ঢাকা, শুক্রবার, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২, ১৮ জুলাই ২০২৫, ২২ মহররম ১৪৪৭

মুক্তমত

শেখ হাসিনার বিচার কি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে হওয়া উচিত?

ফিরোজ আহমেদ | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫:১৪, জুলাই ১৮, ২০২৫
শেখ হাসিনার বিচার কি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে হওয়া উচিত? শেখ হাসিনা | ফাইল ছবি

বিবিসি যা প্রমাণ করে বলেছে, বাংলদেশের মানুষ তা বহু আগে থেকেই জানতেন। তারপরও বিবিসির এই সাক্ষ্য একটা গুরুত্ব বহন করে, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে শেখ হাসিনার অপরাধের একটা বড় স্বীকৃতি এটি।

এর আগে জাতিসংঘের তদন্ত দল তাদের গত ফেব্রুয়ারি মাসের প্রতিবেদনে বড় আকারে মানবতাবিরোধী অপরাধের নজির পাবার কথা বলেছে।

সব মিলিয়ে এগুলো শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের দুনিয়া আরও ছোট হয়ে আসারই ইঙ্গিত।

এই ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে একটা মূলনীতিতে স্থির থেকেই কৌশলগত কয়েকটি বিষয় নিয়ে ভাবতে হবে। মূলনীতিটি হলো, শেখ হাসিনা ও তার প্রধান সহযোগীদের বিচার করা। কোনো অবস্থাতেই এই অবস্থান থেকে সরে আসা যাবে না। এই মূলনীতির বিষয়ে তেমন কোনো ভিন্নমতও দেশের ভেতর নেই, কিন্তু তার কৌশলগুলো কী হতে পারে? 

২.
বিচার করার ক্ষেত্রে আপাতত সবচাইতে বড় সমস্যা হলো, শেখ হাসিনা ভারতের হাতে রয়েছেন। ভারত কোনো অবস্থাতেই তাকে হাতছাড়া করবে না। কারণ, তাকে বাংলাদেশ বা দুনিয়ার যে কোনো আদালতের হাতে তুলে দেওয়া ভারতের দিক থেকে হবে এমন একটি বন্ধনকে ছিন্ন করা, যার ভরসায় হাসিনা বাংলাদেশের যে কোনো স্বার্থ অকাতরে বিকিয়ে দিয়েছেন। ভারতের সাথে সম্পর্ক নিয়ে হাসিনা নিজে ও তার মন্ত্রীরা যা যা বলতেন—“স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের মত”, “ভারতকে যা দিয়েছি, চিরকাল মনে রাখবে” এবং এমন আরো বহু কিছু—এগুলো নিছক কথার কথা নয়। এমনকি, এর আগে ১৯৭২-১৯৭৫ সালে, বাংলাদেশের সাথে ভারতের সম্পর্কের মধুরতম সময়েও এমন ধরনের কথাবার্তা তেমন একটা শোনা যাবে না। দলটির আত্মবিশ্বাসের বিপুল উৎস ছিল যে কোনো বিরূপ পরিস্থিতিতে ভারতের সম্ভাব্য হস্তক্ষেপের আশ্বাস।

এই শেখ হাসিনাকে কোনো আদালতে দাঁড়াতে হলে ক্রুদ্ধ হাসিনার প্রতিক্রিয়ায় যা যা প্রকাশ পেতে পারে, তাতে আন্তর্জাতিকভাবে ভারত নাজেহাল হবে। এ ছাড়া অন্য দেশের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের যে অভিযোগ প্রতিবেশী সকল রাষ্ট্র নিয়মিতভাবে ভারতের বিরুদ্ধে করে, সেটা পোক্ত হবে এবং কূটনৈতিকভাবে একটি বিপর্যয় ডেকে আনবে। এমনকি প্রতিবেশী দেশগুলোর ভারতপন্থী রাজনীতিবিদরাও দেশটির বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন করবেন, সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন তো আগেই উঠেছে।

ফলে ভারত কোনো অবস্থাতেই শেখ হাসিনাকে হাতছাড়া করবে না। এমনও সম্ভাবনা আছে যে, বাংলাদেশে হাসিনার প্রতি মনোভাবের বড় কোনো বদল না ঘটলে— সেটা ঘটার সম্ভাবনা যে অত্যন্ত কম, তা ধীরে পরিষ্কারও হচ্ছে— হাসিনাকে আসলে কখনোই প্রকাশ্যে আসতেও দেওয়া হবে না, কিংবা তেমন কিছুর জন্য দীর্ঘকাল অপেক্ষা করতে হবে।

