কলকাতা: গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে টানা বর্ষণে বিপর্যস্ত ভারতের দক্ষিণের রাজ্য তামিলনাড়ু। টানা বৃষ্টিতে রাজ্যটির দক্ষিণাঞ্চলে জনজীবন স্তব্ধ হয়ে পড়েছে।
ভারী বৃষ্টিতে রোববার (১৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার পর থেকেই বানভাসি হয়েছিল দক্ষিণ তামিলনাড়ুর বিস্তীর্ণ অংশ। একাধিক বাঁধ থেকে সোমবার পানি ছাড়ার পরে অনেক নতুন এলাকায় সলিলসমাধি ঘটেছে। এই দুর্যোগের কারণে এখনো ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। গৃহবন্দি কয়েক হাজার মানুষ। একাধিক জেলায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে তামিলনাড়ুর বন্যা বিপর্যস্ত দক্ষিণের চার জেলা তিরুনেলভেলি, তুতিকোরিন, তেনকাসি এবং কন্যাকুমারী স্কুল-কলেজসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। বিভিন্ন সামাজিকমাধ্যমে যেসব ছবি ঘুরছে, তাতে দেখা গেছে প্রায় একতলা সমান বাড়ি পানির তলায়।
রাজ্যটির মুখ্য সচিব শিবদাস মিনা জানিয়েছেন, আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, যে বৃষ্টি হওয়ার কথা ছিল তাকেও ছাপিয়ে গেছে। গত কয়েকদিনে বৃষ্টিতে তিরুনেলভেলি এবং তুতিকোরিন জেলা মিলিয়ে মোট ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে দেয়ালচাপায়, পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়েছে চারজনের, দুইজনের বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে এবং একজনের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে।
অতিবর্ষণের ফলে এই জেলাগুলিতে ব্যাহত হয়েছে ট্রেন পরিষেবা। বাতিল করা হয়েছে একাধিক ট্রেন। ইতোমধ্যেই দুর্গত এলাকাগুলিতে উদ্ধার কাজ শুরু হয়েছে। উদ্ধার কাজে নামানো হয়েছে সেনাবাহিনীকেও। এই অবস্থায় তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দেখা করে জাতীয় বিপর্যয় ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে উপযুক্ত ত্রাণ পাঠানোর অনুরোধ জানিয়েছেন স্ট্যালিন।
মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য গত একশ বছরে রাজ্যটির দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলিতে বৃষ্টিপাতের কারণে এমন ক্ষয়ক্ষতি দেখা যায়নি। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে রাজ্যের আট মন্ত্রী এবং দশজন আইএএস কর্মকর্তাকে ত্রাণ এবং উদ্ধারের কাজে পাঠানো হয়েছে। অন্য এজেন্সিগুলোর সাথে রাজ্য দুর্যোগ মোকাবিলা দলের ১৫টি টিম এবং জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা দলের ১০টি টিম দুর্গত এলাকায় কাজ করছে। এখনো পর্যন্ত প্রায় সাড়ে বারো হাজারের বেশি মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে এবং তাদেরকে ১৪৩টি ত্রাণ শিবিরে রাখা হয়েছে। বন্যা কবলিত এলাকায় হেলিকপ্টারের মাধ্যমে খাবার বিতরণ চলছে। গোটা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে কেন্দ্রীয় সরকার।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৫ ঘণ্টা, ২০ ডিসেম্বর, ২০২৩
ভিএস/এসএএইচ