিনে নিয়ে যাচ্ছে ক্রেতারা।
ফুলের দোকানে গিয়ে কথা হয় ফুল বিক্রেতা একাব্বর বাদশার সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, গত কয়েকদিন যাবৎ ফুলের চাহিদা অনেক। জাতীয় স্মৃতিসৌধের পাশে দোকান হওয়ায় আমাদের এখানে ফুল বিক্রি ভালো হয়। আজ বিজয় দিবসের শেষ সময় হওয়ার ফুল তৈরির ও বিক্রির চাহিদা অনেকটাই বেশি।
স্মৃতিসৌধের পাশে থাকা আরেক ফুল দোকানের মালিক রহমত বলেন, আমরা সাভারের বিরুলিয়া থেকে ফুল এনে পুষ্পার্ঘ্য বানিয়ে পরে বিক্রি করি। আজ সারা দিনে ৩০টি ফুলের পুষ্পার্ঘ্য বিক্রি করেছি। প্রতিটি পুষ্পার্ঘ্যের দাম ১ হাজার থেকে ২ হাজার টাকার মধ্যে। এখানে আরও আটটি দোকান রয়েছে, সবাই আমাদের মত ফুল বিক্রি করেছে। আমাদের আরও তিনটি অর্ডার রয়েছে, রাতে মধ্যেই দিতে হবে।
আশুলিয়ার পলাশবাড়ীর এক স্কুল থেকে ফুল কিনতে আসা শিক্ষক হাসিবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আমরা প্রতিবছর আমাদের স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে জাতীয় স্মৃতিসৌধে বীর সন্তানদের শ্রদ্ধা জানাতে আসি। তাই ফুলের তোড়া বা পুষ্পার্ঘ্য কিনতেই হয়। এবার শেষ সময়ে এসে পুষ্পার্ঘ্য নিতে এসেছি। যদিও একটু দাম বেশি তবুও একটি কিনে নিয়ে যাব।
এদিকে বিজয় দিবস উপলক্ষে সাভার অঞ্চলজুড়ে সড়ক মহাসড়কের দুই পাশে থাকা স্থাপনাগুলো সেজেছে নতুন সাজে। লাল- সবুজের আলোক বাতিতে বিজয়ের সাজে সেজেছে জাতীয় স্মৃতিসৌধসহ সরকারি-বেসরকারি নানা প্রতিষ্ঠান।
জানা গেছে, ১৬ ডিসেম্বর সকাল ৬টা ৩৩ মিনিটে জাতীয় স্মৃতিসৌধে জাতির পক্ষে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর প্রটোকল অনুযায়ী সরকার ও প্রশাসনের অন্যান্যরা এখানে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। পরে সর্বস্তরের জনতার জন্য খুলে দেওয়া হবে স্মৃতিসৌধ।
বাংলাদেশ সময়: ০০১৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৯
এসএইচ