এতো দিন এই বিশাল কর্মযজ্ঞের জন্য যে পরিকাঠামো দরকার, তা এ রাজ্যে ছিল না। তাই রাজ্য মেদেনীপুর জেলায় সামুদ্রিক অঞ্চল, দীঘায় প্রায় পাঁচ কোটি রুপি খরচ করে আন্তর্জাতিক মানের একটি হিমঘর ইউনিট গড়তে চলেছে, যেখানে একসঙ্গে মাসের পর মাস ৪০ টন প্রক্রিয়াজাত মাছ রাখা যাবে।
এর আগে অন্ধ্রপ্রদেশ ও উড়িষ্যা রাজ্যের একাধিপত্য ছিলো গোটা ভারতসহ বিদেশে মাছ রপ্তানিতে। এবার সেই একাধিপত্য ভেঙ্গে দেশ ও বিদেশের বাজার ধরাই রাজ্য সরকারের মুল লক্ষ্য। এতে মুনাফার মুখও দেখতে পাবে রাজ্য মৎস্য উন্নয়ন নিগম। কারণ গোটা পরিকল্পনাটাই রূপায়িত হবে তাদের হাত ধরে।
দেশে বিশেষ করে উপকূলবর্তী রাজ্যগুলো মূলত মাছ উৎপাদনে এগিয়ে। সেই তালিকায় রয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশ, উড়িষ্যা, তামিলনাড়ু ও গুজরাট। পশ্চিমবঙ্গেও ভালো মাছ উৎপাদন হয়, তবে তাদের মতো লরি ভরে ভিনরাজ্যে পাঠানো বা প্রক্রিয়াজাত করে বিদেশে রপ্তানি করার অত্যাধুনিক পরিকাঠামো এতদিন এরাজ্যে ছিল না। সেই লক্ষ্য পূরণে দীঘায় রাজ্য মৎস্য উন্নয়ন নিগমের হাত ধরে সরকার একটি ফিস প্রসেসিং ইউনিট গড়ে তুলতে চলেছে।
নিগমের কর্মকর্তা সৌম্যজিৎ দাস বলেন, দীঘায় প্রায় পাঁচ কোটি রুপি খরচ করে একটি ইউনিট গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়েছে। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আশা করা যায়, নভেম্বরের শেষে অথবা ডিসেম্বরের গোড়ায় কাজ শুরু হয়ে যাবে। হিমঘরসহ গোটা প্রক্রিয়াজাতকরণ ইউনিট গড়তে প্রায় এক বছর সময় লাগবে। সেক্ষেত্রে ২০১৯ সালের প্রথম থেকেই সেই মাছকে বাজারজাত করতে পারবে নিগম।
প্রসঙ্গত, কলকাতায় বেসরকারিভাবে শুধু চিংড়ির ক্ষেত্রে এরকম দুটি ছোট প্রসেসিং ইউনিট আছে। কিন্তু সরকারি উদ্যোগে চল্লিশ টন প্রক্রিয়াজাত মাছ রাখার এতবড় ইউনিট এই প্রথম তৈরি করা হচ্ছে।
বিদেশে প্যাকেটজাত প্রসেসড মাছ খাওয়ার প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য, এমনকি মার্কিন মুলুকেও মাছ রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করছে বাংলাদেশ, থাইল্যান্ড।
ভারতে উড়িষ্যা, অন্ধ্রপ্রদেশ, গুজরাটের মত রাজ্যগুলো অনেক আগেই সেই পথে হাঁটা শুরু করেছে। এবার দেশের বাজার ধরার পর ভবিষ্যতে একই পথের পথিক হতে চায় পশ্চিমবঙ্গ। আসল লক্ষ্য, মাছ খাইয়ে মুনাফা অর্জন।
বাংলাদেশ সময়: ১১৫০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০১৭
ভিএস/জেডএম