নড়াইলের নড়াগাতী থানার দক্ষিণ নলামারা গ্রামের গৃহবধূ মুন্নি খানম হত্যার ঘটনার ১২ ঘণ্টার মধ্যে হত্যা রহস্য উদঘাটন করেছে (পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন) পিবিআই, যশোর ইউনিট।
এ সময় হত্যার ঘটনায় জড়িত মূলহোতা সোহেল সরদারকে গ্রেপ্তার এবং হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত আলামত উদ্ধার করা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ২৯ আগস্ট বিকেলে মুন্নি খানম (২০) শ্বশুরবাড়ি থেকে তার বাবার বাড়ি নড়াইলের নড়াগাতী থানার নলামারা গ্রামে বেড়াতে আসে এবং ওইদিনই তার শ্বশুরবাড়িতে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ায় সে আর শ্বশুরবাড়িতে ফিরে যায়নি। ওই দিন সন্ধ্যার পর থেকে মুন্নি খানমকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। তার পরিবারের লোকজন সম্ভাব্য সব স্থানে খোঁজাখুঁজি করে মেয়েকে না পেয়ে স্থানীয় থানায় একটি নিখোঁজ জিডি করেন।
পরবর্তীতে নড়াগাতী থানা পুলিশ গত ২ সেপ্টেম্বর সকালে নড়াগাতী থানাধীন দক্ষিণ নলামারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পেছনে পরিত্যক্ত পুকুরের উত্তর পশ্চিম কোণে পানির মধ্যে থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক মেয়ের লাশ উদ্ধার করে।
লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে মুন্নির পরিবারের লোকজন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে লাশটি তাদের মেয়ের বলে শনাক্ত করেন। এরপর নড়াগাতী থানা পুলিশ লাশের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
গৃহবধূ মুন্নি খানম হত্যার ঘটনায় তার মা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে নড়াগাতী থানায় একটি মামলা করেন। মামলা নম্বর-০২, তারিখ-০৩/০৯/২০২৫।
এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পিবিআই-যশোর একটি প্রেসরিলিজে জানায় ঘটনার পরপরই পিবিআই যশোর জেলা ইউনিট ছায়া তদন্ত শুরু করে। ছায়া তদন্তকালে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা ও সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে তারা মুন্নি খানম হত্যা মামলার মূলহোতা নড়াগাতী থানার ডুমুরিয়া পশ্চিমপাড়ার সামাদ সরদারের ছেলে সোহেল সরদারকে (২১) ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার তেঘরিয়া বাসস্ট্যান্ড এলাকার মশিউর সরদারের মেস থেকে গ্রেপ্তার করে। আসামির দেওয়া তথ্যমতে ভিকটিমের গলায় থাকা স্বর্ণের লুণ্ঠিত চেইনটি আসামির নিজ বাড়ির পেছন থেকে উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, মুন্নি খানমের সঙ্গে আসামি সোহেল সরদারের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। গত ২৯ আগস্ট শ্বশুরবাড়ি থেকে তার বাবার বাড়িতে এসে ওইদিন রাত অনুমান সাড়ে ৯টার সময় নলামারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পেছনে তারা দেখা করেন।
একপর্যায়ে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য দেখা দিলে আসামি ভিকটিমকে হত্যা করে পার্শ্ববর্তী ডোবায় কচুরিপানার মধ্যে ফেলে চলে যায়। যাওয়ার সময় ভিকটিমের গলায় থাকা চেইন নিয়ে যায়।
আসামি বাড়িতে যাওয়ার পরে ওই চেইনটি ইমিটেশন মনে করে নিজ বাড়ির পেছনে বাঁশবাগানে ফেলে দেয় বলে স্বীকার করেছে।
আসামি সোহেল সরদারকে বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
আরএ