এর একদিন আগে, অর্থাৎ রোববার (১৫ ডিসেম্বর) ভারতীয় সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় দপ্তর কলকাতার ফোর্ট উইলিয়ামের এক্কা অ্যালবার্ট অডিটোরিয়াম প্রাঙ্গণে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকালীন, এর পূর্ববর্তী ও পরবর্তী ঘটনাগুলো নিয়ে এক চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। যেটির নাম ‘ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী বন্ধন’।
প্রদর্শনীটি সাজানো হয়েছে কয়েকটি বিভাগে। প্রদর্শনীর প্রথমেই স্থান পেয়েছে ‘দ্য হিস্টোরিক মোমেন্ট অব সারেন্ডার সেরেমনি ডিসেম্বর ১৯৭১’। সেখানে দেখানো হয়েছে পাকিস্তান সেনা একে নিয়াজী ও ভারতীয় সেনা জগজিত সিং অরোরার মুহূর্তগুলো।
এছাড়াও আরও কয়েকটি ভাগে ভাগ করা চিত্র প্রদর্শনীটি। সেখানে স্থান পেয়েছে পাকিস্তানী সেনা ও তাদের অস্ত্র সারেন্ডারের চিত্র।
এরসঙ্গে পরপর কয়েকটি বিভাগে দেখানো হয়েছে ‘কমান্ডার ইন্টারেক্টিভ উইথ ট্রুপস’। যেখানে স্থান পেয়েছে ট্রেনিংকালে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে ভারতীয় সেনাবাহিনীর নানা কথাবার্তা, বৈঠকে ও যুদ্ধের নানা প্ল্যানিংয়ের আদান-প্রদানের বিষয়গুলো।
পাশাপাশি ছিল ভারতীয় সেনাবাহিনীর আয়োজনে জয় বাংলা নামে একটি বিভাগ। সেখানে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণসহ ইন্দিরা গান্ধী ও বঙ্গবন্ধুর নানা মুহূর্তের ছবি দেখানো হয়েছে। একইসঙ্গে দেখানো হয়েছে মুক্তিযুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর তৎপরতার ছবিগুলোও।
এছাড়াও ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ‘ক্যাপচার অফ ঢাকা’, ‘ক্যাপচার অফ বগুড়া’, ‘ব্যাটেল অফ টাঙ্গাইল’, ‘ব্যাটেল অব হিলি’, ‘ব্যাটেল অব যশোর’ ও ‘ব্যাটেল অব দর্শনা’ শিরোনামে মুক্তিযুদ্ধকালীন নানা মুহূর্তের ছবি। ছিল তৎকালীন (১৯৭১) ভারতীয় বিভিন্ন পত্রিকার কাটিংও। যারমধ্যে উল্লেখযোগ্য- দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, দ্য হিন্দু দ্য স্টেটসম্যান, টাইমস অব ইন্ডিয়া।
প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে বঙ্গবন্ধুর নামে প্রকাশিত বিভিন্ন বইয়ের হিন্দি ও ইংরেজি ভার্শন এবং বাংলাদেশ-পাকিস্তান ও ভারতের যুদ্ধের মুহূর্তে ঐতিহাসিক ঘটনা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বই।
এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক নৌমন্ত্রী শাহজান খানসহ তার নেতৃত্বে ৩০ জন সস্ত্রীক মুক্তিযোদ্ধা, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ছয় কর্মকর্তা, তাদের স্ত্রী ও ভারতীয় সেনারা। সব মিলিয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীর অভ্যর্থনায় ৭২ জন বাংলাদেশি এসেছেন কলকাতার ফোর্ট উইলিয়ামে।
চিত্র প্রদর্শনীর পর সাবেক মন্ত্রীসহ মুক্তিযোদ্ধারা এবং দুই দেশের সেনাবাহিনী এক আলেচনায় অংশগ্রণ করেন। এরপর স্মারক আদান-প্রদান হয় দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে। ভারতীয় সেনার পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সেনা মো. জুবের ও সাবেকমন্ত্রী শাজাহান খানের হাতে স্মারক তুলে দেওয়া হয়। সবশেষে দুই দেশের জাতীয় সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে শেষ হয় অনুষ্ঠান।
এর আগে শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) ভারতীয় সেনার পক্ষ থেকে প্রিন্সেপ ঘাটে মিলিটারি ব্যান্ড কনসার্ট অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ভারতীয় সেনাবাহিনীর আতিথেয়তায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশি অতিথিরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৯
ভিএস/এসএ