আসলে পৃথিবীতে কম্পিউটার প্রযুক্তিতে কারা বা কোন দেশ শ্রেষ্ঠ- এই প্রশ্নটা আমার মাথায়ও ঘুরঘুর করতো। আর পরিচিত পরিমণ্ডলে কারো কাছে জানতে চাইলে তারা আমাকে বোকা ঠাওরাতো।
কিন্তু প্রশ্নটা আমার মনের ভেতরে থেকেই যেতো, সত্যিই কি আমেরিকা সব প্রশ্নে এমনই সন্দেহাতীতভাবে প্রতিযোগিতার উর্ধ্বে, যে প্রশ্নটা উত্থাপন করা মাত্র শুনতে হবে, সারাদিন গুগল, ফেসবুক-ম্যাসেঞ্জারের রাজ্যে থেকেও এমন বোকা বোকা প্রশ্ন করিস! অতঃপর বুঝতে পারি মিডিয়ার যাদুকরী ক্ষমতা আমাদের মনন ও মস্তিষ্ককে কতটা দখল করে নিয়েছে আমাদের অজান্তেই। সারা দিন-রাত পশ্চিমা প্রচার মাধ্যমের ডামাডোলের মধ্যে থেকে বিকল্প কি-ই বা আমরা ভাবতে পারবো। অথচ এতোসব কিছুর পরেও আমার দ্বিধা কাটাতে পারতাম না। কারণ, সেই আশির দশকের গোড়ায় মানে ১৯৮২ সালে আমারই এক বন্ধু উচ্চ শিক্ষার্থে বৃত্তি নিয়ে গিয়েছিলো চেকোস্লোভাকিয়ায়। আমাদের ধারণা ছিলো সেখানে সে নিশ্চয়ই ডাক্তারি বা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে গিয়েছে। কিন্তু না, সে সেখানে পড়াশুনা করেছিলো কম্পিউটার সায়েন্সে। তাও কোন দেশে, এক সমাজতান্ত্রিক দেশ, চেকোস্লোভাকিয়ায়। কোন বিষয়ে-কম্পিউটার সায়েন্স। কবে- ১৯৮২ সনে। আমি সোভিয়েত ইউনিয়নের কথা বাদ দিলাম, যদি চেকোস্লোভাকিয়ার মতো একটি দেশে সেই সময়েই কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ থাকে, তাহলে কি করে আমি বিনা বাক্য ব্যয়ে আমেরিকার শ্রেষ্ঠত্ব মেনে নিই!
আর আজ স্পুটনিকের একটি প্রতিবেদন পড়তে গিয়ে সত্যি বিষ্মিত হয়েছি! কারণ সেই প্রতিবেদনটির শিরোনাম ‘কম্পিউটার প্রযুক্তিতে কেন রাশিয়ানরা শ্রেষ্ঠ?’ সত্যি বলতে কি শিরোনাম দেখে হোঁচট খেয়েছি। কেউ কেউ অবশ্য বলতে পারেন, স্পুটনিকতো বলবেই! যারা এমনটা বলবেন বা ভাবছেন তাদের মাথায় কিন্তু এই ধারণাটা কাজ করে না যে, বিবিসি, সিএনএন-এর প্রতিবেদনও কোন না কোন পক্ষে তাদের একচেটিয়া প্রচারণা দিয়ে গণমনন গড়ে তুলছে। আর আমরা সেই সব কিছুকে অকাট্য ধরে নিয়ে, সেসবকে একটি মান বা একক হিসেবে বিবেচনা করে তার নিরিখে বিশ্বটাকে