ঢাকা, শনিবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মুক্তমত

ফ্রান্সে অভিবাসী বৈধকরণে প্রজ্ঞাপন: শুভঙ্করের ফাঁকি

ফারুক নওয়াজ খান | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২১৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৮, ২০১৩
ফ্রান্সে অভিবাসী বৈধকরণে প্রজ্ঞাপন: শুভঙ্করের ফাঁকি

প্যারিস থেকে: ফ্রান্সে অবৈধ অভিবাসীদের বৈধ করার জন্য বর্তমান সরকার সম্প্রতি এক প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। প্রজ্ঞাপনটি বেশ কয়েকবার জারি করার কথা শোনা গেলেও এ বিষয়ে স্থির সিদ্ধান্তে আসতে না পারায় স্থগিত করা হয়।

অবশেষে গত ২৮ নভেম্বর মন্ত্রিসভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ম্যানুয়েল ভালস বহু আকাঙ্খিত এ প্রজ্ঞাপনটি উপস্থাপন করেন। এ প্রজ্ঞাপনের ফলে মন্ত্রিসভা অবৈধ ভাবে ফ্রান্সে বসবাসকারীদের বিধিসম্মতভাবে বৈধ করার প্রক্রিয়া চালুর বিষয়ে একমত হন।

এদিকে এ ধরনের প্রজ্ঞাপনকে সমাজবাদী সরকারের দ্বৈতনীতির বহি:প্রকাশ বলে জানিয়েছেন বিরোধী শিবির ইউএমপি’র বিতর্কিত সভাপতি জ্যঁ ফ্রসোয়া কুপে। দীর্ঘদিন ধরে ফ্রান্সে অবৈধভাবে বসবাসকারীদের অভিবাসন সুবিধার আওতার আনার জন্য বর্তমান সমাজবাদী সরকারের জারি করা এ প্রজ্ঞাপনটি অস্পষ্ট বলে মনে করেন তিনি।

অপরদিকে এ প্রজ্ঞাপনের পক্ষে সরকারের মুখপাত্র নাজাত বেল কাসেম সাফাই গেয়ে বলেছেন, ফ্রান্স প্রজাতন্ত্রের অন্তর্ভুক্ত সকল এলাকার অধিবাসীদের জন্য এ প্রজ্ঞাপন স্বচ্ছ ও বস্তুনিষ্ঠ। তিনি এ প্রসঙ্গে জানান, এ প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রজাতন্ত্রে যে সকল ব্যক্তি পাঁচ বছর বা তার অধিক সময় অবস্থান করছেন বিরল কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া তারা সহজেই অভিবাসী হওয়ার সুবিধা পাবে। এছাড়া ফ্রান্সে বসবাসকারী দম্পতির সন্তান যে নিদেন পক্ষে তিন বছর ধরে নিয়মিত স্কুলে যায় তার পিতা মাতা ও এ প্রক্রিয়ার আওতায় অভিবাসী হতে পারবে।

এদিকে এ ধরনের প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ফ্রান্সে বসবাসকারী অবৈধ অভিবাসীদের ঠিক কতো সংখ্যক বৈধতা পাবে এ বিষয়ে কোন সুস্পষ্টতা না থাকায় বিভিন্ন মানবতাবাদী সংগঠন ও অভিবাসন বিশেষজ্ঞ আইনজীবীরা সংশয় প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে যেহেতু এটি একটি প্রজ্ঞাপন সে কারণে কোন আবেদনকারী যদি প্রিফেকচার থেকে প্রত্যাখ্যাত হন সে ক্ষেত্রে সুবিচার প্রত্যাশায় কোন ধরনের আইনি লড়াইয়ে যেতে পারবেন না।

