কলকাতা: ভারতের কলকাতায় পালিত হচ্ছে তিনদিন ব্যাপী বিজয় উৎসব। কলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন প্রাঙ্গণে এ উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।
১৫ থেকে ১৭ ডিসেম্বর প্রতিদিন স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এ উৎসব পালিত হবে।
৫১তম মহান বিজয় দিবস পূর্তির তিনের উৎসবে থাকছে আলোচনা সভা, আলোকচিত্র প্রদর্শনী এবং বাংলাদেশ ও ভারতের শিল্পীদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এছাড়া তিনদিন থাকছে বাংলাদেশের স্বাদে কলকাতাবাসীর জন্য নৈশ ভোজ।
বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ' বিজয়ের ৫১ বছরে বাংলাদেশ ও ভারত সম্পর্কের; অতীত ভবিষ্যৎ, বর্তমান' শীর্ষক একটি আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশের ইউনিভার্সিটি গ্রান্ট কমিশনের চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান, দৈনিক বাংলা স্টেটসম্যানের সাবেক এডিটর অধ্যাপক মানস ঘোষ, বাংলাদেশের রবীন্দ্র ইউনিভার্সিটি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শাহ আজম এবং অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশের ডেপুটি হাই কমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস।
অধ্যাপক আব্দুল মান্নান বলেন, অনেকে বলেন ভারত ভাগ হয়েছে। আমি মনে করি যেভাবে বলা হয়, সেভাবে ভারত ভাগ হয়নি৷ ভাগ হয়েছে বাংলা, ভাগ হয়েছে পাঞ্জাব। ইতিহাসের পেছনের দিকে তাকালে দেখা যাবে যে যুক্তিতে বাংলা এবং পাঞ্জাব ভাগ হয়েছে, তা তো হওয়ার কথা ছিল না। কিন্তু, যা হয়ে গেছে সেটি পেছনে ফেরানো যাবে না। কিন্তু, আমাদের মধ্যে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন ছিল যা সবসময়ের জন্য অটুট রয়েছে। আমাকে দাফতরিক কাজের জন্য বছরে ১৫-২০ বার ভারতে, কলকাতায় আসতে হয়ে। কখনও মনে হয় না আমি ঢাকা ছেড়ে অন্য কোথাও এসেছি। কারণ দুই বাংলার মানুষের আচার-আচরণ, দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডের আমি কোনো তফাৎ দেখি না। সুতরাং আমাদের সম্পর্ক যে রক্তের বন্ধন দিয়ে তৈরি হয়েছিল, ৫১ বছর পরও সে একই রকম রয়ে গেছে। রক্তের কোনো ধর্ম হয় না। চিকিৎসকরা যখন রোগীকে রক্ত দেন তখন তিনি দেখে নেন রক্তটা মানুষের কিনা? তখন কি খোঁজ নেন কার রক্ত? আমাদের রক্তের সম্পর্ক সে ধরনের। যেখানে কোনো ভেদাভেদ নেই।
ড. মোহাম্মদ শাহ আজম বলেন, বাংলাদেশ এবং ভারতের যে মধুর বন্ধুত্বের সম্পর্ক রয়েছে এ সম্পর্কটা ততদিন দীর্ঘস্থায়ী থাকবে, যতদিন পর্যন্ত মুজিবকন্যা শেখ হাসিন বাংলাদেশ পরিচালনা করবেন। শেখ হাসিনা আমাদের শেষ ভরসাস্থল। যিনি থাকলে আমাদের বাঙালিত্ব থাকবে, আমরা বাংলাদেশের প্রকৃত ইতিহাস চর্চা করতে পারবো। আর বাংলাদেশের অভ্যন্তরের প্রকৃত ইতিহাস আমরা চর্চা করতে পারি তাহলে পরেই বাংলাদেশ এবং ভারতের বন্ধুত্ব চিরঅম্লান হয়ে থাকবে। কারণ তখনই আমরা প্রকৃত সত্যগুলোকে জানার চেষ্টা করব। প্রকৃত সত্যগুলোকে আমাদের প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারব। যদি এ সত্য জানেন তাহলে এ সম্পর্ক কোনোদিনও নষ্ট হওয়ার নয়।
আলোচনা শেষে কলকাতার দর্শকদের সামনে মনোজ্ঞ সংস্কৃতি অনুষ্ঠান পরিবেশন করে বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদ ও এনআরবি ওয়ার্ল্ড ফ্রেন্ডশিপ ফোরাম। বিজয় উৎসবে যোগ দিতে বাংলাদেশের স্বাধীনতার যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী ৩০ বীর মুক্তিযোদ্ধা সস্ত্রীক কলকাতায় এসেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০২২
ভিএস/জেএইচ