ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মুক্তমত

ব্রাদারহুড কানেকশন

হিলারির ডেপুটি হুমাকে নিয়ে কংগ্রেসে তোলপাড়

কাউসার মুমিন, অতিথি লেখক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৮ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০১২
হিলারির ডেপুটি হুমাকে নিয়ে কংগ্রেসে তোলপাড়
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিন্টনের ডেপুটি চিফ অফ স্টাফ হুমা আবেদীনের ব্রাদারহুড কানেকশনের অভিযোগ নিয়ে মার্কিন কংগ্রেসে তোলপাড় চলছে এক সপ্তাহ ধরে। মুসলিম কর্মকর্তা হুমা আবেদীনের পক্ষে বিপক্ষে বিবৃতি আর পাল্টা বিবৃতিতে  জড়িয়ে পড়েছেন স্টেট ডিপার্টমেন্ট, হাউস স্পিকারসহ মুসলিম অমুসলিম ডেমোক্রেটিক রিপাবলিকান নির্বিশেষে মার্কিন কংগ্রেসের ডাকসাইটে নেতারা।
 
এই বিতর্ক যাতে আগামী নির্বাচনী প্রচারণায় কোনো ইস্যু সৃষ্টি করতে না পারে সে বিষয়ে স্টেট ডিপার্টমেন্টের পক্ষ থেকে দৃশ্যতঃ সর্বোচ্চ সতর্কতা ছিলো। কিন্তু তা সত্তেও ধীরে ধীরে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কংগ্রেসম্যানের এ বিষয়ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ায় পরিস্থিতি এখন সেদিকেই মোড় নিচ্ছে বলা ধারণা করা হচ্ছে। আর অবস্থা সেরকম দাঁড়ালে আসন্ন নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ করে মুসলিম নারী ভোটারদের মধ্যে ডেমোক্রেটিক পার্টির পক্ষে নয়া মেরুকরণের সম্ভাবনাই বেশি।
 
এরই মধ্যে গতসপ্তাহে `হাফিংটন পোস্ট` এ প্রকাশিত এক মতামত কলামে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত একজন মার্কিন মুসলিম সিইও আনিকা রহমান একজন সাধারণ মার্কিন মুসলিম হিসেবে চলতি বিতর্কে হুমা আবেদীনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেছেন।
 
মিজ আনিকা তার `মাই মুসলিম আইডেনটিটি শিরোনামের ওই লেখায়  হুমা আবেদিনের প্রতি চলমান আক্রমণাত্মক পরিস্থিতিকে ৯/১১ এর পর, একজন মুসলিম মা হিসেবে তার আট বছর বয়সী মেয়েকে মুসলিম পরিচয়ে বড় করে তুলতে গিয়ে প্রতিদিন যে রকম মানসিক দ্বন্ধের মধ্যে দিয়ে গিয়েছেন-- সেরকম ভীতিকর অভিজ্ঞতার সঙ্গে তুলনা করেছেন।

আর এই বিতর্কের নাটের গুরু হলেন রিপাবলিকান পার্টির প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী মিনেসোটা রিপাবলিকান কংগ্রেসউম্যান মিশেল ব্যাকম্যান। মিশেল ব্যাকম্যান ও তার আরো চার সহকর্মী কংগ্রেসম্যান মিলে সম্প্রতি স্টেট ডিপার্টমেন্টের ডেপুটি ইনস্পেক্টর জেনারেল বরাবরে লিখিত এক চিঠিতে দাবি করেন যে, মুসলিম ব্রাদারহুডের সঙ্গে কানেকশন আছে এরকম ব্যক্তি বা সংস্থার সঙ্গে পররাস্ট্র দফতরের ডেপুটি চিফ অফ স্টাফ হুমা আবেদীনের সংশ্লিষ্টতা আছে, যার তদন্ত হওয়া উচিৎ।
 
ওই চিঠিতে মিশেল ব্যাকম্যান ছাড়াও আরো স্বাক্ষর করেন আরিজোনা রিপাবলিকান ট্রেন্ট ফ্রান্কস, টেক্সাস রিপাবলিকান লুই গোহমার্ট, ফ্লোরিডা রিপাবলিকান টম রুনি এবং জর্জিয়া রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান লেইন ওয়েস্টমোরল্যান্ড।
 
চিঠিতে নিরাপত্তা গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘সেন্টার ফর সিকিউরিটি পলিসি’র সাম্প্রতিক রিপোর্ট “দ্য মুসলিম ব্রাদারহুড ইন আমেরিকা: দি এনিমি উইদিন” এর রেফারেন্স দিয়ে এবং  মুসলিম ব্রাদারহুড ও মিশর বিষয়ে স্টেট ডিপার্টমেন্টের সাম্প্রতিক কমপক্ষে পাঁচটি ইতিবাচক সিদ্ধান্তের বিশ্লেষণ করে এ সকল সিদ্ধান্তের পেছনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিন্টনের ডেপুটি চিফ অফ স্টাফ হুমা আবেদীনের প্রভাব ও কানেকশনস (সম্পৃক্ততা) জড়িত আছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়। এছাড়াও এ সকল বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানানো হয়।
 
