ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

মুক্তমত

ইন্টারনেট অব থিংস এবং স্মার্ট ক্লাসরুম

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২৬ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০১৭
ইন্টারনেট অব থিংস এবং স্মার্ট ক্লাসরুম প্রফেসর ড. সাজ্জাদ হোসেন

The Internet is just a world passing around notes in a classroom.
-জন স্টুয়ার্ট(আমেরিকান অভিনেতা, লেখক এবং কমেডিয়ান)

মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে নাটকীয়ভাবে পাল্টে দিয়েছে ইন্টারনেট। এই পরিবর্তন এত কম সময়ে এবং এত ব্যাপকহারে হয়েছে যে তা সায়েন্স ফিকশন গল্পের মতই লাগে।

ইন্টারনেটের যথাযথ প্রয়োগের ফলে এমন এক বিশ্ব গড়ে তোলা সম্ভব যা অনেক সায়েন্স ফিকশন লেখকও কল্পনা করতে পারেনি বিশ বছর আগে। কয়জন লোকই বা ভাবতে পেরেছিল যে ভবিষ্যতে আমাদের আশপাশের বিভিন্ন বস্তু আর যন্ত্রপাতি আমাদের সাথে তথ্য আদান-প্রদান করতে সক্ষম হবে এবং নিজ থেকেই পরিস্থিতি বুঝে প্রয়োজন মত কাজ করে যাবে! ইন্টারনেট অব থিংস এর মাধ্যমে কিন্তু বর্তমানে আমরা আসলেই এমনটি করতে সক্ষম হয়েছি। ভবিষ্যতের দুনিয়া আর রূপকথার গল্পের মাঝে বোধহয় খুব বেশি পার্থক্য থাকবে না!

পৃথিবীর বিভিন্ন উন্নত দেশ এবং মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি আরো এক দশক আগেই বুঝতে পেরেছিল যে ভবিষ্যতে এই ইন্টারনেট অব থিংসের মাধ্যমে গোটা দুনিয়া পরিচালিত হবে। সেই লক্ষে বিভিন্ন দেশে গড়ে উঠছে “স্মার্ট সিটি” যেখানে গোটা শহরের মানুষদের জীবনযাপনকে ইন্টারনেট অব থিংসের সহায়তায় আরো সহজ করে তোলা সম্ভব। বস্তুদের মাঝে যোগাযোগ ঘটলে তাতে মানুষের জীবনযাপন কিভাবে সহজ হয়ে উঠবে তা বোঝার সহজ উপায় হলো কোন একটি উদাহরণ দেখা। আমাদের সকলের পরিচিত স্কুলের ক্লাসরুমই হতে পারে চমৎকার একটি উদাহরণ।

