ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

সালতামামি

ফিরে দেখা সুপ্রিম কোর্ট-১

ছয়জনের ফাঁসির রায়, কার্যকর তিনটি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৪৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০১৬
ছয়জনের ফাঁসির রায়, কার্যকর তিনটি ছবি: মতিউর রহমান নিজামী, মীর কাসেম আলী ও জঙ্গি মুফতি হান্নান

বিদায়ী বছর ২০১৬ সাল জুড়ে নানা অপরাধে বেশ কয়েকটি মৃত্যুদণ্ডের রায়ের অনুমোদন দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট। এর মধ্যে বহুল আলোচিত হয়েছে ছয়জনের মৃত্যুদণ্ডের রায়। আর এ ছয়জনের মধ্যে তিনজনের ফাঁসির রায় কার্যকর হয়েছে।

ঢাকা: বিদায়ী বছর ২০১৬ সাল জুড়ে নানা অপরাধে বেশ কয়েকটি মৃত্যুদণ্ডের রায়ের অনুমোদন দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট। এর মধ্যে বহুল আলোচিত হয়েছে ছয়জনের মৃত্যুদণ্ডের রায়।

আর এ ছয়জনের মধ্যে তিনজনের ফাঁসির রায় কার্যকর হয়েছে।

ছয়জনের রায়ের মধ্যে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দু’টি ও দুই বিচারক হত্যায় একটি রায়ে তিনজনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে। এখনও কার্যকর না হওয়া তিনজনের ফাঁসির রায় এসেছে সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা মামলায়। এ মামলায় আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে।

মতিউর রহমান নিজামী

মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।

এ রায়ের বিরুদ্ধে ওই বছরের ২৩ নভেম্বর আপিল করেন নিজামী। ওই আপিলের শুনানি শেষে বিদায়ী বছরের ০৬ জানুয়ারি মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। ১৫ মার্চ পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। ২৯ মার্চ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে রিভিউ আবেদন করেন নিজামী।

এ আবেদনের শুনানি শেষে ০৫ মে রিভিউ খারিজ করে দেন সর্বোচ্চ আদালত। ১০ মে দিবাগত রাত ১২টা ১০ মিনিটে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ফাঁসির মঞ্চে দেশের শীর্ষ যুদ্ধাপরাধী নিজামীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।

মীর কাসেম আলী
২০১৪ সালের ০২ নভেম্বর মীর কাসেম আলীকে মৃত্যুদণ্ড দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। এ রায়ের বিরুদ্ধে ওই বছরের ৩০ নভেম্বর আপিল করেন মীর কাসেম। আপিল শুনানি শেষে বিদায়ী বছরের ০৮ মার্চ তার মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। ০৬ জুন পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়। ১৯ জুন রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে রিভিউ আবেদন করেন মীর কাসেম। ৩০ আগস্ট এ আবেদন খারিজ করে দেন সর্বোচ্চ আদালত।

এরপর ০৩ সেপ্টেম্বর রাতে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর ফাঁসির মঞ্চে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।

জেএমবি জঙ্গি আরিফের ফাঁসি
২০০৫ সালের ১৪ নভেম্বর ঝালকাঠিতে জেলার সিনিয়র সহকারী জজ সোহেল আহম্মেদ ও জগন্নাথ পাঁড়ের গাড়িতে বোমা হামলা চালিয়ে তাদের হত্যা করা হয়। ২০০৬ সালের ২৯ মে ওই হত্যা মামলার রায়ে বিচারিক আদালত জেএমবি’র শীর্ষনেতা শায়খ আবদুর রহমান, সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলাভাই, শায়খের ভাই আতাউর রহমান সানি, জামাতা আবদুল আউয়াল, ইফতেখার হোসেন মামুন, খালেদ সাইফুল্লাহ ফারুক ও আসাদুল ইসলাম আরিফকে মৃত্যুদণ্ড দেন।

ছয় জঙ্গির ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শেষে ২০০৬ সালের ৩১ আগস্ট তাদের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখেন উচ্চ আদালত। ওই বছরের ২৮ নভেম্বর মৃত্যুদণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে ছয় জঙ্গির জেল আপিল খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ। পরে ২০০৭ সালের ২৯ মার্চ  রাতে আসামিদের ফাঁসি  কার্যকর করা হয়।

তবে এ মামলার রায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া আরেক জঙ্গি আসাদুল ইসলাম আরিফ পলাতক ছিলেন। ২০০৭ সালের ১০ জুলাই ময়মনসিংহ থেকে গ্রেফতার হন তিনি। এরপর আপিল করেন আরিফ।

সর্বশেষ বিদায়ী বছরের ২৮ আগস্ট তার মৃত্যুদণ্ডের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ।   এরপর ১৬ অক্টোবর রাত সাড়ে দশটায় খুলনা কারাগারে তার ফাঁসির রায় কার্যকর করা হয়।

আনোয়ার চৌধুরীর ওপর হামলার রায়
২০০৪ সালের ২১ মে সিলেটের হযরত শাহজালালের (র.) মাজারে তৎকালীন ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা হয়। হামলায় আনোয়ার চৌধুরী, সিলেট জেলা প্রশাসকসহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত এবং পুলিশের দুই কর্মকর্তাসহ তিনজন নিহত হন।
 
২০০৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর বিচারিক আদালত এ ঘটনায় আসামি মুফতি হান্নান, বিপুল ও রিপনকে মৃত্যুদণ্ড এবং মহিবুল্লাহ ও আবু জান্দালকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। প্রায় সাত বছর পর বিচারিক আদালতের দণ্ড বহাল রেখে গত ১১ ফেব্রুয়ারি রায় দেন হাইকোর্ট।

এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের পর দণ্ড বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। এখন সর্বোচ্চ আদালতের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর নিয়ম অনুসারে এ রায় কার্যকর হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১১৪৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০১৬
ইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।