ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মুক্তমত

জলবায়ু পরিবর্তন অস্বীকারের রাজনৈতিক অর্থনীতি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭১৩ ঘণ্টা, জুন ৫, ২০১৭
জলবায়ু পরিবর্তন অস্বীকারের রাজনৈতিক অর্থনীতি

ডোনাল্ড ট্রাম্প রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই ইউরোপীয় মিত্র এবং অন্যান্য আঞ্চলিক শক্তিশালী দেশগুলোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের অবনতি লক্ষ্যনীয়। সম্পর্কের এই  ক্রমাবনতি প্রকাশ্য রূপ লাভ করে সম্প্রতি ইতালির সিসিলিতে অনুষ্ঠিত বিশ্বের উন্নত এবং শক্তিশালী অর্থনীতির দেশগুলোর জোট জি৭ এর শীর্ষ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে।

বৈশ্বিক নিরাপত্তা এবং বাণিজ্য ছাড়াও সম্মেলনের অন্যতম আলোচ্য বিষয় ছিল জলবায়ু পরিবর্তন, বিশেষ করে কার্বন নির্গমন হ্রাসের লক্ষ্যে সম্পাদিত প্যারিস জলবায়ু চক্তির বিষয়ে ঐক্যমত্য প্রতিষ্ঠা। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত নীতি বিষয়ে কোনরকম মতৈক্য ছাড়াই সম্মেলনের সমাপ্তি ঘটে।

সম্মেলন শেষে জোটের শীর্ষ নেতারা এর জন্য এককভাবে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে দায়ী করে এক ব্যতিক্রমি বিবৃতি দেন। ডোনাল্ড ট্রাম্প পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দেন, তিনি প্যারিস জলবায়ু চুক্তির বিষয়টি নিয়ে আরো পর্যালোচনা করতে চান।

তাঁর এ ঘোষণা যে প্রকারান্তরে চুক্তিটিকে অস্বীকারের একটি কৌশল সে ব্যাপারে জি৭ নেতারা মোটামুটি নিশ্চিত ছিলেন। ইতিমধ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্প ১ জুন সংবাদ সম্মেলন ডেকে চুক্তিটি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরে আসার ঘোষণা দেন। এ পরিস্থিতিতে জার্মান চ্যান্সেলর এঙ্গেলা মার্কেল জি৭ সম্মেলন পরবর্তী জার্মানির আসন্ন নির্বাচন উপলক্ষ্যে এক সমাবেশে ঘোষণা করেন যে ইউরোপিয়ানদের ভাগ্য নিজেদের হাতেই গড়তে হবে।

ন্যাটো এবং জি৭ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতির আচরণকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, গত কয়েক দিনে আমার এটা উপলব্ধি হয়েছে যে ইউরোপিয়ান হিসেবে আমাদের ভবিষ্যত এবং প্রত্যাশিত গন্তব্যের জন্য আমাদের নিজেদের উপরই নির্ভর করতে হবে। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই অবস্থান অনুমিতই ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের গত রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে তাঁর অনেক বিতর্কিত নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনের বৈজ্ঞানিক ভিত্তিক অস্বীকার অন্যতম। নির্বাচিত হলে তিনি প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নেয়ারও অঙ্গীকার করেছিলেন।
জলবায়ু পরিবর্তনকে একটি ”চাইনিজ ধাপ্পাবাজি” অভিহিত করে নির্বাচনের অনেক আগে থেকেই নিয়মিত বক্তৃতা এবং সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে আসছিলেন ট্রাম্প। শুধু তাই নয়, রাষ্ট্রপতি হিসেবে হোয়াইট হাউজের দায়িত্ব নেবার প্রথম দিনই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সাবেক রাষ্ট্রপতি বারাক ওবামার আমলে গৃহীত জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সকল নীতি (যার মধ্যে ‘ক্লাইমেট অ্যাকশন প্লান অ্যান্ড দ্যা ওয়াটার্স অব দ্য ইউএস” অন্যতম) বাতিল করে দেন। হোয়াইট হাউজের ওয়েবসাইট থেকে সে সম্পর্কিত সকল দলিল মুছে ফেলে “আমেরিকা প্রথম জ্বালানি নীতি”প্রতিস্থাপন করেন। প্রস্তাবিত এই নীতির মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে বারাক ওবামার আমলে বন্ধ হয়ে যাওয়া পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কয়লা শিল্পকে পুনরায় চালু করা।

