ঢাকা, রবিবার, ২০ আশ্বিন ১৪৩২, ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ১২ রবিউস সানি ১৪৪৭

সারাদেশ

২৪ কিলোমিটারের সড়কে ৩৭ পয়েন্টে ভাঙন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯:০৪, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৫
২৪ কিলোমিটারের সড়কে ৩৭ পয়েন্টে ভাঙন

খাগড়াছড়ি: বাংলার লাদাখ খ্যাত সড়ক বলা হয় খাগড়াছড়ির মহালছড়ি-সিন্দুকছড়ি জালিয়াপাড়া সড়কটি। তাই ঘুরতে আসা পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ সড়কটি।

মূলত রাইডারদের কাছে জনপ্রিয় এ সড়কটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে। বর্ষণে ২৪ কিলোমিটার নান্দনিক এ সড়কটির ৩৭ স্থানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কোথাও দেবে গেছে কোথাও ধসে পড়েছে। এতে ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে রাস্তাটি।

স্থানীয়রা জানান, খাগড়াছড়ির মহালছড়ি-জালিয়াপাড়া-সিন্দুকছড়ির সড়কটি নতুন করে তৈরি করার পর মহালছড়ি উপজেলার সঙ্গে চট্টগ্রাম-ঢাকাসহ যেকোনো জায়গায় পণ্য আনা-নেওয়াসহ যাতায়াত সহজ হয়েছে। পাহাড়ের বুকে আঁকাবাঁকা সড়কটি দেখতে আসেন স্থানীয় দর্শনার্থীসহ পর্যটকরা।

চলতি বর্ষায় কাটাপাহাড় এলাকায় বিশালভাবে দেবে গেছে সড়কটি। এছাড়া সড়কের বিভিন্ন অংশে ভেঙে গিয়ে ও পাহাড় ধসের কারণে যানবাহনগুলো চলাচল করছে ঝুঁকিতে।

স্থানীয় চাঁদের গাড়ি (জিপ) চালক মিল্টন চাকমা বলেন, আগে মাটিরাঙা হয়ে কিংবা রাঙামাটি সড়ক দিয়ে মালামাল পরিবহন করতে হতো। খরচও বেশি হতো। সিন্দুকছড়ি সড়কটি হওয়াতে অল্প সময়ে মালামাল পরিবহন করতে পারি। এতে খরচ অনেক সাশ্রয়ী হয়। তবে সড়কের বিভিন্ন অংশ ভাঙা হওয়ায় এখন ঝুকিঁতে গাড়ি চালাতে হয়।

মহালছড়ির বাসিন্দা উষানু মারমা উক্যচিং মারমা বলেন, মহালছড়ির উৎপাদিত সব কৃষিপণ্যসহ সব ধরনের মালামাল এ সড়ক দিয়ে আনা-নেওয়া করা হয়। রাস্তা সংস্কার না হওয়ায় এখন পরিবহনে ঝুঁকি বেড়েছে। যদি সড়কটি মেরামত করা না হয়, তাহলে তাদের আবার খাগড়াছড়ি হয়ে পণ্য আনা-নেওয়া করতে হবে। এতে দূরত্ব ও খরচ দুটোই বাড়বে। তাই দ্রুত ভাঙন কবলিত অংশ মেরামত করার দাবি জানাচ্ছি।

বিকেল বেলা স্থানীয় দর্শনার্থীরা পরিবার কিংবা বন্ধুরা মিলে সড়কটিতে ঘুরতে যান। তেমনি একজন ইয়াকুব আলী। তিনি বলেন, স্থানীয়রা ছাড়াও ঢাকা থেকে যেসব পর্যটক মোটরসাইকেলে ঘুরতে আসেন তারা জালিয়াপাড়া হয়ে সিন্দুকছড়ি রোডটি ব্যবহার করে খাগড়াছড়ি ঢুকেন। আবার খাগড়াছড়ি বা সাজেক ঘুরে এ রোড দিয়ে ফিরে যান। তাই এ সড়কটি দ্রুত সংস্কার করা প্রয়োজন।

সড়কটির বিভিন্ন স্থানে পলিথিন, বালুর বস্তা, কংক্রিট দিয়ে প্রাথমিক সংস্কার করা হলেও প্রবল বর্ষায় তা ধসে যাবে।

মানুষের ভোগান্তি দূর করতে বড় ক্ষতির আগেই সড়কটিতে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে জরুরি ভিত্তিতে মেরামতের দাবি জানিয়েছেন খাগড়াছড়ি ট্রাক মালিক সমিতির সভাপতি আসলাম কালু।  

তিনি বলেন, আগে সড়কটিতে চালকরা খুব সহজে গাড়ি চালাতে পারত। কিন্তু এখন বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দেওয়ায় ঝুঁকি বেড়েছে। স্থানীয়দের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে দ্রুত সড়কটি সংস্কার করা প্রয়োজন।

খাগড়াছড়ি সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মাকসুদুর রহমান বলেন, এরই মধ্যে পরামর্শক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী, স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্পের মাধ্যমে সড়কটি রক্ষা করা হবে।

প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালে সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়ন (২০ ইসিবি) কর্তৃক সড়কটি নির্মিত হয়। পাহাড়ি এলাকার গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি শুধু স্থানীয় জনগণের জন্য নয়, পর্যটন এবং পণ্য পরিবহন ব্যবস্থার জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এডি/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।