ফ্রান্সের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

চলতি বছরের ২৮ নভেম্বর জারি করা এ প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ফ্রান্সে বসবাসকারী বিদেশিরা যারা কমপক্ষে পাঁচ বছর ধরে এক নাগাড়ে বসবাস করছে এবং বিগত দুই বছরের (২৪ মাসের) মধ্যে কমপক্ষে আট মাস চাকরিরত কিংবা নিয়োগকর্তার কাছ থেকে চাকরির অঙ্গীকার পত্র অথবা চাকরির চুক্তিপত্র দেখাতে পারবে তারা এ প্রজ্ঞাপনের আওতায় অভিবাসনের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

এ বিষয়ে সরকার নিয়ন্ত্রিত বিএফএম টেলিভিশনের সঙ্গে এক সাক্ষাতকারে ফরাসী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ম্যানুয়েল ভালস বলেছেন, বিগত বাম দলের সরকারের সময় প্রায় ৩০ হাজার অবৈধ অভিবাসীকে বৈধ করা হয়েছিলো। এবার ও প্রতিবছর ৩০ হাজার অবৈধ অভিবাসীকে বৈধ করার চিন্তা রয়েছে এ সরকারের।

সরকারের  এ ধরনের সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করেছে ন্যাশনাল ফ্রন্ট। তাদের মতে এমনিতেই বর্তমান সরকার বেকার সমস্যায় ভারাক্রান্ত। এর ওপর আরো অভিবাসীকে বৈধতা দিলে জাতীয় অর্থনীতিতে এর বিরুপ প্রভাব পড়বে। গোঁড়া ডান মতবাদের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ম্যারী ল্য পেন তার এক মন্তব্যে জানান, এ ধরনের সিদ্ধান্ত কখনো ভাল হতে পারে না।

ফ্রান্সে পরিবার নিয়ে কাজ করছে এ ধরনের কয়েকটি সংগঠনের মতে, স্কুল গমনোপযোগী সন্তানের পিতামাতাকে বৈধতা দেওয়ার বিষয়টি অবশ্যই ভাল। তবে কমপক্ষে তিন বছর স্কুলে গেলে সে সব সন্তানের পিতা মাতাকে বৈধ করার বিষয়টি ইতিপুর্বেই চালু রয়েছে জানিয়ে তারা বলেন, ২০০৬ সালে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ রকম একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছিলেন। পরবর্তীতে তিনি তা বাতিল করতে বাধ্য হন।

অভিবাসীদের নিয়ে কাজ করা ফ্রান্সের বৃহৎ সামাজিক সংগঠন ফ্রান্স টের দ্য’এজাইল এ প্রসঙ্গে উদ্বেগ প্রকাশ করে জানিয়েছে এ ধরনের সিদ্ধান্তের ফলে ফ্রান্সের বিভিন্ন অঞ্চলের মধ্যে সমতা রাখা খুব কঠিন হয়ে পড়বে। এর ফলে অনেক অঞ্চলে বসবাসকারীরা অভিবাসন আইনের আওতায় সুবিধা বঞ্চিত হতে পারে বলে তারা জানান।

কি আছে এ প্রজ্ঞাপনে ?
ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এ প্রজ্ঞাপনের আওতায় তিন প্রকারের অবৈধ অভিবাসী বৈধভাবে বসবাসের জন্য আবেদন করতে পারবেন। যেসব পরিবার পাঁচ বছর বা তার বেশী সময় ফ্রান্সে অবস্থান করছেন, নাবালক এবং চাকরিজীবী এ তিন প্রকারের অভিবাসীরা এ প্রজ্ঞাপনের আওতায় আবেদন করতে পারবেন।
 
পরিবারের ক্ষেত্রে: যে সব পরিবার (স্বামী ও স্ত্রী একত্রে) ফ্রান্সে পাঁচ বছর বা তার অধিক  সময় বসবাস করছে, এবং যাদের কমপক্ষে একটি সন্তান রয়েছে যে গত তিন বছর ধরে ফরাসী স্কুলে পড়ছে তারা এ ধারার আওতায় ফ্রান্সে বৈধভাবে অভিবাসন মর্যাদা লাভ করবে। তবে এর জন্য কোন বিশেষ কোটা রাখা হবে না। অর্থাৎ কতটি পরিবার এ প্রজ্ঞাপনের আওতায় বৈধতা পাবে তার কোন উল্লেখ নেই এ আইনে।