এই প্রেক্ষাপট মাথায় রেখেই শেখ হাসিনার বিচার বিষয়টি নিয়ে আমাদের ভাবা দরকার।

৩.
শেখ হাসিনাকে নিয়ে বিবিসির প্রামাণ্যচিত্রের প্রেক্ষিতে গতকাল (৯ জুলাই) অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত ঘটনাবলিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে উত্থাপন করার আহ্বান জানিয়েছে। শেখ হাসিনার অপরাধ প্রধান বিবেচ্য প্রসঙ্গ হলে ৫ আগস্ট পর্যন্তই তদন্তের সীমা হওয়া উচিত, কাজেই অ্যামনেস্টির এই আহ্বানের মাঝে একটা অস্বস্তি আছে, তাতে সন্দেহ নাই। কিন্তু অন্য বিবেচনায় বলা যায়, যে কোনো অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্তই হওয়া বাঞ্ছনীয় এবং আলোচ্য সময়ের মাঝে সংঘটিত ঘটনাপ্রবাহে জনতার ন্যায্য কিছু ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশই দেখা গিয়েছে। পৃথিবীর ইতিহাসে খুব কম ক্ষেত্রেই এত শান্তিপূর্ণ একটি আন্দোলনে ভয়াবহ একটি খুনি সরকারের অবসান ঘটেছে। মাত্র এক মাসের আন্দোলনে প্রায় ১৪০০ মানুষ শহীদ হবার কথা জাতিসংঘ বলেছে, এই আন্দোলনের যত চিত্র দেখা যায়, কোথাওই মানুষের হাতে অস্ত্র ছিল না, তুমুল সংঘর্ষের ক্ষেত্রগুলো ছাড়া অগ্নিসংযোগ বা আন্দোলনকারীদের হাতে নিহতের ঘটনা দেখা যায়নি। অথচ শুধু যাত্রাবাড়ীতেই ৫ আগস্ট প্রায় অর্ধশতাধিক মানুষ মৃত্যুবরণ করছেন, এর আগেই বহু বিক্ষোভকারী তাদের হাতে নিহত হন। অথচ ৫ আগস্টের আগে কোনো চিত্র পাওয়া যায়নি যেখানে এই বিক্ষোভকারীদের প্রাণঘাতী অস্ত্র নিয়ে পুলিশের ওপর হামলা করতে দেখা গেছে। এক পুলিশের “সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তা”র বর্ণনায় যেটা দেখা গিয়েছিলো: “গুলি করি, মরে একটা, আহত হয় একটা। একটাই যায় স্যার, বাকিডি যায় না। ”

বরং, এইরকম ভয়াবহ নিষ্ঠুর একটি সরকারের পতনের পর যে রক্তক্ষয়ের আশঙ্কা দেখা গিয়েছিল, যে ধরনের সাম্প্রদায়িক হামলার ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছিল, সেই সব পূর্বাভাস প্রতিরোধে অন্তর্বর্তী সরকারের চাইতে জনগণ অনেক বেশি সজাগ ও সচেতন ভূমিকা পালন করেছে। আওয়ামী লীগের মন্ত্রীরা প্রায়ই প্রকাশ্যে বলতেন তারা ক্ষমতাচ্যুত হলে লক্ষ প্রাণহানি হবে। এটা তারা বলতেন দলীয় কর্মীদের ভয় দেখাতে ও সরকারের গণবিরোধী কাজে তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে। হাসিনার পলায়ন পরবর্তীতে তেমন কিছু বাংলাদেশে ঘটেনি, কিছু উগ্রতা ও বাড়াবাড়ি সত্ত্বেও। যেসব জায়গায় এমন কিছু ঘটেছে, প্রায় অধিকাংশ ক্ষেত্রই বরং জনগণের প্রতিবাদের মুখে সরকার সক্রিয় হতে বাধ্য হয়েছে।

কোনো সন্দেহ নেই যে, আন্তর্জাতিক আদালতে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত ঘটনাবলী বিবেচনায় নেওয়া হলে পুলিশের মৃত্যুসমেত যেসব বক্তব্য আওয়ামী লীগের তরফে প্রচার করা হয়, সেগুলোরও পরিপ্রেক্ষিতের একটা নিরপেক্ষ তদন্ত উঠে আসা সম্ভব হবে।

৪.
অন্যদিকে এটাও শক্তিশালী যুক্তি যে, শেখ হাসিনা বাংলাদেশে জনগণের বিরুদ্ধে যে অপরাধ করেছেন, তার বিচার বাংলাদেশেই হওয়া প্রয়োজন। এমন বিচারের নজির খুব ভালোভাবে দেখিয়েছে আর্জেন্টিনা, সেখানে প্রায় একই ধরনের অপরাধে—নির্বিচার হত্যা, গুমসহ অন্যান্য মানবতাবিরোধী কর্মাকাণ্ড—জড়িত সামরিক জান্তার গ্রহণযোগ্য একটি বিচার করে। সেই বিচার প্রশংসিত হয়েছে, জনগণের মাঝে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে এবং এই বিচারের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর একাধিক অভ্যুত্থানের চেষ্টাও জনগণের অংশগ্রহণে ব্যর্থ হয়েছে।