ক্লাসরুমকে IOT এর মাধ্যমে কতটা আধুনিক করা সম্ভব? প্রযুক্তির ছোঁয়া বদলে দিতে পারে গোটা ক্লাসরুমের পরিবেশকে। ক্লাসের মূল লক্ষ্য থাকে প্রত্যেক শিক্ষার্থীদেরকে যতটা সম্ভব পড়া বোঝানো, তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শিক্ষকরা এই লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হন সময়ের অভাবে! ক্লাসরুমের বড় একটি সময় ব্যয় হয় এমন কাজে যা শিক্ষার্থীদের পড়ার সাথে সম্পর্কিত নয়। রোল ডাকা, খাতা বা বিভিন্ন কাগজ বিতরন করা, শিক্ষার্থীদের মনোযোগ ফিরিয়ে আনা – এমন সব কাজেই ক্লাসের সময়ের বড় একটি অংশ ব্যয় হয়। যার ফলে শিক্ষকদের পক্ষে প্রতিটি শিক্ষার্থীকে যথেষ্ট সময় দেওয়া সম্ভব হয় না। ক্লাসের সকল শিক্ষার্থীর মেধা সমান নয়। অনেক দুর্বল শিক্ষার্থী লজ্জায় সকলের সামনে বলতে পারে না যে তারা শিক্ষকের লেকচার বুঝতে পারেনি। সময় বাচানো সম্ভব হলে প্রতিটি শিক্ষার্থীকে যথেষ্ট সময় দেওয়া সম্ভব হবে শিক্ষকের পক্ষে। শুধু তাই নয়, এই বেচে যাওয়া সময়ে শিক্ষার্থীদেরকে সামাজিক এবং নৈতিক বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কেও শেখানো সম্ভব। ইন্টারনেট অব থিংস বাসংক্ষেপে IoT এর মাধ্যমে কিভাবে ক্লাসরুমকে আরো কার্যকর এবং আনন্দদায়ক করে তোলা সম্ভব তা নিয়ে আমরা আলোচনা করবো।
চিত্র ১- স্মার্ট ক্লাসরুম
স্মার্ট ক্লাসরুম“স্মার্ট ক্লাসরুম” বলতে কি বোঝায় তা আগে জেনে নেই। স্মার্ট ক্লাসরুম বলতে বোঝায় আধুনিক প্রযুক্তি অর্থাৎ বিভিন্ন ধরনের হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার ব্যবহারের মাধ্যমে ইন্টারনেটভিত্তিক ক্লাসরুম যেখানে সকল শিক্ষার্থী সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে পারবে। শিক্ষার্থীরা লেকচারের কতখানি বুঝতে পেরেছে তা অনেক শিক্ষকই জানতে চান। বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে লেকচারের সময় সাধারণত প্রতি ১০ মিনিট পরপর শিক্ষার্থীরা মনোযোগ হারাতে থাকে। যার ফলে দেখা গেছে যে শিক্ষার্থীরা লেকচারের প্রথম ১০ মিনিটে দেওয়া তথ্যের মাঝে প্রায় ৬৫% মনে রাখতে সক্ষম হয় কিন্তু শেষের ১০ মিনিটের লেকচারের মাত্র ২৫% এর মত মনে রাখতে পারে। অর্থাৎ শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় উন্নতির জন্য শিক্ষকদেরকে এমনভাবে লেকচার দেওয়া উচিত যাতে শিক্ষার্থীরা সহজে মনোযোগ না হারায়। ইন্টারনেট অব থিংসের মাধ্যমে আমরা শিক্ষকদের কাছে তথ্য পৌঁছে দিতে পারি কখন তার শিক্ষার্থীরা মনোযোগ হারাচ্ছে। এটা করা সম্ভব শিক্ষার্থীদের কণ্ঠস্বর, নড়াচড়া, কথাবার্তা, ভাবভঙ্গি ইত্যাদি বিশ্লেষণের মাধ্যমে। শিক্ষককে পড়া বোঝানোয় ব্যস্ত থাকতে হয় তাই এই বিশ্লেষণের কাজ করবে বিভিন্ন যন্ত্র। তারা বিশ্লেষণ করে ফলাফল শিক্ষককে পাঠাবে যার ফলে একজন শিক্ষক বুঝতে পারবেন যে তার লেকচারের কোন সময়ে শিক্ষার্থীরা মনোযোগ হারিয়ে ফেলে।

