কলকাতা: রাহুল গান্ধীর আবেদনের শুনানি শেষ হলো না গুজরাট হাইকোর্টে। শনিবার (২৯ এপ্রিল) দীর্ঘ শুনানির পরে বিচারপতি হেমন্ত প্রচ্ছকের বেঞ্চ জানিয়েছে, আগামী মঙ্গলবার (২ মে) আবার এই মামলার শুনানি হবে।
২০১৯ সালের ভারতে লোকসভা ভোটের প্রচারের সময় কর্নাটকের কোলারে মোদী পদবি তুলে আপত্তিকর মন্তব্যের দায়ে, গত ২০ মার্চ অপরাধমূলক মানহানির মামলা হয় সুরাটের নিম্ন আদালতে (ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট)। গত ২৩ মার্চ রাহুল গান্ধীকে ২ বছরের কারাদণ্ড দেয় বিচারক এইচএইচ বর্মা। সুরাট আদালতের সেই সিদ্ধান্তের জেরে একদিন পরেই সাংসদ সদস্য পদ হারাতে হয় রাহুল গান্ধীকে। যদিও সাজা শোনানোর পরই রাহুলকে ৩০ দিনের জন্য শর্তসাপেক্ষে জামিন দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে জানিয়ে দেওয়া হয়, এই ৩০ দিনের মধ্যে উচ্চতর আদালতে এই রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন করারও সুযোগ পাবেন রাহুল।
পরবর্তীতে এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুরাটের নগর দায়রা আদালতে মামলা করেছিলেন রাহুল। গত ১৩ এপ্রিল মামলাটি ওঠে নগর-দায়রা আদালতে। ২০ এপ্রিল বিচারক পি মোগেরা, রাহুলকে কোনওরকম স্বস্তি দেননি। রাহুলের আরজি খারিজ করে দিয়েছিল নগর দায়রা আদালতও। এরপরই মামলটি গুজরাট হাইকোর্টে নিয়ে যায় কংগ্রেস।
প্রসঙ্গত, রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছিলেন বিজেপি বিধায়ক তথা গুজরাটের সাবেক মন্ত্রী পূর্ণেশ মোদি। অভিযোগ করেছিলেন, রাহুল গান্ধী তার মন্তব্যের মাধ্যমে পুরো মোদি পদবিধারীদের অপমান করেছেন। সেই প্রেক্ষিতেই সুরাটের নিম্ম আদালত তাকে দোষী সাব্যস্ত করেন। আদালত তাকে ভারতের ৫০৪ নং ধারায় ২ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয়।
ফলে নিন্ম আদালত ও নগর দায়রা আদালতের এই রায়, গুজরাট আদালত বহাল রাখে তাহলে রাহুলের জেলযাত্রার অনেকটাই সম্ভাবনা বেড়ে গেল। পাশাপাশি ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে রাহুলের প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রশ্নেও আপাতত ইতি পড়তে চলেছে। যদিও রাহুলের কাছে শেষ অপশন থাকছে সুপ্রিম কোর্ট। এই পরিস্থিতিতে এদিন (২৯ এপ্রিল) রাহুলের আইনজীবী তথা কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি হাইকোর্টের শুনানিতে সুরাটের দুই আদালতের রায় নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
সিঙ্ঘভি বলেছেন, বিচার প্রক্রিয়ার গুরুতর ফাঁক থাকার কারণেই কী রাহুল গান্ধী অপরাধমূলক মানহানির মামলায় ২ বছরের জেলের সাজা হয়েছে? তার দাবি, রাহুল কোনও গুরুতর অপরাধ করেননি। তার বিরুদ্ধে মানহানির যে মামলা দায়ের করা হয়েছিল, তার রাজনৈতিক পরিচয়ে প্রভাবিত হয়ে অতিরিক্ত শাস্তি দিয়েছে নিম্ন আদালত। এই পরিস্থিতিতে ২ বছর সাজা দেওয়ার যৌক্তিকতা কী? তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মনু সিঙ্ঘভি। হাইকোর্ট দীর্ঘ শুনানির পরে বিচারপতি হেমন্ত প্রচ্ছকের বেঞ্চ জানিয়েছে, ২ মে আবার এই মামলার শুনানি হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৫২ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০২৩
ভিএস/এসএ