পরিবেশবাদীদের তীব্র প্রতিবাদ স্বত্ত্বেও পরিবেশ সুরক্ষা সংস্থার (ইপিএ) প্রধান হিসেবে বিতর্কিত পরিবেশ বিরোধী স্কট প্রুইটকে নিয়োগ দিয়ে তিনি তাঁর অন‍ুসৃত নীতির পথেই হেঁটেছেন।

দায়িত্ব নিয়েই প্রুইট ইপিএ এর বাজেট ব্যাপকহারে কাঁটছাট করেছেন এবং পরিবেশ সুরক্ষার লক্ষ্যে চলমান অনেক বৈজ্ঞানিক গবেষণা প্রকল্প বন্ধ করে দিয়েছেন।

গত ২৯ মে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় “মোরা” আঘাত হেনে সমগ্র উপকূলীয় এলাকা লন্ডভন্ড করে দিয়ে যায়। সারা পৃথিবীর জলবায়ু বিজ্ঞানী এবং আবহাওয়াবিদরা একমত যে, ঘূর্ণিঝড়ের মত অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের ফল। জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী সংস্থা ইন্টার গভার্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ (আইপিসিসি) জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে ধারাবাহিকভাবে পর্যালোচনা রিপোর্ট প্রকাশ করে আসছে। এ পর্যন্ত প্রকাশিত পাঁচটি প্রতিবেদনই জলবায়ু পরিবর্তনকে একটি মানবসৃষ্ট বৈজ্ঞানিক বাস্তবতা হিসেবে চিহ্নিত করেছে এবং নানা প্রায়োগিক তথ্য-উপাত্তের মাধ্যমে সমগ্র বিশ্বের বিশেষ করে বাংলাদেশের মত অনুন্নত বা উন্নয়নশীল দেশের মানুষের জীবন-জীবিকার উপর এর নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে সতর্ক করে আসছে।

গত ১৩৬ বছরের (১৮৮০-২০১৬) প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা ২০১৪, ২০১৫ এবং ২০১৬ সালকে পর্যায়ক্রমে মানব ইতিহাসের সবচেয়ে উষ্ণতম বছর হিসেবে চিহ্নিত করেছে। পবিত্র রমজান মাসের পূর্বে কয়েকদিন ধরে বাংলাদেশে বিরাজমান অসহ্য তাপপ্রবাহ থেকে ধারণা করা যায় যে, ২০১৭ সাল সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখবে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে বৈজ্ঞানিক গবেষণা এবং অগ্রযাত্রার তীর্থভূমি যুক্তরাষ্টের রাষ্ট্রপতি কেন বৈজ্ঞানিকভাবে স্বীকৃত মানব সৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনকে অস্বীকার করছেন? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হলে দেখতে হবে ট্রাম্প কাদের প্রতিনিধিত্ব করছেন এবং রাজনৈতিক-অর্থনৈতিকভাবে তাঁর দর্শনইবা কি? তিনি নিজে একজন ঝানু ব্যবসায়ী এবং পুঁজিবাদী শিল্প ব্যবস্থায় তাঁর অগাধ আস্থা। আবার ধর্মীয়ভাবে রক্ষণশীল রিপাবলিকান পার্টির মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। আমেরিকা বহু বর্ণ, জাতি, ধর্মের মানুষের দেশ হলেও শ্বেতকায় খ্রিস্টানদের মধ্যে রিপাবলিকান পার্টির জনপ্রিয়তা একচেটিয়া। বিশ্বব্যাপী সফল ‘ডিল মেকার’ হিসেবে সুপরিচিত ট্রাম্প এই সুযোগটিই নিয়েছেন। রক্ষণশীল শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদিতাকে পুঁজি করেই তিনি নির্বাচনী বৈতরণী পার হয়েছেন।