ইন্টারনেট অব থিংসের মাধ্যমে আরো অনেকভাবেই ক্লাসের পারফরম্যান্স উন্নত করা যায়। তার আগে দেখে নেই যে এটি প্রয়োগের জন্য কি কি প্রয়োজন। ডাটা প্রসেস করার জন্য বেশ কয়েক ধরনের ডিভাইস প্রয়োজন। ক্লাসের ছবি এবং শব্দ রেকর্ড করা, নড়াচড়া চিহ্নিত করা এবং এই ডাটাগুলোকে তাৎক্ষণিক বিশ্লেষণ করে(Real-time feedback) ফলাফল দেখানোর প্রয়োজন হবে। শিক্ষার্থীদের নড়াচড়াকে বিশ্লেষণ করার জন্য অবশ্যই প্রয়োজন ক্যামেরা। বিভিন্ন ছবির মাঝে ক্ষুদ্র ফ্রেমের পার্থক্য থাকবে যার ফলে তা বিশ্লেষণ করে বোঝা যাবে যে কখন শিক্ষার্থীরা বেশি নড়াচড়া করছে। সাউন্ড সেন্সরের মাধ্যমে ক্লাসের সাউন্ড লেভেলের তারতম্য বিশ্লেষণ করা হবে। সকল তথ্য যথাসময়ে শিক্ষকের কাছে পৌছাতে পারলে তবেই শিক্ষক সেই তথ্যের পূর্ণ সুবিধা নিতে পারবেন। তাই Real-time feedback অত্যন্ত জরুরি। সেই সাথে আরো একটি ব্যাপার মাথায় রাখা জরুরি। সেটা হলো শিক্ষার্থীদের মানসিক চাপমুক্ত রাখা। স্কুল এমন একটি জায়গা যেখানে শিক্ষার্থীরা একে অপরের সাথে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে তোলে। সারাক্ষন নজরদারির মধ্যে রয়েছে – এই ব্যাপার কারো মাথায় ঢুকে গেলে তার পক্ষে সম্পূর্ণ স্বাভাবিক আচরন করা সম্ভব নয়। তাই শিক্ষার্থীদেরকে এই বিশ্লেষণের ব্যাপারে না জানানোই ভাল।

অপ্রয়োজনীয় কাজে সময় নষ্ট হওয়া থেকে শিক্ষককে মুক্তি দিতে পারে ইন্টারনেট অব থিংস। রোল ডাকার কথাই চিন্তা করা যাক। প্রতিদিন কয়েক মিনিট ব্যয় হয় শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বুঝে নিতে। এই সময় সহজেই বাঁচানো সম্ভব যদি তাদের উপস্থিতি “অটোম্যাটিক”ভাবে হয়ে যায়। ছাত্রছাত্রীরা ক্লাসের সিটে বসার সাথে সাথেই তাদের উপস্থিতি চলে যাবে কম্পিউটারে! এটি করা যেতে পারে Nymiএর মত হাতে পড়ার উপযোগী “স্মার্টব্যান্ড” এর মাধ্যমে। এই স্মার্টব্যান্ড ECG pattern এর মাধ্যমে কোন ব্যক্তি এটি পড়ে আছে তা জানান দিতে সক্ষম। শিক্ষার্থীরা সিটে বসলেই এটি সিগন্যাল পাঠিয়ে দেবে যার ফলে সেই শিক্ষার্থীর উপস্থিতি আপনা থেকেই হয়ে যাবে। নিউরোসেন্সরের মাধ্যমে মানুষের মস্তিস্ক পরীক্ষা করা সম্ভব অর্থাৎ কোন ব্যক্তি বেশি মাথা খাটাচ্ছে তা নিউরোসেন্সরের মাধ্যমেই বলে দেওয়া সম্ভব। এই নিউরোসেন্সরের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদেরকে মস্তিস্ক মনিটর করা হবে, ফলে শিক্ষক সেন্সরের রেজাল্ট দেখেই বুঝতে পারবে কোন শিক্ষার্থী তার মাথা বেশি খাটাচ্ছে। এর ফলে শিক্ষক সহজেই বুঝতে পারবেন যে কোন শিক্ষার্থীর পড়া বুঝতে কষ্ট হচ্ছে, ফলে তিনি সেই সকল শিক্ষার্থীদেরকে বেশি সময় দিতে পারবেন। অনেক দুর্বল শিক্ষার্থী সবার সামনে নিজের প্রশ্নটা বলতে পারে না, তাই তাদের জন্য এই প্রযুক্তি খুবই উপকারী। শিক্ষার্থীদের মনোযোগ নিতে ব্যর্থ হচ্ছেন শিক্ষক? ছাত্রছাত্রীরা ক্লাসে কথা বলছে? সবার সামনে তাদেরকে ধমক না দিয়ে তাদের হাতে পড়া ব্যান্ড বা সামনে থাকা ট্যাবলেটে “হ্যাপটিক” ভাইব্রেশন পাঠাতে পারবেন শিক্ষক – যা অনেকটা আমাদের মোবাইলে নোটিফিকেশন আসার মত মৃদু। এই ভাইব্রেশন পেয়ে শিক্ষার্থী বুঝে যাবে যে শিক্ষক তার মনোযোগ ফিরিয়ে আনতে চাচ্ছেন।
ইন্টারনেট অব থিংসের আরেকটি মজার ব্যবহার হলো সেন্সর গ্লাভস। হাতমোজার মত এই সেন্সর গ্লাভসগুলো “Interactive learning” এর ক্ষেত্রে বেশ কাজে দেয়। ইতোমধ্যেই অস্ট্রেলিয়ায় এগুলো ব্যবহৃত হচ্ছে সাইন ল্যাংগুয়েজ শেখানোর ক্ষেত্রে। শিক্ষার্থীরা এই গ্লাভস পড়ে সাইন ল্যাংগুয়েজ বলার চেষ্টা করলে সেন্সর গ্লাভস সেই তথ্য কম্পিউটারে পাঠিয়ে দিচ্ছে এবং কম্পিউটারের স্ক্রিনে সেই সাইন ল্যাংগুয়েজের অনুবাদ ফুটে উঠছে। শিক্ষার্থীদেরকে একই সাথে বিভিন্ন পরামর্শও দেওয়া হচ্ছে কম্পিউটারের মাধ্যমে।  চিত্র ২- সেন্সর গ্লাভস

