কলকাতা: ভাইয়ের সামনে রাখা এক থালা মিষ্টি। ঠিক তার পাশেই রাখা ধান-দুর্বা-দই-চন্দনের থালা।
ধর্মীয় রীতি নয়, ভাইয়ের মঙ্গল কামনায়, বোনদের সামাজিক এই অনুষ্ঠানের নামই ‘ভ্রাতৃদ্বিতীয়া’। বাংলায় যার পোশাকি নাম ভাইফোঁটা।
শনিবার (৬ নভেম্বর) যা বাংলার ঘরে ঘরে উদযাপিত হচ্ছে। কার্তিক মাসের শুক্ল দ্বিতীয় তিথিতে এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।
পশ্চিম ভারতে এই রীতি ‘ভাইদুজ’ নামে পরিচিত। মহারাষ্ট্র, গোয়া ও কর্ণাটকে ভাইফোঁটাকে বলা হয় ‘ভাইবিজ’। ভাইবিজ একটি বর্ণময় অনুষ্ঠান। মহারাষ্ট্রে প্রতিটা মেয়েকে ভাইবিজ উদযাপন করা অবশ্যকর্তব্য। যেসব মেয়েদের ভাই নেই, তারা চাঁদ অর্থাৎ চন্দ্র দেবতাকে ভাই মনে করে ভাইবিজ উদযাপন করে থাকেন। আবার পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিংসহ নেপালে এই উৎসবটি ‘ভাইটিকা’ নামে পরিচিত।
সনাতন পুরাণ অনুযায়ী, বোন সুভদ্রা প্রথম শ্রী কৃষ্ণকের কপালে ফোঁটা দিয়ে তাকে মিষ্টি খেতে দিয়েছিলেন। সেই রীতি মেনেই, মৃত্যু দেবতা যমের নজর থেকে রক্ষা করতে, ভাইয়ের মঙ্গল কামনায় এই উৎসবের প্রচলন।
ভাইফোঁটার দিন বোনেরা তাদের ভাইদের কপালে তিনবার দই-চন্দনের ফোঁটা দেয় আর বলতে থাকেন-ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা/যমের দুয়ারে পড়ল কাঁটা। /যমুনা দেয় যমকে ফোঁটা/আমি দিই আমার ভাইকে ফোঁটা! অপরদিকে সারাজীবন আগলে রাখার ও রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি দেন ভাইরা।
এক মধুর সম্পর্ক ভাই-বোনের সম্পর্ক। বছরভর খুনসুটি যতই থাক না কেন, ভাইদের শুভ কামনার জন্য এই বিশেষ দিনে নানা আয়োজন করে থাকে বোনরা। এভাবে সামাজিক এই অনুষ্ঠানে ভ্রাতৃদ্বিতীয়া অর্থাৎ ভাইফোঁটা দিনটি উদযাপিত হয়ে থাকে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৬, ২০২১
ভিএস/এএটি