বৈজ্ঞানিকভাবে একথা প্রতিষ্ঠিত যে, জলবায়ু পরিবর্তজনিত বৈশ্বিক উষ্ণতা একটি চলমান প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া হলেও শিল্প বিপ্লবের পর থেকে এর মাত্রা ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পায়। আর প্রথম থেকেই জীবাশ্ম জ্বালানিই হচ্ছে পশ্চিমা বিশ্বে শিল্পায়নের প্রধানতম মাধ্যম। শিল্প বিপ্লবের প্রথম দিকেই সুইডিশ বিজ্ঞানী আরহেনিয়াস ১৮৯৫ সালে প্রকাশিত গবেষণাপত্র ‘অন দ্যা ইনফ্লুয়েন্স অব কার্বনিক এসিড ইন দ্যা এয়ার আপোন টেম্পারেচার অব দ্যা গ্রাউন্ড’ -এ জীবাশ্ম জ্বালানিনির্ভর অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড নিসৃত কার্বন-ডাই অক্সাইড বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি করবে বলে সতর্ক করে দিয়েছিলেন। কার্বন নির্গমনের বিষয়ে তাঁর এই বক্তব্য যে কতটা সত্য তা আমরা নিম্নের ছক থেকে বুঝতে পারি।

সূত্র: ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি ২০০৯

উপরের ছক বিশ্বব্যাপী জনসংখ্যা এবং কার্বন নির্গমনের একটি অসম বন্টন ব্যবস্থার ইঙ্গিত দেয়। যুক্তরাষ্ট্রের নের্তৃত্বাধীন ওইসিডিভুক্ত পশ্চিমা পুঁজিবাদী শিল্পায়িত দেশসমূহের জনসংখ্যা বিশ্বজনসংখ্যার ক্ষুদ্রঅংশ (১৭.৯%) হলেও বিশ্ব কার্বন নির্গমনের বৃহৎ অংশ (৪৪.৯%) তাদের দখলে। অন্যদিকে চীন ব্যতিত সমগ্র এশিয়ায় সবচেয়ে বেশী (৩৫.৪%) জনসংখ্যা বাস করলেও কার্বন নির্গমনে তাদের অবদান মাত্র ১৪.৮%। আর পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক ব্যবস্থার মূল লক্ষ্যই হচ্ছে মুনাফার সর্বোচ্চকরণ। এই প্রক্রিয়ায় জল, জলা, বনসহ সকল প্রাকৃতিক সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহারই পুঁজিপতিদের একমাত্র উপায়। নবায়নযোগ্য জ্বালানীর বিকল্প উৎস তেমন না থাকায় প্রাকৃতিক সম্পদের দখল নিয়ে সারা পৃথিবীতেই এক ধরনের অসুস্থ, অমানবিক প্রতিযোগিতা চলছে। এশিয়া, আফ্রিকা এবং ল্যাটিন আমেরিকাতে পশ্চিমা শক্তির উপনিবেশের সূচনাও কিন্তু এ লক্ষ্যেই শুরূ হয়েছিল। এই প্রতিযোগিতায় জেতার জন্য চাই রাজনৈতিক ক্ষমতা কাঠামোয় নিজেদের একক আধিপত্য। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ সমগ্র পশ্চিমা বিশ্বে রক্ষণশীল স্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্যবাদীতার উত্থান সেই আদিপত্য প্রতিষ্ঠারই লক্ষণ। নিচের ছকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান দুটি রাজনৈতিক ধারার মধ্যে বিদ্যমান অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির দিক থেকে বিপরীত অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অধিকাংশ রিপাবলিকান পুঁজিবাদী ব্যবস্থার প্রতি আস্থাশীল অন্যদিকে অধিকাংশ না হলেও প্রায় অর্ধেক ডেমোক্র্যাট পুঁজিবাদি ব্যবস্থার প্রতি আস্থাহীনতা প্রকাশ করেছেন।

ছক-২

 

যুক্তরাষ্ট্রে বৈশ্বিক উষ্ণতা বিষয়ে রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে দীর্ঘ দিন গবেষণা করে খ্যাতি লাভ করেছেন পরিবেশ সমাজবিজ্ঞানের জনক ওকলাহোমা স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক রাইলি ডানলপ এবং মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক এ্যারোন ম্যাক্রিট। তাঁরা যৌথ গবেষণায় দেখিয়েছেন, বৈশ্বিক উষ্ণতার নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গিগতভাবে যুক্তরাষ্ট্রের জনগণ দুটি ধারায় বিভক্ত। নিচের ছকে সেই বিভক্তি তুলে ধরা হলো।