অনেক শিক্ষকই হয়ত স্মার্ট বোর্ড সম্পর্কে অবগত নন। পড়ালেখা শেখার ক্ষেত্রে স্মার্ট বোর্ড গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। কম্পিউটারের ডিজিটাল ইমেজ এই স্মার্ট বোর্ডের উপর এনে আমরা শুধু দেখতেই পারবো না, ছবিগুলোকে নিজেদের প্রয়োজনমত পরিবর্তন বা সংশোধন করে এক মজাদার ড্রয়িং বোর্ডে পরিণত করতে পারব। নির্দিষ্ট ধরনের পেন বা হাতের আঙ্গুলের মাধ্যমেই এই পরিবর্তন করা সম্ভব। স্মার্ট বোর্ডের মত জিনিসের ফলে শিক্ষার্থীরা অনেক বেশি আগ্রহী এবং কৌতূহলী হয়ে উঠতে পারে। এছাড়াও সকল শিক্ষার্থী একই পদ্ধতিতে শিখতে পারে না। কেউ লিখে শিখে আবার কেউ বা দেখে শিখতে পছন্দ করে। স্মার্ট বোর্ড সকল ধরনের শিক্ষার্থীদেরকে শেখার সুযোগ করে দেয়।
চিত্র ৩- স্মার্ট বোর্ড
আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, সিঙ্গাপুরের মত দেশে ইন্টারনেট অব থিংসের সহায়তায় স্মার্ট ক্লাসরুমে শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে। ক্লাসে স্মার্ট বোর্ড, শিক্ষার্থীদের জন্য ট্যাব ইত্যাদি ব্যবহৃত হচ্ছে। ভবিষ্যতে আরো অনেক ডিভাইস ব্যবহার করে ডাটা অ্যানালাইসিসের মাধ্যমে ক্লাসরুমকে সফলভাবে পরিচালনা করা হবে। বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশে স্মার্ট ক্লাসরুম প্রয়োগ করা কিছুটা কঠিন হলেও সকলের সদিচ্ছা থাকলে তা সম্ভব। শুনতে খুব দামি বলে মনে হলেও কম খরচে স্মার্ট ক্লাসরুম গড়ে তোলা সম্ভব। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ইন্টারনেট ব্যবস্থা পৌঁছে দেওয়ার প্রয়োজন হবে। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে এখনো ইন্টারনেট সুবিধা তেমনভাবে পৌছায়নি। তবে আশার কথা হলো আমাদের বর্তমান সরকার তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী। তাই এই সমস্যাও কাটিয়ে তোলা সম্ভব।

