ঢাকা, রবিবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

গর্ভ ফেটে জন্ম নেওয়া সেই নবজাতক ঢাকার ছোটমণি নিবাসে  

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৯ ঘণ্টা, জুলাই ২৯, ২০২২
গর্ভ ফেটে জন্ম নেওয়া সেই নবজাতক ঢাকার ছোটমণি নিবাসে  

ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহের ত্রিশালে ট্রাকের চাপায় মায়ের পেট ফেটে জন্ম নেওয়া সেই নবজাতককে রাজধানীর আজিমপুর ছোটমণি নিবাসে পাঠানো হয়েছে।

শুক্রবার (২৯ জুলাই) সকাল ১১টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে গাড়িতে করে তাকে ঢাকা আজিমপুর শিশু নিবাসে পাঠানো হয়।

এর আগে সকাল ১০টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ওয়ায়েজ উদ্দিন ফরাজী ওই শিশুকে জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মো. ওয়ালীউল্লাহ ও নবজাতকের দাদা মোস্তাফিজুর রহমান বাবলুর কাছে হস্তান্তর করেন।

পরে ত্রিশাল সমাজসেবা কার্যালয়ের কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান, জেলা সরকারি শিশু পরিবারের (বালিকা) খালাম্মা তাহমিনা আক্তার স্বপ্না, দাদা মোস্তাফিজুর রহমান বাবলু এবং পুলিশ অফিসারসহ দুইজন পুলিশ সদস্য নবজাতকটিকে নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন- ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ওয়ায়েজ উদ্দিন ফরাজি, হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক (শিশু ও নবজাতক) ডা. নজরুল ইসলাম, জেলা সমাজসেবা অধিদফতরের উপপরিচালক মো. ওয়ালীউল্লাহ ও নবজাতকের দাদা মোস্তাফিজুর রহমান বাবলুসহ হাসপাতালের অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।

জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মো. ওয়ালীউল্লাহ বলেন, সুবিধাবঞ্চিত শিশু হিসেবে শিশু কল্যাণ বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নবজাতকটিকে ঢাকা আজিমপুর ছোটমনি শিশু নিবাসে পাঠানো হয়েছে।  
তবে অন্য কারো তত্ত্বাবধানে নয়, সম্পূর্ণ সরকারি তত্ত্বাবধানে নবজাতকে দেখাশোনা করা হবে।

নবজাতক শিশুটির দাদা মোস্তাফিজুর রহমান বাবলু বলেন, আমার সম্মতিতে প্রশাসন নাতি ফাতেমাকে আজিমপুর ছোটমনি শিশু নিবাসে পাঠিয়েছেন। নাতিকে দেখার ইচ্ছা হলে আমি যেকোনো সময় তাকে দেখে যেতে পারব।  

প্রশাসন থেকে আমাকে আশ্বস্ত করা হয়েছে যে, আমাদের থাকার জন্য দুই রুম বিশিষ্ট একটি হাফ বিল্ডিং এবং অপর দুই শিশু জান্নাত ও এবাদতের লেখাপড়াসহ সার্বিক সহায়তা করা হবে।

ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক (শিশু ও নবজাতক) ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করে আমরা ১২ দিন ওই নবজাতকে চিকিৎসা দিয়েছি।  

জন্ডিস ও শ্বাসকষ্ট পুরোপুরি ভালো হলেও ঘাড়ে এবং ডান হাতে ফ্র্যাকচার ভাল হতে দুই সপ্তাহের মত সময় লাগতে পারে। ১২ দিন নবজাতকের চিকিৎসা দেওয়ায় তার প্রতি ভালোবাসা কাজ করছে। তার চলে যাওয়া আমাদের কাছে কষ্টের। তবে সে ভালো থাকুক, এটাই আমাদের কাম্য।

গত ১৬ জুন বিকেলে উপজেলার রাইমনি গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম (৪০) তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রত্না আক্তারের (৩০) আল্ট্রাসনোগ্রাফি করার জন্য  ত্রিশালে আসেন। সেসময় তাদের সঙ্গে ছিল মেয়ে সানজিদা আক্তার (৬)। পৌর শহরের খান ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সামনে রাস্তা পারাপারের সময় ময়মনসিংহগামী একটি ট্রাক তাদের চাপা দেয়। এতে জাহাঙ্গীর আলম, স্ত্রী রত্না এবং মেয়ে তিনজনেরই মৃত্যু হয়। এসময় ট্রাকের চাপায় রত্নার পেট ফেটে একটি কন্যা শিশুর জন্ম হয়। পরে ওই নবজাতক নগরীর লাবিব হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে গত সোমবার (১৮ জুলাই) রাতে তাকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনা হলে তার জন্ডিস, ঘাড়ে এবং ডান হাতে ফ্র্যাকচার ধরা পড়ে।  

এ ঘটনার পরদিন মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করে হাসপাতালের এনআইসিইউ বিভাগে ভর্তি করা হয় নবজাতকটিকে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩২ ঘণ্টা, জুলাই ২৯, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।