ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ভারত

সাবেক রাষ্ট্রপতির স্বজনরাও নেই আসামের নাগরিকপঞ্জীতে!

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১১ ঘণ্টা, আগস্ট ১, ২০১৮
সাবেক রাষ্ট্রপতির স্বজনরাও নেই আসামের নাগরিকপঞ্জীতে! ফখরউদ্দিন আলী আহমেদ

কলকাতা: বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব সীমান্তবর্তী ভারতের আসামে রাজ্য সরকারের প্রকাশিত ‘জাতীয় নাগরিক পঞ্জীকরণ’ বা ‘নাগরিক’ তালিকার চূড়ান্ত খসড়া থেকে ৪০ লাখ বাসিন্দার নাম বাদ পড়ায় তুমুল সমালোচনায় শুরু হয়েছে। এরমধ্যে নতুন বিতর্কে পড়েছে রাজ্য সরকার। সংবাদমাধ্যম বলছে, এই আলোচিত তালিকা থেকে বাদ পড়ে গেছে ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি ফখরউদ্দিন আলী আহমেদের স্বজনদের নামই। 

১৯৭৪ সাল থেকে ১৯৭৭ সালে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ অধিকর্তা ছিলেন ফখরুদ্দিন আলী আহমেদ। ভারতের এ পঞ্চম রাষ্ট্রপতির পরিবার বর্তমানে আসামের কামরূপ জেলার রঙ্গিয়ার বাসিন্দা।


 
গত ৩০ জুলাই এই তালিকা প্রকাশের পর ফখরউদ্দিন আলী আহমেদের ভাতিজা জিয়াউদ্দিন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, নাগরিকপঞ্জী প্রকাশ হওয়ার পর দেখা গেছে, আমাদের পরিবারের কোনো সদস্যের নামই সেখানে নেই। এমনকি আমার বাবা একরামুদ্দিন আলী আহমেদের নামও তালিকার বাইরে।  
 
আসামের এই তালিকা নিয়ে বরাবরই রুষ্ট পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। দেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি ফখরুদ্দিন আলী আহমেদের পরিবারের সদস্যের নাম সেখানে নেই জানতেই মমতা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, এ তো চমকে যাওয়ার মতো বিষয়। এসব মেনে নেওয়া যায় না-কি?

কেন্দ্রে ও আসামে ক্ষমতাসীন বিজেপির উদ্দেশে মমতা বলেন, আসামের বাসিন্দাদের ভোট নেওয়ার সময় কোনো আপত্তি ছিল না। এখন ৪০ লাখ মানুষকে ‘বিদেশি’ তকমা দেওয়া হচ্ছে? এখনই যদি সবাই মিলে প্রতিবাদ গড়ে না তুলি তাহলে আগামী দিনে কিন্তু সবার জন্য বড় বিপদ অপেক্ষা করে আছে।
 
এদিকে নাগরিকপঞ্জী প্রসঙ্গে সংসদে বিবৃতি দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং। তিনি জানিয়েছেন, নাগরিকপঞ্জীর খসড়া তালিকা থেকে যাদের নাম বাদ গিয়েছে, তাদের সামনে নিজেদের নাগরিকত্ব প্রমাণের সুযোগ রয়েছে। আপাতত সেই আশায়ই থাকতে হবে ৪০ লাখ মানুষের পাশাপাশি সাবেক রাষ্ট্রপতি ফখরউদ্দিন আলী আহমেদের স্বজনদেরও।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, রাজ্যের মোট ৩ কোটি ২৯ লাখ বাসিন্দার মধ্যে নাগরিকপঞ্জীতে নাম উঠেছে ২ কোটি ৯০ লাখ মানুষের। বাদ পড়ে গেছেন বাকিরা। এর আগে গত ডিসেম্বরে প্রকাশিত এনআরসির প্রথম তালিকায় জায়গা হয়েছিল মাত্র ১ কোটি ৯০ লাখ বাসিন্দার। বাদ পড়ে কয়েক পুরুষ ধরে আসামে বসবাসকারী বহু বাঙালির নাম। নতুন তালিকায়ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু ও বাঙালি-অধ্যুষিত এলাকার লোকদের নাম বাদ গেছে বেশি।

ভারতের প্রথম কোনো রাজ্য হিসেবে নাগরিকদের এমন কোনো তালিকা করলো আসাম। রাজ্যের কর্মকর্তারা বিশেষ করে কট্টরপন্থিরা মনে করেন, প্রতিবেশী বাংলাদেশ থেকে বিপুলসংখ্যক বাসিন্দা আসামে ঢুকে ভোট প্রক্রিয়ায় অংশ নিচ্ছেন এবং রাজ্যের জনতাত্ত্বিক চিত্র বদলে দিচ্ছেন।

এই তালিকায় যাদের জায়গা হয়নি, তারা আসামিজ পরিচিতি পাবেন না। এদেরকে অনেক আগে থেকেই ‘অবৈধ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী’ বিবেচনা করে আসছে রাজ্যের কট্টরপন্থি অংশ।

বাংলাদেশ সময়: ২২০৫ ঘণ্টা, আগস্ট ০১, ২০১৮
ভিএস/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।