আমাদের দেশে স্মার্ট ক্লাসরুম হবে শিক্ষা ব্যবস্থার পরবর্তী ধাপ। শিক্ষার্থীরা এর ফলে গোটা দুনিয়ার সকল দেশের শিক্ষার্থীদের মত একই মানের শিক্ষা গ্রহণ করতে সক্ষম হবে। শুধু তাই নয়, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে শিক্ষার মানের বৈষম্য দূর করা সম্ভব হবে স্মার্ট ক্লাসরুমের মাধ্যমে। আমাদের দেশে গ্রামাঞ্চলের অনেক স্কুল কলেজের শিক্ষার মান শহরের স্কুল কলেজের মত নয়। সেখানকার শিক্ষকরাও অনেকে যথাযথ ট্রেনিং প্রাপ্ত হয়নি। যার ফলে ঢাকার মত শহরে শিক্ষার্থীদের অতিরিক্ত চাপ পড়ে। শহরের অভিভাবকরাও নামীদামি স্কুল কলেজে তাদের সন্তানকে ভর্তি করাতে এক প্রকার যুদ্ধে নামেন। স্মার্ট ক্লাসরুমের ফলে শিক্ষার্থীদেরকে আধুনিক পদ্ধতিতে প্রায়োগিক শিক্ষা প্রদান করা সম্ভব। বইয়ের শুকনো লেখা পড়ে যতটা না শেখা যায় তার থেকে দ্রুত সময়ে ভালভাবে শেখা যায় যদি পড়াশোনা অনেক বেশি হাতে কলমে হয়। স্মার্ট ক্লাসরুমে শিক্ষার্থীরা সারাক্ষন পড়ালেখার আধুনিক উপকরণগুলোর সাথে(ট্যাব, স্মার্ট বোর্ড) interact করে তাদের চোখের স্মানে ফলাফল দেখতে পারবে। যার ফলে শিক্ষাব্যবস্থা হবে অনেক বেশি প্রায়োগিক এবং আনন্দদায়ক। স্মার্ট ক্লাসরুমের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঝে বৈষম্য কমিয়ে ফেলা হবে, ফলে শিক্ষার্থীরা যেখানেই থাকুক না কেন তাদের শিক্ষার মান নিয়ে দুশ্চিন্তা করতে হবে না। ইন্টারনেট অব থিংসের প্রয়োগের ফলে শুধু ক্লাসরুমের চার দেয়ালের মাঝেই শিক্ষা সীমাবদ্ধ থাকবে না; বরং পৃথিবীর যেকোনো স্থান আমাদের জ্ঞান অর্জনের উপযোগী হয়ে উঠবে। যার ফলে আমাদের দেশের শিক্ষার্থীরা বিশ্বের সকল প্রান্তের মানুষের সাথে প্রতিযোগিতার জন্য প্রস্তুত হবে।

ভবিষ্যতে পৃথিবীর সকল প্রান্তে ইন্টারনেট অব থিংসের মাধ্যমে কাজ করা হবে। শিক্ষাপদ্ধতিও এই প্রযুক্তির সাথে খাপ খাইয়ে নিবে। আমাদের দেশও এর ব্যতিক্রম হবে না। ইন্টারনেট অব থিংস সকল কিছুর মাঝে যোগাযোগ স্থাপন করে গোটা পৃথিবীকেই বৃহৎ এক ক্লাসরুমে পরিণত করবে। আমাদের প্রতিটি পদক্ষেপ হবে আরোও সহজ এবং আনন্দময়।

প্রফেসর ড. সাজ্জাদ হোসেন: বিভাগীয় প্রধান, ডিপার্টমেন্ট অব কম্পিউটার সাইন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ। সহযোগিতায়: খায়রুন নাহার এবং মোঃ শাকিফ ফেরদৌস।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৪ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০১৭
জেডএম/

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।