সিলেট: বৃহত্তর সিলেটের চিকিৎসা সেবার প্রাণকেন্দ্র বলা হয় ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে। অথচ সাম্প্রতিক সময়ে হাসপাতালের চিকিৎসা সেবার দৈন্যতা ফুটে ওঠেছে।
রোগীর প্রতি কর্তব্য অবহেলা, রোগীর স্বজনদের সঙ্গে জুনিয়র চিকিৎসকদের দুর্ব্যবহার তথা লাথি মারার ভিডিও ভাইরাল হয় সম্প্রতি। ওয়ার্ড বয় ও আয়াদের ট্রেলি, শয্যা বাণিজ্য এবং দায়িত্বে থাকা সিকিউরিটিদের বিরুদ্ধেও রয়েছে টাকা আদায়ের অভিযোগ। এক অর্থে হাসপাতালে আসা লোকজনকে কোনো না কোনোভাবে হয়রানির শিকার হতে হয়।
এবার দায়িত্ব অবহেলায় হাসপাতালের বারান্দায় সন্তান প্রসব করেছেন দুই নারী। পরে বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) এক নবজাতকের মৃত্যু হয়।
ভুক্তভোগী রোগীদের স্বজনরা জানান, বুধবার (২ জুলাই) বেলা সোয়া ২টার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চাটিবহর গ্রামের সাহিন মিয়ার স্ত্রী সুমি বেগম (১৯) এবং গোলাপগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ রামপাশা গ্রামের রতন চন্দ্র দাসের স্ত্রী সুপ্রিতা রানি দাসকে (২৫) ওসমানী হাসপাতালের লেবার ওয়ার্ডে ভর্তি করেন। কিন্তু ওয়ার্ডে শয্যা সংকট দেখিয়ে তাদের বারান্দায় বসিয়ে রাখা হয়।
এরপর বিকেল পৌনে ৪টার দিকে প্রসব বেদনা উঠলে দায়িত্বপ্রাপ্ত নার্সদের বারবার জানানো হলেও কর্ণপাত করেননি, অভিযোগ স্বজনদের।
পরে সুমি বেগম বারান্দায় সন্তান প্রসব করেন। এর ১০ মিনিট পর সুপ্রিতা রানি দাসও বারান্দাতেই সন্তান প্রসব করেন। জনাকীর্ণ স্থান হওয়াতে সেখানে থাকা রোগীদের স্বজনরা তাদের পরনের কাপড় দিয়ে প্রসূতির আশপাশ ঘেরাও করে রেখে সহযোগিতা করেন। প্রসবের কিছুক্ষণ পর এক নারী চিকিৎসক এসে তাদের ওয়ার্ডের ভেতরে নিয়ে যান। পরে সুমি বেগমের নবজাতকটি মারা যায়।
নবজাতকের মৃত্যুর পর ভুক্তভোগী সুমি বেগম বলেন, হাসপাতালে আসার পর আমাকে দুই ঘণ্টা বসিয়ে রাখা হয়। তার বাবা আজাদ মিয়া এ ঘটনায় ওসমানী হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তবে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (এসআই) দেবাশীষ জানিয়েছেন, পুলিশ ক্যাম্প কিংবা পুলিশ বক্সে কোনো ধরণের অভিযোগ দেওয়া হয়নি। কেউ অভিযোগ দিলে সেটি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হতো। তাছাড়া হাসপাতালের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দিলে তা উপ পরিচালকের কাছেই দিতে হয়।
ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ পরিচালক (প্রশাসন) ডা. সৌমিত্র চক্রবর্তী বলেন, লেবার ওয়ার্ডে ডেলিভারির রোগী বেশি থাকায় পর্যায়ক্রমে পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এ কারণে বিলম্ব হতে পারে। এরপরও বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এনইউ/এএটি