ঢাকা, সোমবার, ২২ বৈশাখ ১৪৩২, ০৫ মে ২০২৫, ০৭ জিলকদ ১৪৪৬

সারাদেশ

জিআই স্বীকৃতি পেল দিনাজপুরের বেদানা লিচু

মো. মোস্তাফিজুর রহমান, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১:১৩, মে ৫, ২০২৫
জিআই স্বীকৃতি পেল দিনাজপুরের বেদানা লিচু

দিনাজপুর: লিচুর রাজ্য হিসেবে পরিচিত উত্তরের জেলা দিনাজপুর। গত ৩০ এপ্রিল দিনাজপুরের বেদনা লিচু পেয়েছে ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতির সনদ।

 

দীর্ঘদিনের দাবি বাস্তবায়িত হওয়ায় উচ্ছসিত এ জেলার লিচু চাষি ও বাগানমালিকরা। তবে স্বীকৃতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ না থেকে লিচু বিদেশে রপ্তানির উদ্যোগ নিতে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন চাষিরা।
 
দিনাজপুরের লিচুর প্রসিদ্ধ এলাকা হিসেবে বিবেচনা করা হয় সদর উপজেলার মাসিমপুর ও বিরল উপজেলার মাধববাটী এলাকাকে। উৎকৃষ্ট মাটি ও আবহাওয়ার জন্য এ দুটি এলাকাতেই বেদানা জাতের লিচুর বেশি ফলন হয়।  

মাসিমপুর এলাকার বাগানমালিক মোকসেদুল হক বলেন, এখানে প্রতি পিস লিচুর দাম সাত থেকে আট টাকা, ঢাকায়  দাম একটু বেশি। তবে যদি এ লিচু বিদেশে রপ্তানি হয়, তাহলে আমাদের এখানেই প্রতি পিস লিচু ১১ থেকে ১২ টাকা হিসেবে বিক্রি করতে পারব। আমরা লাভবান হতে পারব। জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি মিলেছে, এটা খুব ভালো লেগেছে। দিনাজপুরের সুনাম হচ্ছে।  

উলিপুর এলাকার কৃষক আলমাস ইসলাম বলেন, দিনাজপুরের লিচু জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে, এটা ভালো দিক। বেদানা লিচুর জন্য সরকার যে ব্যবস্থা করেছে, যদি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে রপ্তানি করতে পারি এবং প্রসেস করতে পারি, তাহলে ভালো হবে এবং বৈদেশিক মুদ্রা আয় হবে। দেশে ডলারের সংকট পূরণে কৃষকরাও ভূমিকা রাখবেন।  

লিচু গাছে পানি সেচ ও স্প্রে করছেন একই এলাকার বাগানমালিক আলতাফ হোসেন। কথা হলে তিনি বলেন, বেদানা লিচু স্বীকৃতি পেয়েছে। এতে উপকার হবে, সুনাম হবে, বিদেশের লোকজনও আসবে। এ লিচু দিনাজপুরের সবচেয়ে ভালো লিচু। এ লিচু দেশের কোথাও এমন ভালো হয় না। এ স্বীকৃতিতে আমাদের লাভ হবে বলে আশা করছি। যদি এ লিচু বিদেশে রপ্তানি হয়, তাহলে দেশের ভালো হবে, অর্থনীতির ভালো হবে এবং আমাদের ভালো হবে।  

লিচু চাষ করেন একই এলাকার মুক্তিযোদ্ধা আকবর আলীও। তিনি বলেন, এ এলাকার সবারই লিচু গাছ রয়েছে। আমরা দীর্ঘদিন ধরেই লিচু চাষ করে আসছি। তবে আমাদের স্বীকৃতি ছিল না। এখন স্বীকৃতি পেয়েছি, এটা আমাদের জন্য এক বিশাল আনন্দের খবর। আগামী দিনে দিনাজপুরের উন্নতমানের লিচু বিদেশে গেলে দেশের জন্য সুনাম বয়ে আনবে এবং দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখবে।  

দিনাজপুর হর্টিকালচার সেন্টারের উদ্যানতত্ত্ববিদ ইমরুল আহসান বলেন, কৃষকদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টার ফলে আমরা এ স্বীকৃতি পেয়েছি। আমরা বিশ্বে দিনাজপুরের পণ্য হিসেবে এটা বিক্রি করতে পারব। তবে স্বীকৃতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকলে হবে না, জিআই পণ্য হিসেবে বিশ্ব বাজারে পণ্যের গুণগত মান থাকতে হবে। সেই লক্ষ্যে কাজ করছি। কৃষি বিভাগের পার্টনার প্রজেক্টের আওতায় বাংলাদেশের বিভিন্ন ফল ও সবজি রপ্তানির জন্য গ্যাপ প্রটোকল মেইনটেইন করা হয়, কীটনাশকের ব্যবহার সীমিত পর্যায়ে রেখে, বিশ্বমানের স্ট্যান্ডার্ড রেখে আমরা পণ্যগুলো পাঠানোর ব্যবস্থা করছি।

দিনাজপুরে সাড়ে পাঁচ হাজার হেক্টর জমিতে লিচু চাষ হয়েছে। যার বাজারমূল্য প্রায় এক হাজার কোটি টাকা। বিদেশে লিচু রপ্তানি করতে পারলে বাজারমূল্যের পরিমাণ আরও বাড়বে।  

এসআই
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।