অথবা, পারিবারিকভাবে বৈধতা পাওয়ার ক্ষেত্রে স্কুল গমনোপযোগী কোন শিশুর পিতা/মাতার উভয়ই দালিলিকভাবে ফ্রান্সে না থাকলেও চলবে। সে ক্ষেত্রে তারা কত বছর অবস্থান করছে তা প্রমাণের দরকার নেই।

পরিবারের সঙ্গে একত্রীকরণ আইনের ক্ষেত্রে কিছু সহজীকরণ করা হয়েছে। এ প্রজ্ঞাপনের ফলে ফ্রান্সে অবস্থানকারী কোন স্বামী বা স্ত্রীর  সঙ্গে কেউ মিলিত হলে তাদের পাঁচ বছরের স্থলে আঠারো মাস থাকলেই হবে।

নাবালকের ক্ষেত্রে: যে সব নাবালকের সঙ্গে কেউ নেই তাদের বৈধতা দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু সহজীকরণ করা হয়েছে। নাবালকেরা এখন থেকে বসবাস করার জন্য আবাসন সুবিধা পাবে। যদি তারা সাপোর্ট ওয়েলফেয়ার ফর চিলড্রেন (এএসই)। শিশু কল্যাণ সহায়ক কেন্দ্র থেকে কোন সুবিধা না পায়।

নাবালকদের বিধিসম্মত করার ক্ষেত্রে কিছু নিয়মের শিথিল করা হয়েছে। তবে এ সুবিধা পাবে সে সব নাবালকেরা যাদের বয়স ১৬ বছর পুর্ণ হওয়ার পূর্বে ফ্রান্সে প্রবেশ করেছে।

কর্মজীবীর ক্ষেত্রে: চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে কিছু বিশেষ সুবিধা রাখা হয়েছে এ প্রজ্ঞাপনে। এ সুবিধার অর্ন্তভুক্ত তারা তিনটি ক্ষেত্রে পাবে: বিদেশিরা যারা পাঁচ বছরে ধরে ফ্রান্সে অবস্থান করছেন। এবং গত দুই বছরের মধ্যে ৮ মাস স্থায়ীভাবে কাজ করছেন। তিন বছর রয়েছে কিন্তু এর মাঝে দুই বছর কাজ করছেন। অথবা ৭ বছর রয়েছে এর মাঝে ৮ মাস কোন ধরনের ও কাজ করছেন।
পরবর্তীদের ক্ষেত্রে যাদের নিয়োগকর্তার কাছ থেকে চাকরির অঙ্গীকার পত্র রয়েছে। তাদের এ জন্য এ ধারা রদ করা হয়েছে।

এবারই প্রথমবারের মতো আলজেরিয়ান ও তিউনিসিয়ার নাগরিকদের ফ্রান্সে অভিবাসনের ক্ষেত্রে বিশেষ কিছু ধারা সহজ করা শিথিল করা হয়েছে। এ প্রজ্ঞাপনের ফলে কাজের অনুমতিপত্র প্রদানের বিষয় শিথিল করার পাশাপাশি প্রশাসনিক কিছু ধারা সহজ করা হয়েছে। নিয়োগ কর্তা পরিবর্তন হলে ও এ সুবিধা পাওয়া যাবে। চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে অস্থায়ী অথবা খণ্ডকালীন চুক্তিবদ্ধরা ও এ ধারার আওতায় আবেদনের সুযোগ পাবেন।

