ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৪ পৌষ ১৪৩১, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৬ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ভারত

কলকাতায় বাড়ছে বাংলাদেশি, নিরাপত্তা জোরদার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০২৪
কলকাতায় বাড়ছে বাংলাদেশি, নিরাপত্তা জোরদার কলকাতায় বাড়ছে বাংলাদেশি পর্যটক

কলকাতা: আসন্ন বড়দিন এবং ইংরেজি নববর্ষের পহেলা জানুয়ারির অনুষ্ঠানকে ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও বাড়িয়েছে কলকাতা পুলিশ।  

পুলিশের সদর দফতর লালবাজার তরফে জানানো হয়েছে, প্রতিবেশী বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে বড়দিন এবং বর্ষবরণে কলকাতার আইনশৃঙ্খলায় যাতে প্রভাব না পড়ে সেই লক্ষ্যেই শহরজুড়ে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।

চলমান পরিস্থিতির দিকে নজর রেখে মারক্যুই স্ট্রিট, পার্ক স্ট্রিটসহ গোটা শহরের নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে। নজর রাখা হচ্ছে পার্ক স্ট্রিট সংলগ্ন হোটেলগুলির ওপরেও। এই সময় বাংলাদেশিসহ বহু বিদেশির আনাগোনা বাড়ে।  

তথ্য মতে, ঈদের আগে কলকাতা নিউমার্কেট, বাংলাদেশিদের কেনাকাটার জন্য ভিড় হলেও এই সময় শ্রেফ ভ্রমণের উদ্দেশ্য আসেন বাংলাদেশিরা। ভারত ভিসা না দেওয়ায় সেভাবে আসতে না পারলেও বর্তমানে বাঙালিদের আসা-যাওয়ার সংখ্যাটা আগের থেকে অনেকটাই বেড়েছে। জানা যাচ্ছে, যারা আসছেন, তাদের সবারই পুরোনো ভিসা।

পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন সূত্রে জানা যাচ্ছে, গত ৫ দিনে শুধু ওই পোর্ট দিয়ে প্রতিদিন গড়ে দেড় হাজারের মতো বাংলাদেশি আসছেন। কয়েকদিন আগে যে সংখ্যাটা ছিল দেড়শ থেকে আড়াইশোর মতো। পাশাপাশি বড়দিন উপলক্ষে পশ্চিমা দেশগুলো থেকে ভিড় বাড়াচ্ছেন খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীরা। ফলে সকলের কথা ভেবে শহরের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে পুলিশের তরফে নিরাপত্তা আরও জোড়দার করা হয়েছে।

গল্পের ছলে এক পুলিশ কর্মী জানিয়েছেন, বাংলাদেশে আমারও আত্মীয় থাকে। তারা জানাচ্ছেন, সেখানে সব শান্ত। কোথাও কিছু নেই। কিন্তু কলকাতার কিছু অতিরঞ্জিত খবর এবং সামাজিকমাধ্যম যেন উত্তেজনা একপ্রকার ছড়িয়ে রেখেছে। এমনিতে বড়দিনসহ বিভিন্ন উৎসবে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়ে থাকে। তারপরেও এবার আমাদের বাড়তি সজাগ থাকতে হচ্ছে।  

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির স্পষ্ট নির্দেশ, এখানে কোনো বিদেশির সঙ্গে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে গেলে দায়ী আমাদেরই করা হবে। তাই কোনো বেয়াদবি বরদাশত করব না।  

আর সে কারণেই বাড়তি সজাগ থাকতে হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ ইস্যু নিয়ে বর্তমানে কলকাতায় উত্তেজনা নেই বললেই চলে। তবে কিছুটা জিগির তুলে রেখেছে মিডিয়া এবং কয়েকটি সংগঠন এবং দু-একটা রাজনৈতিক দল। এর আগে বিজয় দিবসের দুপুরে বাংলাদেশ ইস্যু নিয়ে বিশাল মিছিল করে জাতীয় কংগ্রেস। ওইদিন কলকাতাস্থি বাংলাদেশ উপদূতাবাস ছুটি থাকায় পুলিশ মিশনের সামনে ঘেঁষতে দেয়নি। ওই একই দিনে হিন্দুত্ববাদী সংগঠন এসপ্ল্যানেডে বিশাল জমায়েত করে। ফলে নানা সমীকরণ মাথায় রেখে নিরাপত্তা বাড়িয়েছে পুলিশ।

এমনিতে প্রতি বছর বড়দিন উপলক্ষে পার্ক স্ট্রিটে বিপুল জমায়েত হয়। সারারাত ধরে চলে উৎসব। একই রকম জমায়েত হয় ইংরেজি নববর্ষে। এ বছরও পার্ক স্ট্রিটে তেমন জমায়েতের সম্ভাবনা রয়েছে। সেই বিপুল ভিড়ের সুযোগ নিয়ে যাতে কোনোরকম অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সেদিকে বাড়তি নজর দিচ্ছে লালবাজার।

লালবাজার সূত্রের খবর, নিরাপত্তা সংক্রান্ত কোনোরকম ঝুঁকি নেওয়া যাবে না। কলকাতায় যাতে কোনোভাবে উত্তেজনা না ছড়ায়, তা নিশ্চিত করতে চাইছে লালবাজার প্রশাসন। তাই শহরের বিভিন্ন প্রবেশপথের পাশাপাশি বিভিন্ন হোটেলগুলিতে বছর শেষের কয়েক দিন আরও বাড়তি নজরে রাখছে গোয়েন্দারা। বড়দিন এবং বর্ষবরণ ঘিরে যেহেতু পার্ক স্ট্রিট ও সংলগ্ন এলাকায় বিপুল জমায়েত হয়, তাই এই এলাকার জন্য লালবাজারের বাড়তি সতর্কতা রয়েছে।

জানা গেছে, ইতোমধ্যেই পার্ক স্ট্রিট এবং সংলগ্ন হোটেলগুলিতে কে বা কারা রুম বুক করেছেন, সেই তথ্য সংগ্রহ করেছে পুলিশ। তথ্য খতিয়ে দেখতে থানার নির্দিষ্ট কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি হোটেলে বা অতিথিশালাগুলোয় অনলাইন বা অফলাইনে ওই কয়দিনে কত বুকিং হয়েছে, কোথা থেকে আসছেন; সে সমস্ত তথ্য পুলিশকে দেওয়ার কথাও জানানো হয়েছে।

লালবাজারের এক কর্মকর্তা বলেছেন, বর্ষবরণের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে আমাদের বিশেষ পরিকল্পনা রয়েছে। বাহিনীরা বিভিন্ন বিভাগ একত্রে কাজ করবে। কোনোরকম ঝুঁকি ছাড়া নির্বিঘ্নে যাতে উৎসব শেষ করা যায়, তার সমস্ত বন্দোবস্ত থাকবে।  

এদিকে, বৃহস্পতিবার থেকে বড়দিন ক্রিসমাস উৎসবের সূচনা করলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।

বাংলাদেশ সময়: ২০২৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০২৪
ভিএস/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

ভারত এর সর্বশেষ