কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গে করোনা দৌড় অব্যাহত রেখেছে। রাজ্যটির স্বাস্থ্য দফতরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার কবলে পড়েছেন ১৮ হাজার ২১৩ জন, তাতে মারা গেছেন ১৮ জন।
পশ্চিমবঙ্গে করোনা আক্রান্তের শীর্ষে রয়েছে কলকাতা। কলকাতায় একদিনে শনাক্ত ৭ হাজার ৪৮৪ জন, মৃত্যু ৭ জনের। তবে শুধু রাজ্যটির শীর্ষে নয়, ভারতের নিরিখে শহরের তালিকায় রয়েছে শীর্ষে রয়েছে কলকাতা। এরপরই ২য় ও ৩য় স্থানে রয়েছে কলকাতা লাগোয়া দুই ২৪ পরগনাই। একদিনে উত্তর ২৪ পরগনায় আক্রান্ত ৩,১১৮ জন এবং ৭০৪ জন আক্রান্ত দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। অপরদিকে, ভারতের স্বাস্থ্যমন্ত্রকের দেওয়া শুক্রবারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘন্টায় দেশটিতে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ১৭ হাজার ১০০ জন।
এ পরিস্থিতিতে কলকাতায় বড়দিন এবং বর্ষবরণের পর পশ্চিমবঙ্গে ১৪ জানুয়ারি হতে চলছে গঙ্গাসাগর মেলা। রাজ্য সরকারকে শর্ত সাপেক্ষে গঙ্গাসাগর মেলার অনুমতি দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, শর্ত কতটা মানা হবে তা সময় বলবে। কারণ, গতবছর ভারতের হরিদ্বারে কুম্ভমেলা করোনা সুপারস্প্রেডারে পরিণত হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গের গঙ্গাসাগর মেলায় ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিবছর ১৮ থেকে ২০ লাখ পুণ্যার্থী আসেন। ২০২১ সালে কোভিড পরিস্থিতিতেও ৮ লাখ পুণ্যার্থী এসেছিলেন। রাজ্য সরকারও এ বছর মেলায় ৫ লাখ পূণ্যার্থী সাগরে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু শেষ সময়ে পুণ্যার্থীর ঢল নামলে কীভাবে সামাল দেবে তাই এখন আশঙ্কার বিষয়।
সিপিআইএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গে এখন চলছে করোনা বিধিনিষেধ। এই অবস্থায় রাজ্যে সংক্রমণ ঠেকাতে ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ৫০ জনের বেশি জমায়েত করতে পারবে না বলে নির্দেশিকা জারি করেছে মমতা প্রশাসন। গঙ্গা সাগরমেলাও তো ধর্মীয় অনুষ্ঠানে। তা হলে কি করে সেখানে সেখানে ৫ লাখ মানুষের জমায়েত সম্ভব!
২০২৪ এর লোকসভা ভোট পাখির চোখ করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবারের অন্যতম প্রধানমন্ত্রী দাবিদার তিনি। ফলে ভারতের সব রাজ্যে বিধানসভা ভোটের জন্য ময়দানে নেমে পড়েছে মমতার দল। সামনেই গোয়া রাজ্যে বিধানসভা ভোট। সে কারণেই কলকাতায় বড়দিনে অনুমতি দিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল। একইভাবে আছে উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা ভোট। আর গঙ্গাসাগর মেলায় ওই রাজ্যটি থেকে আসে ৬৫ ভাগ পুণ্যার্থী। সে কারণেই করোনার মধ্যে গঙ্গাসাগর মেলার সহযোগিতা করছে প্রশাসন! এমনটাই মত বিরোধীদের।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৮, ২০২২
ভিএস/এসআইএস