অ্যামনেস্টির আহ্বান মোতাবেক হাসিনার বিচার আন্তর্জাতিক আদালতে তুলে দেওয়ার কয়েকটি সমস্যা আছে। বিষয়টা সংক্ষেপে বোঝা যাবে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের একটি সারসংক্ষেপ থেকে, কোন কোন পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত সক্রিয় হবে বা হবে না:
Complementarity: How will national courts and the International Criminal Court work together?
The International Criminal Court was created to complement national courts. The Court will not begin investigating a crime if the state concerned is already investigating or prosecuting it, or even if the state has investigated it and then decided not to prosecute the persons concerned. However, under the Rome Statute, the Court has the power to prosecute cases if the national state is “unwilling or unable” to carry out a genuine investigation or prosecution. This part of the Statute is meant to make it less likely for perpetrators to escape punishment for crimes because their own state is not willing to investigate and prosecute them.
•           In order to determine if a state is “unwilling” to genuinely investigate and prosecute a case, the Court considers whether it has taken measures to shield the suspect from criminal responsibility, whether it has unduly delayed the proceedings and whether it conducted proceedings in an independent and impartial way.
•           In order to determine if a state is “unable” to genuinely investigate and prosecute a case, the Court considers whether it is unable to arrest the accused, to obtain the necessary evidence, and to otherwise carry out judicial proceedings. This could be the case if the national justice system has collapsed, totally or substantially.

অর্থাৎ, হাসিনার বিষয়টি আইসিসিতে প্রেরণের অর্থ হলো নিজেদের বিচার ব্যবস্থায় দুর্বলতার একটা স্বীকৃতি থাকা। উল্টোদিকে, নিরপেক্ষ বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক আহ্বানে অন্তর্বর্তী সরকারের ইতিবাচক সাড়াও ভাবমূর্তির বিবেচনায় ভালো ভূমিকা রাখতে সক্ষম। দুই দিকেই শক্তিশালী যুক্তি রয়েছে।

৫.
জাতিসংঘের প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে এবং গুম কমিশনের ইতোমধ্যে উদঘাটিত প্রমাণাদির সাপেক্ষে বলা যায়, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক আদালতে হাসিনার প্রসঙ্গটি উত্থাপন করলে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হবে। কখনো আইসিসি তাকে হাতে পেলে তার দোষী সাব্যস্ত হবারও যথেষ্ট কারণ রয়েছে।

ভারত আইসিসির সদস্য রাষ্ট্র না। সে এটার সদস্য না হবার জন্য নানান অজুহাত দেখালেও আসল কারণ দেশের ভেতরে বিদ্রোহ দমন করতে নিয়মিতভাবেই তাকে মানবতাবিরোধী বহু ভূমিকা গ্রহণ করতে হয়। সদস্য রাষ্ট্র না হওয়ায় ভারতে থাকা শেখ হাসিনার জন্য এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তেমন একটা কার্যকর হবার সম্ভাবনা নেই।

অপরদিকে বাংলাদেশের আদালত থেকেও হাসিনার বিরুদ্ধে জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কিংবা দণ্ডের রায়ের আপাতত বাস্তবায়নের কোনো সুযোগ নেই।

কিন্তু আইসিসির কাছে এই মামলাকে পাঠানো হলে তা বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক মহলে অনেকগুলো সুবিধা তৈরি করে দেবে।

প্রথমত, হাসিনার বিচার নিয়ে যে বাংলাদেশ রাষ্ট্র ও জনগণের অবস্থান প্রতিহিংসামূলক নয়, বরং যে কোনো নিরপেক্ষ বিচারেও তার দোষী প্রমাণিত হওয়া বিষয়ে আত্মবিশ্বাসের প্রতিফলন হবে তা।

দ্বিতীয়ত, হাসিনার সহযোগীদের বিরুদ্ধে দেশের আদালতে কিংবা আইসিসিতে করা বিচারগুলোও তখন ন্যায্যতা ও গ্রহণযোগ্যতা পাবে। ভবিষ্যতেও এই বিচারের নিরপেক্ষতা নিয়ে কথা উঠবার সম্ভাবনা কমে যাবে।

