ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ভারত

সুইসাইডাল গেম মোমো এবার পশ্চিমবঙ্গে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬১৪ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০১৮
সুইসাইডাল গেম মোমো এবার পশ্চিমবঙ্গে ম্যাসেজ পাঠানো হয়েছে হোয়াটসঅ্যাপে

কলকাতা: ব্লু হোয়েলের মতোই আরেকটি সুইসাইডাল গেম আতঙ্ক ছড়াচ্ছে পশ্চিমবঙ্গে। ‘মোমো’ নামের এই ঘাতক গেমটি ছড়াচ্ছে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে। আর্জেন্টিনায় এক কিশোরীর আত্মহত্যার পর সামনে এসেছে বিষয়টি। 

কিন্তু গেমটি ভারত তথা পশ্চিমবঙ্গে ঢুকেছে কিনা বাংলানিউজের প্রশ্নে কলকাতা পুলিশের এক কর্মকর্তা সুমন ঘরাই গত ৬ আগস্ট জানিয়েছিলেন, এখনই উত্তর দেওয়া কঠিন। তবে সতর্ক থাকা উচিত।

সন্দেহজনক কিছু চোখে পড়লে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশে জানানো প্রয়োজন।
 
এবার মোমোর সেই উদ্বেগ ছড়ালো পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলাতে। জেলার পাণ্ডাপাড়ার বাসিন্দা এক কলেজ ছাত্রীর হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে এমনই মারণ খেলার টোপ আসতে শুরু করে। ছাত্রীটি সেই ফাঁদে পা না দিয়ে ঘটনার কথা পুলিশের সাইবার ক্রাইম শাখায় জানিয়েছেন।  

ছাত্রীটি বলেন, সোমবার (২০ আগস্ট) রাতে আমার সঙ্গে মায়ের মনোমালিন্য হয়। সে সময় আমি হোয়াটসঅ্যাপ স্ট্যাটাসে দিয়েছিলাম ‘আমি মরে যাব’। তার কিছুক্ষণ পরে অচেনা নম্বর থেকে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ আসে আমি মোমো। আমরা কি গেম খেলতে পারি? সঙ্গে সঙ্গে দাদাকে ফোন করি। দাদা আমাকে নম্বরটা ব্লক করতে বলে। সেইমতো নম্বর ব্লক করে মেসেজটা স্ক্রিন শট করে হোয়াটসঅ্যাপে অনেককে শেয়ার করি ও ফেসবুকেও দিই। নম্বরটা অদ্ভূত। আমি চাই তাড়াতাড়ি এর তদন্ত করা হোক। আজ আমার মোবাইলে মেসেজ এসেছে। এরপর হয়তো অন্য কারও মোবাইলে তা আসবে। এতে কেউ বিপদেও পড়তে পারে। আমি বিষয়টা জানতাম। বিপদটা বুঝেছি বলে দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছি। কেউ না বুঝে এ ধরনের মারণ খেলার ফাঁদে পড়তে পারে।
 
জলপাইগুড়ির কোতোয়ালি থানার সে সময় দায়িত্বপ্রাপ্ত আইসি বিশ্বাশ্রয় সরকার বলেন, অচেনা নম্বর থেকে মোমো গেমের নামে ছাত্রীটিকে প্রলোভন দেখানো হয়েছে। এ বিষয়ে আমাদের কাছে অভিযোগ এসেছে। সাইবার ক্রাইম সেলের মাধ্যমে সেটা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। প্রাথমিক তদন্তে যেটুকু জেনেছি, এটা সাইবার ক্রাইম। এ ধরনের লিঙ্ক যাতে কেউ না দেখে ও তার ফাঁদে না পড়ে, সেই সচেতনতা দরকার। ওই ছাত্রী ঘটনাটি আমাদের জানিয়ে ভালো কাজ করেছে। আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।
 
ব্লু হোয়েল এক সময় থাবা বসিয়েছিল মূলত স্কুল-কলেজ পডুয়াদের মধ্যে। এবারে পোশাক বদলে মোমো নামে মারণ খেলা অল্প বয়সিদের টার্গেট করতে শুরু করেছে। এ খবর ছড়াতেই জলপাইগুড়িতে মোমো নিয়ে স্কুল-কলেজ পডুয়া ও তাদের অভিভাবকদের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়েছে।
 
শুধু জলপাইগুড়ি নয় শিলিগুড়ির নানা প্রান্তেও মারণ খেলা মোমো শাখা বিস্তার করতে শুরু করেছে। শিলিগুড়ির কয়েকজন শিক্ষার্থীর মোবাইলে মোমো গেমের অফার এসেছিল বলে জানা গেছে। সেখানে গেম খেলার নামে নানা টাস্ক দেওয়া হয়েছে। বিপদ বুঝে যথাসময়েই তারা ওই নম্বর ব্লক করে দিয়েছে এবং অভিভাবকরা পুলিশকেও জানিয়েছেন।
 
পুলিশ জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের মানুষ আগে থেকে এ বিষযে সচেতন। তবুও আমরা অভিযোগগুলো গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখার পাশাপাশি এ নিয়ে আরও সচেতনতার প্রচারে নামার কথাও ভাবছি।

বাংলাদেশ সময়: ১২১২ ঘণ্টা, ২৩ আগস্ট, ২০১৮
ভিএস/আরআর  

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।