ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ভারত

থার্ড ফ্রন্ট না কংগ্রেস, পাল্লা বাড়ছে মমতার 

ভাস্কর সরদার, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৫ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০১৮
থার্ড ফ্রন্ট না কংগ্রেস, পাল্লা বাড়ছে মমতার  মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত

কলকাতা: রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় এই মুহূর্তে থার্ড ফ্রন্ট নিয়ে ব্যস্ত। যার নাম দেওয়া হয়েছে ফেডারেল ফ্রন্ট। তাই কংগ্রেসের নেতৃত্বে গেরুয়া শিবিরকে রুখতে বিরোধী জোট নিয়ে কিছুই ভাবতে চান না। 

তবে একেবারে প্রস্তাব ফেলে দিতেও চান না তিনি। এই ইস্যু নিয়ে বুধবার (২৫ জুলাই) সন্ধ্যায় রাজ্যের প্রশাসনিক ভবন ‘নবান্ন’ থেকে বের হওয়ার সময় সাংবাদিকরা বলেন, কংগ্রেস জোটে আপনাকে (মমতা) প্রধানমন্ত্রী হিসেবে চাইছে।

এ ব্যাপারে আপনার বক্তব্য কী? 

জবাবে তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, ‘আভি নেহি (এখনই নয়)। ’ অর্থাৎ বিষয়টিকে পুরোপুরি উড়িয়ে দিতেও চাইছেন না আবার কিছু বলতেও চান না তিনি।  

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে মমতায় আপত্তি নেই কংগ্রেস সভঅপতি রাহুল গান্ধীর। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে মমতার এ বিষয়ে স্পষ্ট উত্তর না দেওয়ায় রাজনৈতিক মহলে যথেষ্ট তাৎপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।  

এর কারণ ভারতের আঞ্চলিক রাজনৈতিক শক্তিগুলো অর্থাৎ কংগ্রেস ও বিজেপি ছাড়া অন্যদলগুলো মমতার আহ্বানে যথেষ্ট সাড়া দিয়েছে এবং দিচ্ছে। সেই ফ্রন্ট এবারে ভারতের জাতীয় নির্বাচনে শক্তি লাভ করলে সেখানে মমতাই হবেন প্রধানমন্ত্রী।  

আবার কংগ্রেস চাইছে, গেরুয়া বাহিনীর (বিজেপি) বিরুদ্ধে এক জোটে লড়াইয়ে মমতা ফ্রন্ট না গড়ে কংগ্রেসের ছাতার তলায় লড়ুক এবং কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে তারা মমতাকেই প্রধানমন্ত্রী করতে ইচ্ছুক। তাই এখনই কোনো দরজা বন্ধ করতে চান না বাংলা’র দিদি মমতা।  

অন্যদিকে জাতীয় নির্বাচনের আগে নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে কংগ্রেস এখনও সেভাবে থাবা বসাতে পারেনি। তাই কংগ্রেস এখন চাইছে প্রত্যক্ষভাবে সক্রিয় ভূমিকায় সামনে আসুক প্রিয়াঙ্কা গান্ধী।

তাতে নাকি খোদ রাহুল গান্ধীরও আপত্তি নেই। যেমন আপত্তি নেই জোটের মুখ হিসেবে মমতাকে মেনে নিতে। বলাই বাহুল্য,  বিরোধী জোটকে এক করতে এখনও পর্যন্ত সফল হতে পারেনি কংগ্রেস।  

কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব আভাস দিচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নিয়ে রাহুল গান্ধী অনড় নন। প্রয়োজনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বও মেনে নেবে কংগ্রেস। এই নতুন পরিপ্রেক্ষিত উপস্থিত হওয়ার কারণ বিজেপি বিরোধী অনেক দলই রাহুলকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মানতে চাইছেন না।  

যেমন লালু প্রসাদ যাদবের ছেলে তেজস্বী যাদব এরই মধ্যে বলে দিয়েছেন,  রাহুল একা নন। ২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য যোগ্য আরো অনেকে আছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মায়াবতী, শারদ পাওয়ার, চন্দ্রবাবু নাইডু সহ আরও কয়েকজন।  

কংগ্রেস সূত্র বলছে, আগামীতে নারী প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের আপত্তি নেই। আর এ ক্ষেত্রে প্রথম পছন্দে থাকছেন মমতা।  

এদিকে মমতাকে কংগ্রেস প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে সমর্থন করতে পারে-এমন খবরে রাজনীতিতে শুরু হয়েছে তুমুল আলোচনা।  

তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র ডেরেক ও’ব্রায়ান বলেন, কংগ্রেস কী বললো তা নিয়ে আমাদের কোনো মাথা ব্যথা নেই। আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যে প্রকৃত অর্থে জননেত্রী। তা গোটা দেশ জানে। দুবারের সফল মুখ্যমন্ত্রী, দুবারের ভারেতের রেলমন্ত্রী, সাতবারের এমপি, এরকম লড়াকু নারী দ্বিতীয় কোনো নিদর্শন গোটা দেশে এই মুহূর্তে আর কী আছে? 

রাজ্য কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, রাহুল গান্ধী নারী প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে মমতার নাম বলেছেন বলে প্রচার হচ্ছে। আমার কাছে খবর, তিনি নারী প্রধানমন্ত্রী প্রার্থীর কথা বলেছেন। আর সেই নারী কি একা‌ই মমতা? আর কেউ নেই? সোনিয়া গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী-এমনকি মায়াবতীও রয়েছেন।  

‘তবে রাজ্য কংগ্রেস সভাপতি যাই বলুক না কেন, দিল্লি কংগ্রেস চাইছেন, সময় নষ্ট না করে এখন থেকেই প্রচার শুরু হয়ে যাক। দিল্লির অঙ্ক, রাহুল-প্রিয়াঙ্কা যদি কংগ্রেসকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করার দিকে নজর দেন এবং জাতীয় নির্বাচনে মমতা হন জোটের প্রচারের মুখ তাহলে আখিরে কংগ্রেসমুখী ভোট ব্যাংক বাড়বে। বদলে যাবে জাতীয় নির্বাচনের ফল,’ এমনটাই মনে করেন তিনি।  

বাংলাদেশ সময়: ২১৫৯ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০১৮
ভিএস/এমএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।