দেখছি। যাহোক, এই বিরোধাত্মক দৃষ্টিভঙ্গিটাকে স্পষ্ট করে না নিলে, আমার এই লেখার পাঠকরা সরাসরি বিষয়টাকে নাকচ করে দিতে পারে। তাই প্রতিবেদনটিতে উত্থাপিত তথ্য উপাত্তগুলোর দিকে নজর দিয়ে সত্যিকারের বাস্তবতা উপলব্ধি করার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ রইলো।
স্পুটনিকের প্রতিবেদন বলছে, রাশিয়ার প্রোগ্রামাররাই দুনিয়ার সেরা। তার প্রমাণ তারা আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে বিজয়ী হয়; তারা সারা পৃথিবীর তথ্য প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোতে কাজ করে; তারা জনপ্রিয় সব অনলাইন গেমস ও টেরিস থেকে শুরু করে টেলিগ্রাম অব্দি বহুবিধ মোবাইল অ্যাপ তৈরি করে। আর এই বিষয়ে তাদের রয়েছে নিবিড় পর্যবেক্ষণ। রাশিয়ার কম্পিউটার সফ্টওয়্যার বিজ্ঞানী অ্যালেক্সেই প্যাজিটনভ উদ্ভাবিত টেরিস সারা পৃথিবীতে পরিচিত ও প্রশংসিত। শুধুমাত্র ২০২০ খ্রিস্টাব্দেই এই গেমসটি ৫০০ মিলিয়নের বেশি ডাউনলোড হয়েছে। অপর প্রোগ্রামার পাভেল ডুরভের ম্যাসেজিং সেবার জন্য করা দি টেলিগ্রাম সফ্টওয়্যারটি সারা পৃথিবীতে ৫০০ মিলিয়নের বেশি মানুষ ব্যবহার করছে। গুগলের বিবেচনায় রাশিয়ার সফ্ট ওয়্যার ডেভেলপার সের্গেই ডিমিট্রিয়েভ, ইউজিন বেলায়েভ ও ভ্যালেন্টিন কিপায়েটকভ উদ্ভাবিত কটলিন প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজটি অ্যানড্রয়েড অ্যাপ উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত কার্যকর। এছাড়াও রাশিয়ার সফ্টওয়্যার ডেভেলপার সেমিওন ও এফিম ভয়নভের উদ্ভাবিত মস্তিষ্ক উদ্দীপনা জাগানোর সহায়ক গেমস ‘কাট দি রোপ’ এক বিলিয়ন বারেরও বেশি ডাউনলোড হয়েছে। চূড়ান্ত বিচারে দেখা যায়, রাশিয়ার সফ্টওয়্যার ডেভেলপাররা বিগত দশ বছর ধরে আন্তর্জাতিক অলিম্পিয়াড যেমন ইন্টারন্যাশনাল কলেজিয়েট প্রোগ্রামিং কন্টেস্ট এবং ইন্টারন্যাশনাল অলিম্পিয়াড ইন ইনফরমেটিকস-এ তাদের শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে। তাই একটি বিষয় উপলব্ধি করা অত্যন্ত বাঞ্ছনীয় আর তা হলো এসবের পেছনে মূল প্রণোদনা কোথায়?
