ঢাকা, রবিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

শ্রমজীবীদের জন্য ভর্তুকিতে ইফতার!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ১, ২০২২
শ্রমজীবীদের জন্য ভর্তুকিতে ইফতার!

পটুয়াখালী: পবিত্র রমজান উপলক্ষে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য ভর্তুকি দিয়ে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রি শুরু করেছে ‘পটুয়াখালীবাসী’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। তারা এ কর্মসূচির নাম দিয়েছেন মধ্যবিত্তের বাজার।

করোনাকালে গত বছর পথচারীদের ইফতার বিতরণ করে দেশজুড়ে আলোচনায় আসে সংগঠনটি।

এবারও রমজানের আগে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটি নিজস্ব ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের অর্থায়নে ভর্তুকি দিয়ে পণ্য বিক্রি শুরু করেছে। সংগঠনটি এর আগে ‘লস প্রজেক্ট’ নামে বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করেছিল।

সে সময় পাইকারি বাজার থেকে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য কিনে ভ্যানে করে মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে কম দামে বিক্রি করতেন সংগঠনের সদস্যরা।  

এবার রোজাকে সামনে রেখে দ্রব্যমূল্য বেড়ে যাওয়ায় স্বল্প আয়ের মানুষের কষ্ট লাঘবে পটুয়াখালীর আড়ত থেকে বস্তা বস্তা পণ্য কিনে সেগুলো পাইকারি দামের চেয়েও কম মূল্যে বিক্রি করছে ‘পটুয়াখালীবাসী’। এবার শহীদ আলাউদ্দিন শিশুপার্ক মাঠে পণ্য বিক্রি কার্যক্রম শুরু করেছে সংগঠনটি।

বর্তমান বাজারে ছোলা বুট ৮৫ টাকা, এখানে পাবেন ৬০ টাকায়। চিড়ার বাজার মূল্য ৬০ টাকা, এখানে পাওয়া যায় ৪৫ টাকায়। চিনির বাজার মূল্য ৮৫-৯০ টাকা, এখানে পাবেন ৬৫ টাকায়।  

মুসুরির ডালের বাজার মূল্য ১১০ টাকা, এখানে পাবেন ৮০ টাকায়। মোটা মুড়ির বাজার মূল্য ১২০ টাকা, এখানে পাবেন ৮০ টাকায়। সয়াবিন তৈলের বাজার মূল্য ২ লিটার ৩৩৬ টাকা, এখানে পাবেন ৩০০ টাকায়। এ ভর্তুকির অর্থ সংগ্রহ হয়েছে ভলান্টিয়ারদের মাসিক চাঁদা ও বিত্তবানদের সহযোগিতায়- এমনটা জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা।

ভ্যানচালক ইব্রাহিম বলেন, আমি একজন ভ্যানচালক, আগের মতো আয়-উপার্জন নেই। করোনার পর থেকে আমাদের জীবন কেমন কাটছে, তা আমরাই জানি। সব কিছুর দাম বেড়ে গেছে, শুধুমাত্র আমাদের মানুষের দাম বাড়েনি। আমার একটি মাত্র মেয়ের স্কুলের খরচ চালাতে অনেক কষ্ট হয়। এর মধ্যে বাজারের যে জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে, তা আমার উপার্জনের নাগালের বাইরে। না পারি কারো কাছে বলতে, না পারি নিজে সহ্য করতে। এখানে এসে দেখেছি, এ সংগঠনের সদস্যরা নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কম দামে বিক্রি করছেন। বাজারের চেয়ে অনেক কম মূল্যে এখানে রমজানের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পেলাম।

পটুয়াখালীবাসী সংগঠনের সদস্য সাবরিনা মেহজাবিন স্বর্ণা বলেন, আমাদের সংগঠন ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে গঠিত এ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিভিন্ন সময়ে মানুষের পাশে দাঁড়ায়। ভর্তুকি দিয়ে পণ্য বিক্রি এর আগেও আমরা করেছি‌। এবার আমরা উদ্যোগ নিয়েছি, রমজানের প্রথম থেকেই কম দামে পণ্য বিক্রি করার। যাতে করে মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো কিছুটা হলেও লাভবান হতে পারে।  

সংগঠনের সভাপতি মাহমুদ হাসান রায়হান বলেন, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্য বাড়তে বাড়তে মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। সরকার বিভিন্ন উদ্যোগের মাধ্যমে নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের পাশে রয়েছে। এ দায়িত্ব শুধু সরকারের নয়, আমাদের সবার। আমাদের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উদ্যোগে ভর্তুকি দিয়ে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বিক্রি করছি। মূলত যারা প্রয়োজন থাকা সত্ত্বেও ট্রাকের পেছনে গিয়ে দাঁড়াতে সংকোচ বোধ করেন, তাদের জন্য আমাদের এ আয়োজন। রমজান মাসে যাতে স্বল্প আয়ের মানুষ সেহেরি ও ইফতার করতে পারে, সে কথা মাথায় রেখেই আমরা ক্ষতিপূরণ দিয়ে পণ্য বিক্রি করছি। পাইকারি দোকান থেকে পণ্য কিনে কেনা দামের থেকে ১৫ থেকে ২০ টাকা কম মূল্যে পণ্য বিক্রি করছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ১, ২০২২
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।