ঢাকা, রবিবার, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ১২ মে ২০২৪, ০৩ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

ধুমধাম করে পিতৃহীন তরুণ-তরুণীর বিয়ে দিল ‘শুভসংঘ’   

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৬, ২০২২
ধুমধাম করে পিতৃহীন তরুণ-তরুণীর বিয়ে দিল ‘শুভসংঘ’
  

হবিগঞ্জ: গ্রাম্য দাঙ্গায় বাবা মারা যাওয়ার পর হবিগঞ্জ সরকারি শিশু পরিবারে আশ্রয় হয়েছিল শামীম মিয়ার। একই কারণে রুহেনা বেগমও বেড়ে উঠেছেন মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল সরকারি শিশু পরিবারে।


 
সরকারি প্রতিষ্ঠানে দয়িত্বরতদের আদর-যত্নে বড় হওয়া এ তরুণ-তরুণীর জীবনে ‘বিয়ে’ নামে সামাজিক বন্ধনের স্বপ্নটি ছিল ধরাছোঁয়ার অনেকখানি বাইরে। তবে তাদের সেই অধরা স্বপ্নকে হাতের মুঠোয় এনে দিল দৈনিক কালের কণ্ঠের পাঠক ফোরাম ‘শুভ কাজে সবার পাশে’ স্লোগানধারী ‘শুভসংঘ’।

সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) হবিগঞ্জ সরকারি শিশু পরিবারে শুভসংঘের উদ্যোগে ধুমধাম আয়োজনে এ দুজনের বিয়ে হয়েছে। অতিথি ছিলেন প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সমাজের গুণীজনেরা।
 
শুভসংঘ জানায়, শামীম হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার মকসুদপুর গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। শিশু বয়সে একটি গ্রাম্য দাঙ্গায় বাবা মারা যাওয়ার পর তিনি হবিগঞ্জ সরকারি শিশু পরিবারে আশ্রয় নেন। সেখান থেকেই ডিপ্লোমা ডিগ্রি অর্জন করেছেন। একই কারণে শ্রীমঙ্গল সরকারি শিশু পরিবারে বেড়ে ওঠা শামীমা পাস করেছেন এসএসসি।
 
সম্প্রতি সমাজসেবা অধিদপ্তরের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় তাদের দু’জনের পরিচয় হয়। পরে শামীম মিয়া বিষয়টি তার প্রতিষ্ঠানের প্রধান সাইফুল ইসলামকে জানান। সাইফুল ইসলাম এ দুজনের বিয়ের ব্যাপারে শুভসংঘ হবিগঞ্জ জেলা কমিটিকে জানান।
 
এরপর এ দুই এতিমের পরিচয় ও স্বপ্নকে পরিণয়ে পরিণত করতে শুভসংঘ যোগাযোগ করে হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহানের সঙ্গে। সেখান থেকে পাওয়া সরকারি অর্থ এবং সমাজসেবা অধিদপ্তর ও সমাজসেবী লোকজনের সহায়তায় সোমবার দু’জনের বিয়ে হয়।
 
বর-কনে এতিম হলেও বিয়ের আয়োজনে কোনো কমতি ছিল না। বিয়ের দিন সরকারি শিশু পরিবারে ছিল সাজসজ্জা আর উৎসবের আমেজ। বিয়ে অনুষ্ঠিত হয় জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান ও পুলিশ সুপার এসএম মুরাদ আলির উপস্থিতিতে। অতিথিদের আপ্যায়ন করা হয় রোস্ট, গরুর মাংসের রেজালা, ঘণ্ট আর দই দিয়ে।
 
বিয়ের পর বর-কনের অনুভূতি জানতে চাইলে তারা বলেন, এখন আমাদের আগামী স্বপ্ন নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করা। বিয়ের এ সুন্দর আয়োজন আমাদের পিতা হারানোর অভাব অনেকটাই দূর করে দিয়েছে।
 
জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ধরনের ভালো কাজে উৎসাহ দিয়ে থাকেন। কেউ যাতে নিজেকে অসহায় মনে না করে, সে জন্যই এ আয়োজন। সবাই মিলে এ ধরনের ভালো কাজ করতে পারলে আমরা সুন্দর সমাজ গড়ে তুলতে পারব।
 
বিয়ের আয়োজনে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, সমাজ সেবা অধিদপ্তর, হবিগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট মিজানুর রহমান শামীম, ডা. জমির-তাহমিনা বেগম ফাউন্ডেশন, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জহিরুল হক শাকিল, ইংল্যান্ড প্রবাসী অধ্যাপক আব্দুল হান্নান, আবুল কাশেম, মানবিক হবিগঞ্জ, ডা. মিঠুন রায়, জেলা তাঁতী লীগের সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন, হবিগঞ্জ উন্নয়ন সংস্থা, ব্যবসায়ী জাকারিয়া চৌধুরী, মোদারিছ আলী টেনু, ডা. সৈয়দ এম আবরার জাবের, হোসেড হবিগঞ্জ, প্রবাসী নাজমুল হক তুষার ও সৈয়দা শরিফা আক্তার কুমকুমসহ অনেকে সহায়তা করেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১২৩৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৬, ২০২২
এসআই
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।