ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

রাজনীতি

১৭ বছর পর উজ্জীবিত সিলেটের ওসমানীনগর ছাত্রলীগ

নাসির উদ্দিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০২২
১৭ বছর পর উজ্জীবিত সিলেটের ওসমানীনগর ছাত্রলীগ ছবি: বাংলানিউজ

সিলেট: কমিটি বিহীন ১৭ বছর হচ্ছে পার করেছে সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলা ও তাজপুর ডিগ্রী কলেজ ছাত্রলীগ। কমিটি না থাকায় আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী দুই চৌধুরীর বলয়ে বিভক্ত হয়েছিল এতো দিন।

ছন্নছাড়া ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনটির নেতাকর্মীরা দলের চেয়ে নেতাদের জন্মদিনে কেক কাটা আর ফুলেল শুভেচ্ছা জানানোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিলেন।

ছাত্রত্বের সোনালী সময় পার করলেও তাদের নামের পাশে যুক্ত হয়নি পদ-পদবী। বঞ্চনার যন্ত্রণায় অনেকে হয়েছেন দেশান্তরী। আর যারা এলাকায় রয়েছেন, তারা নাম লিখিয়েছেন যুবলীগ-স্বেচ্ছাসেবক লীগে।

অথচ এ সময়ে জেলা ছাত্রলীগের তিনটি কমিটি হলেও খাদে পড়ে থাকা ওসমানীনগর ছাত্রলীগকে কেউ টেনে তুলেনি। ফলে দীর্ঘ ১৭ বছর কমিটি বিহীন থেকে যায় ওসমানীনগর উপজেলা ও কলেজ শাখা ছাত্রলীগ। আর উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ দুটি ইউনিটে কমিটি না হওয়ায় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ নেতাকর্মীদের।

অবশেষে গত বছরের শেষের দিকে ওই উপজেলার বাসিন্দা নাজমুল ইসলাম সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হওয়ার পর নতুন কমিটির আশা জাগে। সভাপতি নাজমুল ও সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজ উদ্যোগ নেন উপজেলা কমিটি গঠনের। তাতে উজ্জীবিত হচ্ছে প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলা ছাত্রলীগ।

সাম্প্রতিক সময়ে উপজেলা ও কলেজ ছাত্র সংগঠনের সাংগঠনিক কার্যক্রম জোরদারে ভূমিকা নিয়েছে জেলা কমিটি। এরই মধ্যে পদ প্রত্যাশী শতাধিক নেতাকর্মীদের জীবনবৃত্তান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

গত রোববার (২৭ নভেম্বর) বিকেলে উপজেলার তাজপুর কদমতলা ডাকবাংলায় জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজ ও সিলেট মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাঈম আহমদ উপজেলা ছাত্রলীগের পদ প্রত্যাশীদের কাছ থেকে জীবনবৃত্তান্ত গ্রহণ করেন।

জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম বলেন, পদ প্রত্যাশীদের জীবনবৃত্তান্ত সংগ্রহ করা হয়েছে। যাচাই বাছাই করে ত্যাগী নেতাদের হাতে ওসমানীনগর ও তাজপুর কলেজ ছাত্রলীগের দায়িত্ব অতি শিগগিরই দেওয়া হবে। দেশের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে ছাত্রলীগকে ঘরে বসে থাকলে হবে না।

এ সময় বক্তারা বলেন, বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া ঐতিহ্যবাহী ছাত্রলীগ সব সময় ঐক্যবদ্ধ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন বাস্তবায়নে ছাত্রলীগ সব সময় মাঠে কাজ করছে। ওসমানীনগর উপজেলা ছাত্রলীগকে সু-সংগঠিত করতে এ উপজেলার দুই ইউনিটে কমিটি অনুমোদন করা হবে।

সংগঠনের নেতাকর্মীদের অনেকে জানান, গত ২০০২ সালে ফয়সাল আহমদ সুমনকে সভাপতি এবং রিংকু পালকে সাধারণ সম্পাদক করে ১০১ সদস্য বিশিষ্ট থানা ছাত্রলীগের কমিটি গঠন হয়। কিছুদিন পর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্থায়ীভাবে প্রবাসে চলে যান।

এরপর ২০০৫ সালে এই কমিটি ভেঙে দেওয়া হলে নেতৃত্ব শূন্য হয়ে পড়ে ওসমানীনগর থানা ছাত্রলীগ। এরপর দীর্ঘ ১৭ বছর অতিবাহিত হলেও ছাত্রলীগের কোন কমিটি গঠন করা হয়নি।

২০১৪ সালে পূর্ণাঙ্গ ভাবে ওসমানীনগর উপজেলা গঠন হলে উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি গঠনের জন্য দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়। কিন্তু এ এখনও কমিটি হয়নি। পরবর্তীতে ২০১৭ সালে তৎকালীন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন ত্রাণ বিতরণে আসলে উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি গঠনের গুঞ্জনে ছাত্রলীগ নেতারা জোর লবিং ও দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন। তখন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে কিছুটা চাঙ্গা-ভাব লক্ষ্য করা গেলেও কমিটি গঠনের কোন উদ্যোগ পরিলক্ষিত না হওয়ায় আমেজে ভাটা পড়ে ছিল।

গত বছরের সেপ্টেম্বরে কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য সিলেট-৩ আসনের উপ-নির্বাচনী প্রচারণায় আসেন। তখন উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি গঠনের জন্য তাদের কাছে খোলা চিঠি প্রদান করা হয়। কিন্তু দীর্ঘ দিন অপেক্ষো করেও কোন সুফল মিলেনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০২২
এনইউ/এসআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।