মিশেল ব্যাকম্যান মার্কিন রাজনীতিতে সাম্প্রতিক আলোড়ন সৃষ্টিকারী ‘টি পার্টি মুভমেন্টে’র একনিষ্ঠ সমর্থক ও ‘হাউস টি পার্টি ককাসে’র প্রতিষ্ঠাতা এবং কংগ্রেসের ইতিহাসে মিনেসোটা অঙ্গরাজ্য থেকে রিপাবলিকান দলের হয়ে নির্বাচিত সর্বপ্রথম কংগ্রেসউম্যান।
 
তিনি ২০১২ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থীতার জন্য লড়াই করে শেষ পর্যন্ত আইওয়া ককাসে রিপাবলিকান দলীয় প্রার্থীদের মধ্যে ৬ষ্ঠ স্থান লাভ করে গত জানুয়ারিতে এ লড়াইয়ে ইস্তফা দেন এবং বর্তমানে কংগ্রেসের ‘হাউস পার্মানেন্ট সিলেক্ট কমিটি অন ইন্টেলিজেন্স’ এর সদস্য হিসেবে কাজ করছেন।

অপরদিকে ডেপুটি চিফ অফ স্টাফ হুমা আবেদীনের জন্ম যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানে হলেও দুই বছর বয়সে তিনি পরিবারের সাথে সউদী আরবের জেদ্দায় পাড়ি জমান এবং পরে জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটিতে অধ্যয়নের জন্য আবার যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসেন।   তার বাবা ব্রিটিশ ভারতে জন্মগ্রহণকারী সৈয়দ জয়নাল আবেদীন আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রাক্তন ছাত্র যিনি পরবর্তীতে পেন্সিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। জানা গেছে হুমার পাকিস্তানী বংশোদ্ভূত মা সালেহা মাহমুদ আবেদীনেরও পেন্সিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি রয়েছে। হুমার বাবা-মা দু’জনই স্বনামধন্য অধ্যাপক।
 
হুমার বাবা জয়নাল আবেদীন  ১৯৯৩ সালে মারা যান এবং তার মা বর্তমানে জেদ্দায় অবস্থিত দার আল হেকম কলেজে সোসিওলজির প্রফেসর। জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশুনা শেষে ১৯৯৬ সালে হুমা আবেদীন হোয়াইট হাউসে ইন্টার্ন হিসেবে যোগ দেন এবং তৎকালীন ফার্স্ট লেডি হিলারি ক্লিন্টনের সাথে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর হিলারি ক্লিন্টন সিনেটর নির্বাচিত হলে হুমা আবেদীন সিনেটে হিলারির একজন বিশ্বস্ত সহযোগী হিসেবে কাজ করেন। পরবর্তীতে ২০০৮ সালে হিলারির ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচনী প্রচারাভিযানে হুমা আবেদীন হিলারি ক্যাম্পেইনের ‘ট্র্যাভেলিং চিফ অফ স্টাফ’ এবং ‘বডি ওম্যান’ হিসেবে কাজ করেন। ওবামা প্রশাসনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে হিলারি যোগ দেওয়ার পর হুমা আবেদীন পররাষ্ট্র দফতরের ডেপুটি চিফ অফ স্টাফ হিসেবে নিয়োগ পান । ব্যক্তিগত জীবনে একজন ধার্মিক মুসলিম হুমা ক্লিন্টন পরিবারের সঙ্গে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কযুক্ত এবং হিলারি ক্লিন্টনের অত্যন্ত স্নেহভাজন বলে সবার কাছে পরিচিত।  
 
মার্কিন মিডিয়া হুমা আবেদীনকে হিলারির ডানহাত বলে উল্লেখ করে। তার স্বামী নিইয়র্কের ডেমোক্রেটিক দলীয় প্রাক্তন কংগ্রেসম্যান ইহূদী ধর্মাবলম্বী অ্যান্থনি উয়েইনার কংগ্রেসে ইসরাইলের অত্যন্ত শক্তিশালী সমর্থক ছিলেন। তিনি গত বছর জুনে টুইটারে একজন নারী সমর্থকের সঙ্গে অশালীন যৌন-উদ্দীপক বার্তা বিনিময়জনিত কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে অবশেষে পদত্যাগ করেন।
 
