ঢাকা, মঙ্গলবার, ৪ আষাঢ় ১৪৩১, ১৮ জুন ২০২৪, ১০ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

রাজধানীতে ৩ জনের মৃত্যু, পরিবারের দাবি আত্মহত্যা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৩৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২২
রাজধানীতে ৩ জনের মৃত্যু, পরিবারের দাবি আত্মহত্যা

ঢাকা: রাজধানীর পৃথক স্থানে রায়েরবাজার, দক্ষিণ কমলাপুর ও খিলগাঁও নন্দীপাড়ায় নারীসহ তিন জন গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি করেছে তাদের পরিবার। তারা হলেন- মাশরুর চৌধুরী আলমাস (৩৫) তামান্না আক্তার (১৪) ও স্বর্ণা আক্তার (২২)।

রোববার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে পৃথক তিনটি স্থানে এই ঘটনাগুলো ঘটে। তাদের তিন জনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে আসলে রাত সাড়ে ৮টা থেকে ৯টায় চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

রাজধানীর দক্ষিণ কমলাপুরে নিজ বাসায় গলায় ফাঁস দেয় মাশরুর চৌধুরী আলমাস। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে স্বজনরা হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসক রাতে মৃত ঘোষণা করেন।

আলমাসের ছোট ভাই মামনুন আলী চৌধুরী বলেন, দক্ষিণ কমলাপুর জসিম উদ্দিন রোডে নিজেদের তিন তলা বাড়ি। আলমাস বেশ কিছুদিন সৌদি আরব ছিল।   গত এক বছর আগে দেশে আসে। স্ত্রী শামিমা আক্তার ও এক মেয়েকে নিয়ে থাকতো। কয়েক দিন আগে স্ত্রী শামিমাকে নিয়ে শশুড় বাড়ি সিলেট যায়। স্ত্রী সন্তানকে রেখে দুইদিন আগে ঢাকায় চলে আসে।

মামুন আরও জানায়, তিনি রাগি প্রকৃতির ছিল। স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া হয়েছে কিনা জানি না। বাসায় ফ্যানের সঙ্গে রশি দিয়ে গলায় ফাঁস দেয়। পরে দেখতে পেয়ে হাসপাতালে নিয়ে এলে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

এদিকে খিলগাঁও নন্দিপাড়ায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন তামান্না আক্তার। সে তার বাসায় গলায় ফাঁস দেয়। পরে হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

তামান্নার বোন শাহনাজ আক্তার জানায়, তাদের বাড়ি ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলায়। বর্তমানে খিলগাঁও পশ্চিম নন্দিপাড়ায় এলাকায় ভাড়া থাকে। বাবা খবির মিয়া ও মা অঞ্জনা বেগম এলাকায় ভ্যানে সবজি বিক্রি করতো।

শাহনাজ আরও জানান, সন্ধ্যায় ঘরে কাজ করছিল তামান্না। তখন মা অঞ্জনা বেগম অন্য কাজ করতে বলে তাকে। এতে মা মেয়ের মধ্যে ঝগড়া হয়। অভিমানে তামান্না ঘরের মধ্যে ওড়না দিয়ে সিলিংয়ের সঙ্গে গলায় ফাঁস দেয়। পরে দেখতে পেয়ে স্বজনরা হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে মোহাম্মদপুর রায়েরবাজার এলাকায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে স্বর্ণা আক্তার। সন্ধ্যা ৭টার দিকে রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবী কবরস্থানের পাশে টিনসেড বাসায় ঘটনাটি ঘটে। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে।

স্বর্ণার মা সালমা বেগম জানায়, তিন বছর আগে আশিক নামে এক ভ্যান চালকের সঙ্গে বিয়ে হয়। এক ছেলেকে রেখে এক বছর আগে চলে যায় আশিক। রায়েরবাজারের বাসায় মা মেয়ে এক সঙ্গে থাকতো।

মা আরও জানায়, সন্ধ্যায় বাজার থেকে মাছ নিয়ে এসে স্বর্ণাকে কাটতে বলে। মাছ কাটতে পারবে না বলে জানায় স্বর্ণা।   পরে বকাঝকা করি। এতে অভিমানে ঘরের সিলিংয়ের সঙ্গে রশি দিয়ে গলায় ফাঁস দেয় স্বর্ণা। পরে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে।

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানায়, তিন জনের পরিবারের লোকজন দাবি করেন তারা আত্মহত্যা করেছে। ঘটনার সংশ্লিষ্ট থানাগুলোকে বিষয়গুলো অবগত করা হয়েছে। মরদেহ তিনটি ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২৩৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২২
এজেডএস/এনএইচআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।