ঢাকা, সোমবার, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ মে ২০২৪, ০৪ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং: জাজিরায় ঘরের ওপর গাছ পড়ে নিহত ১ 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০২২
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং: জাজিরায় ঘরের ওপর গাছ পড়ে নিহত ১ 

শরীয়তপুর: ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে সোমবার (২৪ অক্টোবর) সারাদেশের মতো শরীয়তপুরের ওপর দিয়েও বৃষ্টিসহ ঝড় বয়ে গেছে।  

ঝড়ের রাতে শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার পদ্মার মধ্যে অবস্থিত দুর্গম কুন্ডেরচর ইউনিয়নের চিটারচরের সোহরাব মল্লিকের কান্দি গ্রামের হালান মুসল্লির টিনের ঘরের ওপর একটি মোটা গাছ ভেঙে পড়ে।

এসময় গাছ ও টিনের চালার নিচে চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই তার স্ত্রী শাফিয়া বেগম (৬০) মারা যান।  

মঙ্গলবার সকালে কুন্ডেরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আক্তার হোসেন বেপারী বলেন, আমরা গতকাল থেকে প্রতিনিয়ত মাইকিং করে সবাইকে আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিতে বলেছি। কিন্তু শাফিয়া রাতে আশ্রয় কেন্দ্রে না গিয়ে নিজেদের ঘরেই ছিলেন। রাতে গাছচাপায় তিনি মারা গেলেন, বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক।

এদিকে রাস্তার মধ্যে অসংখ্য বাঁশঝাঁড় আর বড় বড় গাছপালা ভেঙে পড়ে থাকায় জাজিরার বিভিন্ন জায়গায় যানবাহন আটকা পড়েছে। বিশেষ করে জাজিরা থেকে নড়িয়া যাতায়াতের আঞ্চলিক সড়কটির বেশ কয়েকটি জায়গায় বড় বড় গাছ পড়ে থাকায় সকাল থেকে আটকে আছে এ রুটে চলাচলকারী বাসগুলো। গাছগুলো দ্রুত সরিয়ে রাস্তা পরিষ্কারের চেষ্টা চালাচ্ছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।  

অপরদিকে প্রবল বৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে শীতকালীন বিভিন্ন শাক-সবজির ক্ষেতের। পেঁয়াজ, রসুনসহ বিভিন্ন ফসল তলিয়ে গেছে।  

সোমবার দিনে বিদ্যুৎ সংযোগ থেমে থেমে বিচ্ছিন্ন থাকলেও রাত থেকে পুরোই বন্ধ রয়েছে বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট ব্যবস্থা।  

বহু যায়গায় ইন্টারনেট ও বিদ্যুৎতের তার ছিঁড়ে পড়ে রয়েছে যত্রতত্র। যা দ্রুত ঠিক করার জন্য সকাল থেকেই কাজ করে যাচ্ছে ইন্টারনেট ক্যাবল অপারেটররা ও বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ জামাল হোসাইন বলেন, আমরা আগেই কৃষকদের ২৮ তারিখের আগে ফসল বুনতে নিষেধ করে দিয়েছিলাম, তবুও যারা বুনেছেন, তারা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। এখনও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা সম্ভব হয়নি, তবে ধারণা করা হচ্ছে, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

বিদ্যুৎ বিভাগের জাজিরা জোনাল অফিসের ডিভিশনাল জেনারেল ম্যানেজার আশরাফুল আলম খান বলেন, আমরা এরই মধ্যেই ৩৩ কেভি চালু করতে পেরেছি। আশা করছি, সন্ধ্যার মধ্যেই জাজিরার সম্পূর্ণ বিদ্যুৎ সংযোগ চালু করতে সক্ষম হবো।

জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুল হাসান সোহেল বলেন, আমরা রোববার থেকেই বারবার সবাইকে সতর্ক করেছি এবং আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয়  যেতে মাইকিং করেছি। আমরা পর্যাপ্ত খাবারের পাশাপাশি প্রায় ৩৯টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রেখেছিলাম। অনেককে এক প্রকার জোর করেই আশ্রয় কেন্দ্রে এনেছি। আমাদের প্রায় ১১০০ লোক আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছিলেন। তবুও অনেকেই থেকে গেছেন নিজ বাড়িতে, ফলে এ অপ্রত্যাশিত দুর্ঘটনাটি ঘটে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০২২
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।