অ্যান্থনি এবং হুমা ২০১০ সালের জুলাই মাসে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হন এবং বর্তমানে তাদের জর্ডান জায়েন উয়েইনার নামে আট মাস বয়সী একটি পুত্র রয়েছে। ২০১০ সালে নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত অ্যান্থনি উয়েইনার এবং হুমা আবেদীনের বিয়ে পূর্ববর্তী এক রিসেপশনে যোগ দিয়ে হিলারি ক্লিন্টন মন্তব্য করেছিলেন “আমার যদি দ্বিতীয় একটি কন্যা সন্তান থাকতো, তাহলে নিশ্চিতভাবে সে হতো হুমা আবেদীন। ”

এদিকে হুমা আবেদীনের মুসলিম ব্রাদারহুড কানেকশন নিয়ে প্রশ্ন তোলায় খোদ রিপাবলিকান পার্টির সিনিয়র নেতাদের পক্ষ থেকেই কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েছেন মিশেল ব্যাকম্যান। আরিজোনা রিপাবলিকান সিনিয়র কংগ্রেসম্যান জন ম্যাককেইন, সাউথ ক্যারোলিনা রিপাবলিকান লিন্ডসে গ্রাহাম, ম্যসাচুসেটস রিপাবলিকান স্কট ব্রাউন ও এড রলিন্স এই বিতর্কে হুমা আবেদীনের পক্ষে দাঁড়িয়ে তাদের সহকর্মী কংগ্রেসওম্যান মিশেল ব্যাকম্যানের সমালোচনামূখর হয়েছেন।
 
অত্যন্ত দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়ে সিনিয়র কংগ্রেসম্যান জন ম্যাককেইন হাউস ফ্লোরে দাঁড়িয়ে দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, “হুমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ এবং উল্লিখিত সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন অনাকাঙ্ক্ষিত এবং অযাচিত। তিনি একজন পরীক্ষিত আমেরিকান এবং বিশ্বস্ত সিভিল সার্ভেন্ট। তার বিরুদ্ধে এই সকল আক্রমণাত্বক অভিযোগ অযৌক্তিক, ভিত্তিহীন এবং তা কোনো বিবেচনার দাবি রাখে না। আর এ সব অভিযোগ এখনই বন্ধ হওয়া উচিৎ। ”
 
রিপাবলিকান দলের হয়ে প্রেসিডেন্ট পদের একজন প্রাক্তন প্রার্থী জন ম্যাককেইন আরো বলেন, “এ ধরণের ঢালাও অভিযোগ আমাদের জাতীয় চেতনাকে অসম্মান করে। কংগ্রেসে প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার জন বোয়েহনার, যিনি নিজেও একজন রিপাবলিকান, এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকদের জানান, আমি হুমাকে চিনি না, কিন্তু তার সম্পর্কে যতটুকু জানি তাতে আমার মনে হয় তিনি চমৎকার চরিত্রের অধিকারী একজন মানুষ এবং তার বিরুদ্ধে এই সব অভিযোগের তীর তার নিরাপত্তাকে বিপন্ন করে তুলতে পারে। ”
 
হাউস পার্মানেন্ট সিলেক্ট কমিটি অন ইন্টেলিজেন্স এর চেয়ারম্যান রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান মাইক রজারস এ ধরণের ভিত্তিহীন মন্তব্যে অসম্ভব ক্ষুব্ধ হয়েছেন উল্লেখ করে মিশেল ব্যাকম্যান কে প্রকাশ্যে বকুনি দিয়েছেন এবং পলিটিকো ম্যাগাজিন এর গত সংখ্যায় ইন্টেলিজেন্স কমিটিতে মিশেলের সদস্যপদ থাকে কি না তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছে।

এদিকে, তদন্তের জন্য পাঠানো চিঠিতে মিশেল ব্যাকম্যানের সঙ্গে আবেদনকারী তার সহকর্মী ফ্লোরিডা কংগ্রেসম্যান টম রুনি বলেন, “হাউস আর্মড সার্ভিসেস অ্যান্ড ইন্টেলিজেন্স কমিটির” এর একজন সদস্য হিসেবে জাতীয় নিরাপত্তাকে গুরুত্ব দেওয়া আমার সর্বোচ্চ দায়িত্ব। কিন্তু আমি দুঃখিত যে তা করতে গিয়ে হুমা আবেদীনের ওপর মিডিয়ার সমস্ত মনোযোগ এসে পড়েছে। আর তা করা হয়েছে জাতীয় নিরাপত্তার আইনসিদ্ধ বিষয়গুলোতে আরো বৃহত্তর মনোযোগ আকর্ষণের উদ্দেশ্যকে মাথায় রেখে। ”
 
ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয় যে, হুমা আবেদীনের পরিবারের তিন জন সদস্য, তার মৃত বাবা, ভাই এবং মা, মুসলিম ব্রাদারহুডের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি কিংবা সংগঠনের সঙ্গে জড়িত।
 