 

ছক-৩
সূত্র: ডানলপ এবং ম্যাক্রিট, ২০০৮

উপরোক্ত ছক থেকে দেখা যায়, জলবায়ু পরিবর্তনকে মানব অস্তিত্বের জন্য হুমকিস্বরূপ বিবেচনার ক্ষেত্রে রক্ষণশীল রিপাবলিকানরা উদার ডেমোক্রেটদের তুলনায় অনেক পিছিয়ে আছে। আর এই রক্ষণশীলদের একচেটিয়া ভোটেই ডোনাল্ড ট্রাম্প আজ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট।

জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের মধ্যে এই বিভক্তির কারণ কি? উত্তরে বলা যায়, যুক্তরাষ্ট্র শুধু প্রধান দুটি জীবাশ্ম জ্বালানি- তেল এবং গ্যাস- এর প্রধান আমদানিকারকই নয়, অন্যতম উৎপাদকও বটে। সর্বেপরি পৃথিবীর অধিকাংশ বৃহৎ তেল ও গ্যাস কর্পোরেশনের মালিকও যুক্তরাষ্ট্র। অন্যদিকে পুঁজিবাদী কর্পোরেশনগুলো ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, খরা ইত্যাদি প্রাকৃতিক দুর্যোগকে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ও ব্যবসা সম্প্রসারণের সুযোগ হিসেবে দেখে। উদাহরণস্বরূপ ২০০৮ সাল থেকে ২০১০ সালের মধ্যে ২৬১টি জলবায়ু সহনশীল শস্যের পেটেন্টের জন্য আবেদন করা হয়। এর মধ্যে ৮০ ভাগ শস্যই হচ্ছে মনসান্টো এবং সিনজেন্টাসহ বৃহৎ ৬টি কর্পোরেশনের।

সম্প্রতি বাংলাদেশের বনানীতে ছাত্রী ধর্ষণ কাণ্ডে আলোচিত রেইন্ট্রি হোটেলের মালিক সংসদ সদস্য বি. এইচ. হারুনের আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হওয়ার খবরের সাথে জলবায়ু পরিবর্তন অস্বীকারের রাজনৈতিক অর্থনীতির যোগসাজশ পাওয়া যায়।

সৌদি সরকারের অর্থায়নে প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় আইলা এবং সিডরে আক্রান্ত উপকূলবাসীর পুনর্বাসন এবং আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ কাজ পাওয়া ঠিকাদারের ব্যাংক হিসাব থেকে চেক জালিয়াতি করে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার মাধ্যমে তিনি আজ দেশের একজন শীর্ষ ব্যবসায়ী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। ভারতীয় কোম্পানির অর্থায়নে সুন্দরবন বিনাশী রামপাল কয়লাভিত্তিক বিন্দুৎ কেন্দ্র নির্মাণও একই রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক কারণে।

সুতরাং এককেন্দ্রিক পুঁজিবাদী বিশ্বব্যবস্থায় জলবায়ু পরিবর্তন পৃথিবীব্যাপী ক্ষমতাশীলদের কাছে ক্ষমতাহীনদের শোষণের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। বিশ্বব্যাপী স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক পরিবেশবাদী ব্যক্তি এবং সংগঠনের নেতৃত্বে জলবায়ু পরিবর্তন অস্বীকারকারী এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সুবিধাভোগী ক্ষমতাশীল গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বৈজ্ঞানিক তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপনের মাধ্যমে, আন্দোলনের মাধ্যমে পরিবেশবান্ধব নানা কর্মসূচি চালু করতে বাধ্য করাটাই এ সমস্যা থেকে মুক্তির একমাত্র পথ। অন্যথায় ক্রমবর্ধমান উষ্ণ ধরনী অচীরেই মানুষ এবং অন্যান্য জীব-বৈচিত্র্যের জন্য বাস অযোগ্য হয়ে পড়বে।

লেখক: শিক্ষক, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস টেক বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশের জনস্বাস্থ্যের উপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে গবেষণারত, [email protected]

বাংলাদেশ সময়: ১২৫০ ঘণ্টা, জুন ৫, ২০১৭
জেডএম/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।