বরগুনা: বরগুনার তালতলী উপজেলার উপকূলীয় সংরক্ষিত বনাঞ্চলে গাছ কেটে মাছের ঘের তৈরির অভিযোগ উঠেছে। দুই স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি সরকারি বনভূমি দখল করে চিংড়ি চাষের আয়োজন করেছেন বলে জানা গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, শারিকখালী ইউনিয়নের চাউলাপাড়া এলাকায় আন্ধারমানিক নদী তীরবর্তী ছইলা, কেওড়া ও অন্যান্য প্রজাতির শতাধিক গাছ কেটে ২ একরেরও বেশি বনভূমি খনন করে তৈরি করা হয়েছে মাছের ঘের। স্থানীয়দের দাবি, এ কাজ করছেন একই পরিবারের দুই ব্যক্তি। তারা হলেন - মোনশের আলী মৃধার ছেলে বাবুল মৃধা ও আমজেদ আলী মৃধার ছেলে জাকির মৃধা।
বনের ভেতরে কাটা গাছের গোড়া এবং মাটিচাপা পড়া মূল চোখে পড়ে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে উপকূলীয় এলাকাবাসীকে রক্ষা করা এই সবুজ বেষ্টনী ধ্বংস হওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ ও উদ্বেগ বিরাজ করছে।
চাউলাপাড়ার এক বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বনের জমিকে নিজেদের মুখসা বলে দাবি করে মাছের ঘের করছেন বাবুল আর জাকির। এখনই যদি থামানো না যায়, ভবিষ্যতে পুরো বনটাই উজাড় হয়ে যাবে। তখন ঝড়-জলোচ্ছ্বাসে কেউ রক্ষা পাব না।
অভিযুক্তদের দাবি, তারা সরকারি বন্দোবস্তে জমি পেয়েছেন এবং সেখানে চিংড়ির ঘের করছেন। বন বিভাগের লোকজন নাকি ঘুরে গেছেন এবং আপত্তি তোলেননি।
তবে পরিবেশ নিয়ে কাজ করা সংগঠন ধরা’র তালতলী উপজেলা সমন্বয়ক আরিফ রহমান বলেন, উপকূলের রক্ষাকবচ ধ্বংস করছে এক শ্রেণির ভূমিদস্যু। প্রশাসনকে কঠোর অবস্থান নিতে হবে এবং বন বিনাশের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে।
শারিকখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ফারুক হোসেন জানান, তিনি বন বিভাগ থেকে বিষয়টি শুনেছেন এবং প্রয়োজনীয় তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন।
এদিকে তালতলী রেঞ্জ কর্মকর্তা মতিয়ার রহমান বলেন, বনের জায়গায় মাছের ঘের তৈরির ঘটনায় দুজনকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত শেষে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে ঘুষের বিনিময়ে বনভূমি দখলের সহায়তা করার অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেন।
তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে সালমা বলেন, বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। বন কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এসএএইচ