বিশেষজ্ঞরা কি বলেন?
এ প্রজ্ঞাপনের বিষয়ে বিশেষজ্ঞের বিশ্লেষন থেকে জানা যায়, পরিবারসমুহকে বৈধতা দেওয়ার ক্ষেত্রে বলা হয়েছে কোন পরিবারের সন্তান বিগত পাচ বছরে মধ্যে কমপক্ষে তিন বছর ধরে স্কুলে যায় এমন সব পরিবার এ প্রজ্ঞাপনের আওতায় বৈধতা পাবে। তবে সে ক্ষেত্রে পিতা মাতা উভয়কেই অবৈধ অভিবাসী হতে হবে। ভিন্ন জাতীয়তার সন্তানদের কি করা হবে তা উল্লেখ নেই। অর্থাৎ পিতা বা মাতার মধ্যে একজন যদি ফ্রান্সে অবৈধ বসবাসকারী হয় তাদের ক্ষেত্রে কি করা হবে তার সুস্পষ্ট কোন উল্লেখ এ প্রজ্ঞাপনে নেই। এখানে একটু অস্পষ্টতা রয়েছে বলে তারা মনে করেন।
আবার দেখা গেছে কোন দম্পতি পাঁচ বছর ফ্রান্সে বসবাস করছেন এবং তাদের সন্তানের বয়স চার বছর বা তার কম তারা এ প্রজ্ঞাপনের আওতায় বিশেষ কোন সুবিধা পাবে বলে উল্লেখ নেই। তিন বছর স্কুলে যাওয়ার বিষয়টা জটিল বলে মনে করেন তারা। অর্থাৎ যাদের সন্তানের বয়স পাঁচ বা ছয় বছর তারা বৈষম্যের শিকার হবেন।
প্রতিবছর ঠিক কতো সংখ্যক অবৈধ অভিবাসীকে বৈধতা প্রদান করা হবে এ বিষয়ে কিছুই বলা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ম্যানুয়েল ভালস।

ফ্রান্সে সবচেয়ে বেশী সংখ্যক অবৈধ অভিবাসী বৈধতা লাভ করে ১৯৮১ সালে। এ বছর এক লাখ ৩১ হাজার অবৈধ অভিবাসী এক সঙ্গে বৈধতা লাভ করে। এরপর ১৯৯৭ সালে ৮০ হাজার বৈধতা পায়।
গত ২৯ নভেম্বর বৃহস্পতিবার এ প্রজ্ঞাপনটি বিভিন্ন প্রিফেকচারে পাঠানো হয়। এ বছর প্রায় ৩০ হাজার  অবৈধ অভিবাসী এ প্রজ্ঞাপনের আওতায় বৈধতা পেতে পারে। তবে এ ধরনের অস্পষ্ট প্রজ্ঞাপনের কঠোর সমালোচনা করেছেন ইউএমপি’র সংসদ সদস্য গুইলম ল্যারিভ।

তিনি বলেন, এটি বর্তমান বাম দলের নিয়ন্ত্রিত সরকারের একটি রাজনৈতিক হাতিয়ার। এর মাধ্যমে ভাল কিছু আশা করা যায় না। শুধুমাত্র প্রিফেকচারগুলোতে বৈধতা লাভের আশায় অপেক্ষারত মানুষের লম্বা লাইন ছাড়া অন্য কিছু।
এ বিষয়ে ফ্রান্স টের দ্যএজিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক পিয়ের অঁরি বলেন, এটি স্রেফ রাজনৈতিক উদ্দেশে করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ঠিক কতো সংখ্যক মানুষ বৈধতা পাবে তার কোন পরিসংখ্যান কারো কাছে নেই।

প্রসঙ্গত, ফ্রান্সে বর্তমানে  ঠিক কতো সংখ্যক অবৈধ অভিবাসী রয়েছে তার কোন সঠিক পরিসংখ্যান সরকার বা কোন প্রতিষ্ঠানের কাছে নেই। ২০১১ সালের চিকিৎসা সহায়তা লাভকারীদের যে পরিসংখ্যান পাওয়া যায় তাতে দেখা যায় ২০১১ সালে দুই লাখ ২০ হাজার চিকিৎসা সুবিধা নেওয়ার জন্য নিবন্ধিত হয়েছে। তবে এদের সংখ্যা প্রায় চার লাখ বা তার একটু বেশী হতে পারে বলে জানা যায়। আবার কেউ সঠিকভাবে বলতে পারবে না সন্তানসহ কতোজন দম্পতি রয়েছে। অথবা কতোজন চাকরি করছে।