আসলে এ ব্যাপারে বর্তমান প্রজন্মও এ কথা স্বীকার করে যে, এর পেছনে রয়েছে বিলুপ্ত সোভিয়েত ইউনিয়নের কালপর্বে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার দোসরদেরকে পারমাণবিক সমরাস্ত্র প্রতিযোগিতায় ছাড়িয়ে যাওয়ার দৃঢ়প্রতিজ্ঞা থেকে শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রায়োগিক গণিত ও প্রোগ্রামিং বিজ্ঞানে জোর দেওয়ার যে কারিকুলাম অনুসরণ করা হতো সেটাই এখনও পর্যন্ত রাশিয়ায় চালু আছে। রাশিয়ার জাতীর শিক্ষাক্রমের ডিরেক্টর মিখাইল গুস্তকাসিনের মতে, এই লক্ষ্য বাস্তবায়ন করতে যোগ্য কারিগরি বিশেষজ্ঞ প্রয়োজন ছিলো। তাই সমগ্র সোভিয়েত ইউনিয়ন জুড়ে সারা বছর বিভিন্ন স্তরের গণিত অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত হতো। রাশিয়ার একাডেমি অব সায়েন্সের গবেষক ও লেনোনোসভ মস্কো স্টেট ইউনিভার্সিটির কম্পিউটিশনাল ম্যাথমেটিকস ও সাইবারনেটিকস অনুষদের ডিন ইগর সলোকভ বলেন যে, তৎকালীন সোভিয়েত বড় বড় শহরগুলোতে দিবা ও আবাসিক স্কুলসমূহে গণিত ও পদার্থ বিজ্ঞানে বিশেষায়িত কোর্স চালু করা হয়েছিলো এবং সেটাও রাশিয়ার কম্পিউটার শিক্ষার সকল শাখায় এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে। তিনি আরো বলেছেন যে, সোভিয়েত ইউনিয়নের সময়কালে সমন্বিত ও সুসংগঠিতভাবে বিভিন্ন ধরণের অলিম্পিয়াডের বহু উদ্যোগ নেওয়া হতো। তার সুফল আজও রাশিয়া ভোগ করছে।
মিখাইল মিরাজায়ানভ আট বছর বয়স থেকে বিশেষায়িত অলিম্পিয়াডে যোগ দিতে শুরু করে। সে জেতার ব্যাপারে ছিলো দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তাই সে রাতের পর রাত নিত্য নতুন সমস্যা সমাধানের জন্য বিরতিহীনভাবে কাটিয়ে দিতো। ‘আমার মতোই বিশেষ বিশেষ কিছু লোকের এই ধরনের প্রতিযোগিতার প্রয়োজন হয়। যদি আপনি এই প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব থেকে তাদেরকে বঞ্চিত করেন, তাহলে তারা সহজে অনুপ্রাণিত বোধ করবে না এবং ফলশ্রুতিতে তার সুপ্ত প্রতিভারও বিকাশ ঘটবে না। উপরন্তু, কিছু কিছু প্রোগ্রামার রাশিয়ার অলিম্পিয়াডগুলোর চেয়েও বেশি এগিয়ে যায় এবং পেশাদারী প্রতিযোগিতায়ও বিজয়ী হয়। কারণ তারা সমস্যার সমাধান করতেই পছন্দ করে। এটা তাদের জন্য একটি পেশাদারী খেলা। আমি আমার তাগিদেই অধিকতর উৎসাহিত ছিলাম। আমি যেকোন ছায়াছবি দেখার চেয়েও এ ধরণের কজে বেশি মজা পেতাম এবং এমনটা হলে আপনিও কোন প্রিয় ছায়াছবির দ্বিতীয় পর্ব দেখার চেয়ে, কোন প্রতিযোগিতার জন্য প্রোগ্রামিং করতে বেশি মজা পাবেন। এটা এক দারুণ সামাজিক ব্যাপার’-মিরজায়ানভ ব্যাখ্যা করে বলেন।
