ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মুক্তমত

বাংলানিউজের নিউজ কপি করে পত্রিকায় পাঠাতাম!

উত্তম ঘোষ | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫২ ঘণ্টা, জুলাই ২, ২০১৫
বাংলানিউজের নিউজ কপি করে পত্রিকায় পাঠাতাম!

যশোর: ঢাকা থেকে প্রকাশিত একটি পত্রিকায় বছর তিনেক কাজ করেছি। প্রতিদিন বিকেল হলেই মফস্বলের ‘অন্য সাংবাদিকদের’ মতো বাংলানিউজে ঢুকে সংবাদ কপি করে পাঠানোর মধ্য দিয়েই চলছে দীর্ঘদিনের ‘সাংবাদিকতা’।



তবে অফিসের জরুরি নির্দেশনা না পেলে মাথা ঘামাইনি এক্সক্লুসিভ প্রতিবেদনে। আমার জানা মতে, ‘পত্রিকায় বিনা বেতনের সাংবাদিকদের অবস্থা প্রায় একই রকম। ’

যাহোক, ২০১৪ সালের ২৪ অক্টোবর বিকেলে যশোর স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা প্রীতি ফুটবল ম্যাচ দেখছিলাম। এরই মধ্যে মোবাইল ফোনে বাংলানিউজের স্টাফ করেসপন্ডেন্ট (বেনাপোল) আজিজুল ভাই খেলার খবর জানতে চাইলেন। খেলার তথ্য দিলাম।

এদিন রাতেই আজিজুল ভাই আবার ফোন করে বললেন, বাংলানিউজ যশোরে রিপোর্টার খুঁজছে। কাজ করার ইচ্ছা থাকলে লেগে পড়ুন। তার কথায় হাসতে হাসতে সেদিন বলেছিলাম, ‘এতদিন বাংলানিউজের সংবাদ চুরি করে সাংবাদিক বনে গিয়েছি। এখন সেই শীর্ষ সংবাদ মাধ্যম কাজ হওয়ার স্বপ্ন দেখা আর ছেঁড়া কাঁথায় শুয়ে লাখ টাকার স্বপ্ন দেখা একই রকম হবে! এছাড়া আমাদের মতো ‘আনাড়ি’ জুনিয়র সাংবাদিককে কি বাংলানিউজ সুযোগ দেবে?’

তবুও পরদিন থেকে বাংলানিউজে সংবাদ পাঠানো শুরু করলাম। প্রথম দিনেই কান্ট্রি এডিটর শিমুল আপা ফোনে বললেন, ভাইয়া রিপোর্ট পাঠাতে পারেন তার মানে কিন্তু চাকরি পেয়ে গেলেন, এমনটি নয়। তার কথায় একদম ঘাবড়ে গেলাম।

তবে, তার পরের কথা হচ্ছে, আমরা অল্প বয়সী ছেলে খুঁজছি, প্রয়োজনে শিখিয়ে নেব। শুধুমাত্র এই একটি কথায় ভরসা রেখে অবিরাম ছুঁটে চলেছি দুই মাস।

অবশেষে বাংলানিউজের কলকাতায় দায়িত্বরত সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ভাস্কর দাদাসহ আরও কয়েকজন শুভাকাঙ্ক্ষির কথামতো ৩১ ডিসেম্বর বাংলানিউজ অফিসে গিয়ে সাক্ষাৎ করি মাননীয় এডিটর ইন চিফ আলমগীর হোসেনের সঙ্গে। ওই দিনই তিনি আমাকে স্টাফ করেসপন্ডেন্ট পদে যশোরে কাজ করার সুযোগ করে দেন।  

স্যারের সাক্ষাতের মধ্যদিয়েই রিপোর্টিংয়ের বেশ কিছু দিকনির্দেশনা পেলাম। সেই থেকে নানা চড়াই-উৎড়াই পেরিয়ে শুরু করেছি পথচলা। গত ছয় মাসে এডিটর ইন চিফ আলমগীর হোসেন স্যার, কান্ট্রি এডিটর শিমুল আপাসহ দায়িত্বশীল সব কর্মকর্তা ও নিউজরুম এডিটরদের বিভিন্ন নির্দেশনার মধ্যে সবচেয়ে বেশি উপলব্ধি করেছি, বাংলানিউজ শুধুমাত্র ঢাকা অফিসে কর্মরতদের পরিবার মনে করে এমনটি নয়। আমাদের মতো মফস্বলে থাকা কর্মীদেরও তারা সমান গুরুত্ব দেয়। স্বপ্ন দেখায় আরও অনেক বড় হওয়ার।

অফিস ডেক্স কিংবা অন্য কাজে শত ব্যস্ততার মাঝেও কর্মকর্তাদের ফোন করলে তাৎক্ষণিক পরামর্শ পেয়েছি।   এসব কিছু মিলিয়ে বাংলানিউজের একজন কর্মী হওয়ায় সত্যিই আমি গর্বিত। তবে শুরুতেই বাংলানিউজ যে সন্মান আমাকে দিয়েছে, তাতে আমি চিরঋণি দেশের শীর্ষ এ নিউজপোর্টালটির কাছে।

এ ঋণ শোধ দেবার নয়। তবে এতে বেড়ে গেছে দায়িত্ব-কর্তব্য। ভার্চুয়াল জগতে রাজত্ব করা বাংলানিউজে সবেমাত্র আমার যাত্রা শুরু, সামনে যেতে হবে বহুদূর।

সবশেষে বাংলানিউজের ৫ বছর পূর্তি ও ৬ষ্ঠ বছরে পদার্পণ উপলক্ষে সবাই জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।

লেখক: স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, যশোর।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৩ ঘণ্টা, জুলাই ০২, ২০১৫
পিসি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।