সিমাডের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা সারা বেলাশের মতে, এ প্রজ্ঞাপনের গাণিতিক ফলাফল মুল্যায়ন করা বেশ কঠিন। প্রতিবছর ৩০ হাজার অভিবাসীকে বৈধতা দান করাটা কতোটা সম্ভব সে বিষয়ে তিনি সন্দিহান।

এ ধরনের প্রজ্ঞাপন খুব ভাল ফলাফল বয়ে আনে না বলে জানান বিশিষ্ট অভিবাসন আইনজীবী সার্জে স্লামা। তিনি বলেন, সরকার যা ভাবছে তার চেয়ে বেশী আবেদন পড়বে। ফলে তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা খুব জটিল।

অপর এক আইনজীবী জেরোম কুকিয়ে বলেন, এটি কোন আইন নয়। এটি একটি প্রজ্ঞাপন। সরকার চাইলে যখন খুশী তা বহাল বা বাতিল করতে পরে। তিনি বলেন, এ প্রজ্ঞাপনের আওতায় যারা প্রিফেকচারে বৈধতা লাভের জন্য আবেদন করবে। প্রিফেকচার যদি তাদের আবেদন পত্রে সন্তুষ্ঠ হয় তাহলে তারা বৈধতা পেতে পারে। অর্থাৎ তারা যদি সব রকমের শর্ত সঠিকভাবে পূরণ করে তবে আবেদনের জন্য যোগ্য বিবেচিত হবেন।

কিন্তু প্রিফেকচার কর্তৃপক্ষ যদি তাদের আবেদন প্রত্যাখ্যান করে তবে এ ধরনের সিদ্ধান্তের বিষয়ে তারা দেশের অভিবাসন আইনের আওতায় কোন ধরনের আবেদন বা আপিল করতে পারবেন না। কারণ এটি সম্পূর্ণভাবেই একটি প্রজ্ঞাপন। কোন ক্রমেই এটি আইন নয় বলে জানান  তিনি।

এ ক্ষেত্রে সতর্কতার সঙ্গে এগোনোর পরামর্শ দেন এ আইনজীবী।

প্রসঙ্গত, ফ্রান্সের সম্প্রতি সাবেক প্রেসিডেন্ট নিকোলা সারকোজি ২০০৬ সালে যখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন সে সময় তিনি বিদ্যালয় গমনকারী শিশুদের পিতা মাতাকে বৈধতা দেওয়ার জন্য একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেন। এ প্রজ্ঞাপনের আওতায় ছয় থেকে সাত হাজার দম্পতিকে বৈধতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিলো। কিন্তু প্রজ্ঞাপন জারির পর পরই একসঙ্গে ৩৩ হাজার আবেদন পড়ায় অবশেষে তা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় তৎকালীন সরকার। একই সমস্যার মুখোমুখি হয়ে ম্যানুয়েল ভালস ও এ ধরনের সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে আসতে পারেন বলে অভিমত অভিজ্ঞজনদের।

এদিকে আগামী বছরের (২০১৩) প্রথম প্রান্তিকে ফ্রান্সে অর্থনৈতিক বিনিয়োগ সুবিধার আওতায় অভিবাসনের বিষয়ে সংসদে খোলামেলা বিতর্ক করার ঘোষণা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ম্যানুয়েল ভালস্। এছাড়া আগামী বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে অভিবাসনের বিষয়ে একটি বিল সংসদে আনা হবে বলে জানা গেছে।  

উল্লেখ্য এ প্রজ্ঞাপনটি গত ২৮ নভেম্বর জারি করা হয়। এর কার্যকারিতা গত ৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০২১৫ ঘণ্টা,  জানুয়ারি ০৮, ২০১২
সম্পাদনা: নূরনবী সিদ্দিক সুইন, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।