তার মতে, অতি দ্রুততার সাথে কোন গাণিতিক সমস্যার সমাধানের চেষ্টা অনেক স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীকে প্রোগ্রামিংয়ের মৌলিক বিষয়গুলি বুঝতে এবং অপেশাদার কাজগুলো সহজেই করতে সাহায্য করে। এর ফলে তারা অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণকারী অন্যান্য সদস্যদের সাথে মানিয়ে নিতে শিখে। এভাবে সকলেই সম্মিলিত কাজের স্পৃহা খুঁজে পায় এবং অধিক পারিশ্রমিক পাওয়ার মতো কাজের উপযুক্ত হয়ে ওঠে।
মিখাইলের মতানুসারে, সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রত্যাশা ছিলো শিশুরা স্কুলে থাকতে থাকতেই যেন কম্পিউটার শিক্ষার প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠে। আর সেই মনোভাবের প্রভাব এখনও বিদ্যমান। ‘শুধুমাত্র স্কুলই নয় আরো ছিলো ক্লাবসমূহ এবং কম্পিউটারবিষয়ক বিশেষায়িত ম্যাগাজিন। শিশু বয়সেই আমি ইউনি তেখনিক (তরুণ যন্ত্রকুশলী) এবং কভান্ট (কোয়ান্টাম) ম্যাথমেটিকস ম্যাগাজিন পড়তাম এবং সেসব পড়তে পেরে ভীষণ আনন্দিত বোধ করতাম’, কোডফোর্সের প্রতিষ্ঠাতা স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে এসব কথা বলেন। এসব কিছুই সোভিয়েত কালপর্বের গুনগান করতে গিয়ে বলা বর্তমান রাশিয়ার ডাকসাইটে সব কম্পিউটার বিজ্ঞানী ও সফ্টওয়্যার বিশেষজ্ঞদের ভাষ্য।
কিন্তু এখনকার রাশিয়াতেও অলিম্পিয়াডের জনপ্রিয়তা শীর্ষে। রাশিয়ার শিশুরা এখনও সমান উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণ করে। তা চলমান থাকে স্কুল পর্যায় থেকে উচ্চশিক্ষার স্তর পর্যন্ত এবং নিতান্তই জেলা পর্যায় থেকে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক সহজ থেকে জটিলতর মাত্রায় কম্পিউটার প্রোগ্রামিং থেকে কম্পিউটার মৌলিক বিজ্ঞান বিষয়ক। এক্ষেত্রে শৈশব থেকেই উৎসাহ যোগানোর মতো অসংখ্য শিক্ষক রয়েছেন। এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে এফিম বলেন, ‘আমি একটি সাধারণ স্কুলে ভর্তি হয়েছিলাম। আমার মনে আছে সেখানে আমাদের তথ্য প্রযুক্তির শিক্ষকের ছিলো এক অদ্ভুত ব্যবহার। যখন তিনি টের পেলেন যে, আমার এবং আমার ভাইয়ের সাধারণ পড়াশুনার প্রতি বিশেষ আগ্রহ ও মনোযোগ নেই, তখন তিনি আমাদেরকে সেসব থেকে মুক্তি দিলেন। আর তাই যখন আমার অন্যান্য বন্ধুরা শ্রেণি কার্যক্রমে ব্যস্ত থাকতো, তখন আমরা সেই শিক্ষকের নিজের কম্পিউটারে বসে বিভিন্ন গেমসের ল্যাংগুয়েজ লিখতাম। সেই শিক্ষকের এমন প্রণোদনার কথা ভুলি কী করে। ’
এবার যদি আসা যায় প্রতিষ্ঠান ও প্রতিষ্ঠানিক অবকাঠামো প্রসঙ্গে তাহলে দেখা যাবে রাশিয়ায় রয়েছে অসংখ্য উচ্চমানসম্পন্ন কম্পিউটারবিষয়ক বিশেষায়িত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। যেসব প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতিবছর পাশ করছে বিশ্বমানের অগণিত হার্ডওয়্যার ও সফ্টওয়্যার বিজ্ঞানী। তেমনই একটি প্রতিষ্ঠান হলো মস্কো ইনস্টিটিউট অব ইলেক্ট্রনিকস অ্যান্ড ম্যাথমেটিকস। সেই প্রতিষ্ঠানের একজন বিশ্বনন্দিত প্রোগ্রামার ও সফ্টওয়্যার ডেভেলপার ভয়োনভ বলেন, ‘এই