ঢাকা, বুধবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩২, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৬

সারাদেশ

বিএসসি কৃষিবিদদের বৈষম্য নিরসনসহ ৫ দফা দাবি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০২৫
বিএসসি কৃষিবিদদের বৈষম্য নিরসনসহ ৫ দফা দাবি

রাজশাহী: পাবলিক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষার সুযোগসহ ৮ দফা দাবিতে গত রোববার (২০ এপ্রিল) সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে কৃষি বিষয়ে ডিপ্লোমা পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা। এবার কৃষি ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের কিছু দাবিকে অযৌক্তিক উল্লেখ করে এবং বিএসসি কৃষিবিদদের প্রতি বৈষম্য নিরসনসহ পাঁচ দফা দাবিতে বুধবার (২৩ এপ্রিল) পাল্টা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন দেশের বিভিন্ন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও কৃষি অনুষদের শিক্ষার্থীরা।

এর অংশ হিসেবে সারাদেশের মতো রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েও (রাবি) মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদ ভবনের সামনে কৃষি অনুষদের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। কৃষি অনুষদের ডিন ও শিক্ষকরা এ আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন।

আন্দোলনকারীদের দাবিগুলো হলো- প্রচলিত ভর্তি পরীক্ষার নিয়ম ছাড়া কোনোভাবেই পাবলিক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নের সুযোগ রাখা যাবে না, নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া ব্যতীত নবম গ্রেডে পদোন্নতির কোনো সুযোগ রাখা যাবে না এবং দশম গ্রেডের পদগুলো গেজেটের আওতার বাইরে প্রচলিত কাঠামোতেই রাখতে হবে, দশম গ্রেডের (উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা/সমমান) চাকরিতে বিএসসি ও ডিপ্লোমা সম্পন্নকারী সবার জন্য উন্মুক্ত রাখতে হবে, কৃষি বা কৃষি সংশ্লিষ্ট বিষয়ে স্নাতক ব্যতীত বামের সঙ্গে কৃষিবিদ প্রত্যয় ব্যবহার করা যাবে না ও এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি এবং কৃষি বিষয়ক ডিপ্লোমা বা, কারিগরি শিক্ষাকে কৃষি বিষয়ক প্রতিষ্ঠানের অধীনেই রাখতে হবে।

মানববন্ধন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, রাবির সমন্বয়ক এবং ক্রপ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের শিক্ষার্থী নুরুল ইসলাম শহীদ বলেন, দশম গ্রেডের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা বা, সমমানের পদগুলোতে কৃষি বিষয়ে ডিপ্লোমা সম্পন্নকারীরা এককভাবে সুযোগ পেয়ে আসছে। আমরা চাই, এখানে মেধার মূল্যায়ন করা হোক। সারাদেশের সব মেধাবীরা সুযোগ পাক। আবার ডিপ্লোমা সম্পন্নকারীরা ভর্তি পরীক্ষা না দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চাচ্ছে। এটা অযৌক্তিক একটা দাবি। তারাও ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে ভর্তি হোক।

তিনি আরও বলেন, আমরা চারবছর ধরে পরিশ্রম করে একটা ডিগ্রি পাওয়ার পরে নামের আগে কৃষিবিদ ব্যবহারের সুযোগ পাই। কিন্তু তারা এইচএসসি সমমানের ডিগ্রি অর্জন করে নামের আগে কৃষিবিদ উপাধি ব্যবহার করে। আমরা এটার প্রতিবাদ জানায়। এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে। আমাদের যৌক্তিক দাবি পূরণে আমরা সারাদেশের কৃষি বিষয়ে স্নাতক পড়ুয়ারা একসঙ্গে আন্দোলনে নেমেছি। আমরা আশা করি, উপদেষ্টারা এ বিষয়ে নজর রাখবেন এবং দাবিগুলো পূরণ করবেন।

মোজাহিদ ইসলাম সায়েম নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোকে আমাদের কাছে অযৌক্তিক মনে হচ্ছে। সেটার বিপরীতেই আমরা পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলনে নেমেছি। সারাদেশের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ থেকে প্রতিবছর যে পরিমাণ স্নাতকধারী বের হন, সে পরিমাণে কর্মসংস্থান নেই। আমরা বিসিএসের মাধ্যমে নবম গ্রেডের কৃষি অফিসার হিসেবে চাকরির সুযোগ পেলেও দশম গ্রেডের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা বা, সমমানের চাকরিতে সুযোগ পাই না। কেনো আমাদের এই সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হয়, সেটা একট বড় প্রশ্ন। আমরা চাই, সবার জন্য এই সুযোগটা উন্মুক্ত করে দেওয়া হোক। সবারই মেধার যোগ্যতাই সুযোগ পাক। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাবো।

মানববন্ধনে রাবি কৃষি অনষদভুক্ত চারটি বিভাগের শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে, গত রোববার (২০ এপ্রিল) সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচি আট দফা ছিলো- ডিপ্লোমা কৃষিবিদদের পাবলিক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষার সুযোগ, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে গেজেট প্রকাশ ও নিয়মিত নিয়োগ নিশ্চিত, কৃষি ডিপ্লোমা শিক্ষার মানোন্নয়নে শিক্ষক সংকট দূরীকরণ, কৃষি ডিপ্লোমা শিক্ষাকে কৃষি সস্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) অধীন থেকে বের করে সম্পূর্ণভাবে কৃষি মন্ত্রণালয়ের আলাদা প্রতিষ্ঠান, সব কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানে সহকারী বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা পদে ডিপ্লোমা কৃষিবিদদের অগ্রাধিকার, বেসরকারি চাকরিতে ডিপ্লোমা কৃষিবিদদের জন্য ন্যূনতম দশম গ্রেডের বেতন কাঠামো, মাঠ সংযুক্তি ভাতা প্রদান এবং চাকরিতে প্রবেশের পর উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের জন্য ছয় মাসের ফাউন্ডেশন ট্রেনিং নিশ্চিত করতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০২৫
এসএস/জেএই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।