এ বিষয়ে সর্বশেষ প্রতিক্রিয়ায় মিশেল ব্যাকম্যান  জানান তিনি এখনো তার অবস্থানে অনড়।
 
তিনি বলেন, আমি মিডিয়াসহ সকল নাগরিককে আমার চিঠিটি সামগ্রিকভাবে পাঠ করার আহবান জানাই। কেননা আমি ঐ চিঠিতে আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার অত্যন্ত সিরিয়াস একটি ইস্যু নিয়ে কথা বলেছি এবং বর্তমান ওবামা প্রশাসনের টপ অফিসিয়ালদের সঙ্গে ব্রাদারহুডের যোগাযোগ বিষয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্থাপন করেছি যার আশু সুরাহার জন্য বিশেষ তদন্ত হওয়া উচিৎ।
 
আর এ বিষয়ে গতকাল পর্যন্ত সর্বশেষ  মিশেলের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন ভার্জিনিয়ার রিপাবলিকান দলীয় কংগ্রেসম্যান হাউস মেজরিটি লিডার এরিক ক্যান্টর। কংগ্রেসে রিপাবলিকান দলীয় দ্বিতীয় শক্তিধর এরিকের এই অবস্থান হাউস স্পিকার রিপাবলিকান জন বোয়েহনারের অবস্থানের সম্পূর্ণ বিপরীত। আর এরই মধ্যে প্রাক্তন স্পিকার এবং এবারের রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট নমিনী নিউট গিংরিচ মিশেল ব্যাকম্যানের পক্ষ নিয়ে বলেছেন, “এখানে অভিযোগের বিষয়টা মুখ্য নয়, বেশ কিছু প্রশ্ন উত্থাপন করা হয়েছে, যার উত্তর জানা জরুরি। ”

হুমা আবেদীনের বিরুদ্ধে ব্রাদারহুড কানেকশনের অভিযোগ বিষয়ে প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের ইতিহাসে সর্বপ্রথম মুসলিম কংগ্রেসম্যান হিসেবে মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের বর্তমান ডেমোক্র্যাট দলীয় কংগ্রেসম্যান কিথ অ্যালিসন বলেন, “আমাদের দেশ পঞ্চাশের দশকের ম্যাককার্থিজম জামানার দিকে আবার হাঁটা শুরু করেছে, কিন্তু আমরা তা হতে দিতে পারি না। ”
 
প্রতিক্রিয়ায় “কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশন্স” এর মুখপাত্র কৌরী সেইলর বলেন, “মিশেল ব্যাকম্যান যিনি ইন্টেলিজেন্স কমিটির মতো একটি অত্যন্ত সেনসিটিভ কমিটিতে দায়িত্বশীল সদস্য তিনি যখন এরকম ‘কন্সপিরেসি থিওরি’কে এগিয়ে নিয়ে যান, তখন একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমাদের সকল মুসলিমের জন্যই এটি একটি মারাত্নক উদ্বেগের বিষয়। সেইলর আরো বলেন, তিনি (মিশেল ব্যাকম্যান) যদি হুমা আবেদীন বিষয়ে কোনো গ্রহণযোগ্য প্রমাণাদি পেয়েই থাকতেন তাহলে তিনি যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে গেলেই পারতেন, প্রেস রিলিজের মাধ্যমে এটিকে একটি মিডিয়া ইস্যু বানানোর প্রয়োজন ছিল না। ”

হুমা আবেদীনকে নিয়ে কংগ্রেসওম্যান মিশেল ব্যাকম্যানের অভিযোগ বিষয়ক এক প্রশ্নের জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর এক লিখিত উত্তরে জানায়, এ ধরনের অভিযোগের অত্যন্ত কঠোর সমালোচনা করে ইতিমধ্যেই আমাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছি। আমরা মনে করি এ ধরণের আলোচনা অত্যন্ত বিদ্বেষপূর্ণ এবং কুৎসিত মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছু নয়। আর মার্কিন কংগ্রেসে বাংলাদেশ ককাসের কো চেয়ারম্যান নিউইয়র্ক ডেমোক্রেট কংগ্রেসম্যান জোসেফ ক্রাউলির অফিস থেকে লিখিত বার্তায় এই প্রতিনিধিকে জানানো হয়, এ বিষয়ে মিডিয়ার জন্য এখন পর্যন্ত কংগ্রেসম্যান ক্রাউলির পক্ষে থেকে কোনো বক্তব্য নেই।
 
কাউসার মুমিন: সদস্য, ইউনাইটেড ন্যাশন্স করেসপনডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, জাতিসংঘ সদর দপ্তর, নিউইয়র্ক
 
বাংলাদেশ সময় ১৩৩১ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০১২
সম্পাদনা: আহ্‌সান কবীর, আউটপুট এডিটর
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।