তৃতীয়ত, ধরেই নেওয়া যায় যে হাসিনাকে ভারত হাতছাড়া করবে না। কিন্তু মানবতাবিরোধী অপরাধে আন্তর্জাতিক বিচারের সম্মুখীন হলে হাসিনার সহযোগীরাও ভারত ও অল্প কয়েকটি দেশেই তাদের গতিবিধি সীমিত রাখতে বাধ্য হবে। এটা তাদের খুনি নেটওয়ার্ক ভাঙতে বা দুর্বল করতে সাহায্য করবে এবং তাদের সমর্থক বলয়ও ছোট হয়ে আসবে।

চতুর্থত, এর মধ্য দিয়ে তাদের প্রচারণার সামর্থ্যও দুর্বলতর হবে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আইসিসির সদস্য নয়, কিন্তু সেখানকার গণমাধ্যম ও রাজনৈতিক এবং নাগরিক সমাজ এই আদালতকে গুরুত্ব দেয়।

পঞ্চমত, আইসিসিতে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কিছু প্রমাণিত এবং গুরুতর অভিযোগ উত্থাপনের পাশাপাশি দেশের আদালতেও সমান্তরালে হাসিনার বিচার চালানো সম্ভব। ১৫ বছরের শাসনে শেখ হাসিনা বহু রকমের অপরাধই করেছেন, এবং এগুলোর প্রত্যক্ষ হুকুমদাতা হিসেবে আরও বহু মামলায় তাকে অভিযুক্ত করা সম্ভব। ২০১৪ সালের জুলাই-আগস্টের ঘটনাবলি বাদেও আছে গুম, খুন, ক্রসফায়ারসহ অজস্র প্রমাণিত মানবতাবিরোধী অপরাধ। যেমন, স্লোবোদান মিলোসোভিচের বিরুদ্ধে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের বিচারের সময়ে দেশেও তার বিরুদ্ধে অন্য কয়েকটি মামলা চলছিল।

শেষত, বিচার বাংলাদেশের আদালত করুক, বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত করুক, ভারত কোনো অবস্থাতেই হাসিনাকে প্রত্যর্পণ করবে না, এটাই আপাতত বাস্তবতা। কিন্তু আইসিসি কর্তৃক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা একজন অপরাধীর আশ্রয়দাতা হিসেবে ভারত আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অত্যন্ত নাজুক অবস্থায় থাকবে, বাংলাদেশের আদালতের বেলায় ততটা চাপ তৈরি হবে না, যেমনভাবে আইসিসির পরোয়ানা রাশিয়ার পুতিনের জন্য খুবই বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে।

কেউ কেউ নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে এই পরোয়ানার অকার্যকারিতা নিয়ে কথা বলছেন। কথাটা আংশিক সত্য। একদিকে নেতানিয়াহুর জন্যও এটা একটা বিব্রতকর প্রসঙ্গ, অন্যদিকে যে যুদ্ধবাজ ও উগ্র বেপরোয়া ভাবমূর্তির ওপর ইসরায়েল রাষ্ট্র ও তার নেতারা প্রতিষ্ঠিত, তা ভারত থেকে ভিন্ন। ভারত বিশ্ব কূটনৈতিক মঞ্চে নিজেকে একটি গ্রহণযোগ্য ভূমিকায় দেখতে চায়। এই ঘটনা ভারতের প্রতিদ্বন্দ্বীদের জন্য একটা বিরাট সুবিধা এনে দেবে। ভারতের মতোই এই প্রতিদ্বন্দ্বীরাও অনেকেই আইসিসির সদস্য না হলেও এমন কাউকে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ থেকেও তারা এখন পর্যন্ত মুক্ত।

আমার ব্যক্তিগত অভিমত তাই বাংলাদেশের বিচার বিভাগের মর্যাদা অক্ষুণ্ন রাখার স্বার্থে দেশের আদালতে শেখ হাসিনার গ্রহণযোগ্য একটি বিচারের আয়োজন সম্পূর্ণ করেই আন্তর্জাতিক আদালতেরও সাহায্য গ্রহণ করা। তাতে মানবতাবিরোধী অপরাধ চালানো এই ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রধান ব্যক্তিদের বিচারের ক্ষেত্রে যে যে কূটনৈতিক চাপ প্রয়োগ করা সম্ভব হবে, সেটা ন্যায়বিচার ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক উভয় দিক দিয়েই বাংলাদেশকে একটা ইতিবাচক পরিসরে দাঁড় করিয়ে দেবে। ভারতে হাসিনার অবস্থান যে একজন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত আসামিকে প্রশ্রয় দেওয়া, নিজ জনগণের ওপর হত্যাযজ্ঞ চালানো একজন অপরাধীকে আশ্রয় দেওয়া—সেই প্রসঙ্গটি এর মধ্য দিয়ে অনেক বেশি দৃশ্যমান হবে।


ফিরোজ আহমেদ: লেখক, রাজনীতিক ও সংবিধান সংস্কার কমিশনের সদস্য।

এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।