প্রতিষ্ঠানে উচ্চ মানসম্পন্ন গণিত শিক্ষা দেওয়া হয়। আমার মনে পড়ে লিনিয়ার অ্যালজেব্রা কোর্সটির কথা। উক্ত বিষয়ের শিক্ষিকা ছিলেন অত্যন্ত মেজাজী মানুষ। কিন্তু তিনি পাঠদান করতেন এতো সহজ ব্যাখ্যা বিশ্লেষণের মাধ্যমে, বুদ্ধিমত্তার সাথে ও মজা করে যে তার বিষয়ে দুর্দান্ত ফলাফল করা শিক্ষার্থীদের জন্য কোনো ব্যাপারই হতো না। আজ স্বীকার করতে দ্বিধা নেই যে, আমরা যেন সবাই তখন এক প্রতিযোগিতামূলক খেলায় মেতে উঠেছিলাম।
রাশিয়ার আরেক বিশ্বমানের প্রতিষ্ঠান মস্কো বিশ্ববিদ্যালয়ের চৌকস ছাত্র সলোকভ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটেশনাল ম্যাথমেটিকস ও সাইবারনেটিকস ফ্যাকাল্টির পাঠদানের দুটি বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত দিক ছিলো, প্রথমত তত্ত্বীয় দিক ও দ্বিতীয়ত ব্যবহারিক দিকের উপর সমান গুরুত্ব দিয়ে শিক্ষার্থীদেরকে চৌকস করে তোলা। আর সেই কারণেই ধন্যবাদ জানাই আমার প্রতিষ্ঠাটিকে যেখানকার ছাত্ররা যে কোনো জটিল গাণিতিক ও ব্যবহারিক সমস্যা সমাধানে সক্ষম।
গ্রন্থস্বত্বাধিকার অপহরণ, পারিশ্রমিক এবং রাশিয়ার ভূমিজ শক্তিশালী তথ্য প্রযুক্তিবিষয়ক প্রতিষ্ঠানসমূহের বিষয়ে দৃষ্টি ফেরালেও দেখা যাবে রাশিয়াতে তথ্য প্রযুক্তির বাজার গড়ে উঠেছিলো এক অর্থনৈতিক সংকটের কালে অর্থাৎ ১৯৯০-এর দশকে। যখন অনেক বাণিজ্য ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাচ্ছিলো। কিন্তু সেই সময়েও তথ্য প্রযুক্তি খাত রাশিয়াকে অন্যান্য দেশের কাছে এক মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করে দিতে পেরেছিলো। যা প্রমাণ করে যে দেশের অভ্যন্তরেই এই ক্ষেত্রে শিক্ষার মান অত্যন্ত উন্নত পর্যায়ের ছিলো। এই প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে গুস্তকাসিন নিজের ধারণাগত বিশ্বাস প্রকাশ করেন এভাবে, ‘রাশিয়ার শিক্ষাপ্রাপ্ত বেশিরভাগ গ্র্যাজুয়েটই রাশিয়ায় কাজ করে, হয় নিজ দেশের অথবা অন্য দেশের কোন কোম্পানির রাশিয়ান শাখায়। এর ফলশ্রুতিতে তারা রাশিয়ার জন্য নতুন প্রজন্মের প্রোগ্রামার উপাহার দিতে পারছে।
পরিশেষে ভয়োনভের একটি বক্তব্যকে উদ্ধৃত করতেই হয়, ‘রাশিয়ায় প্রোগ্রামারদের পারিশ্রমিক বছরে বছরে বৃদ্ধি পায় এবং তা দেশীয় বাজার অনুপাতে নয়। আর এ কারণেই রাশিয়ায় তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রে দারুণ বিকাশ ধারাবাহিকভাবে চলমান। বলতে দ্বিধা নেই, যে সকল ছেলেমেয়ে পড়াশুনা বিমুখ তাদের অভিভাবকরাও সন্তান কম্পিউটার শিখতে চাইলে খুশি হন এবং উৎসাহ প্রদান করেন। ’ তাই এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে রাশিয়াই কম্পিউটার সফ্টওয়্যার ও হার্ডওয়্যারে বিশ্বসেরা।
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ, মহানগর মহিলা কলেজ, ঢাকা।
ই-মেইলঃ [email protected]