কলকাতা: ভোজন রসিক বাঙালির পাতে কাঁকড়া-চিংড়ির ভবিষ্যৎ অন্ধকার হচ্ছে। দ্রুতই চ্যালেঞ্জর মুখে এর সংখ্যা।
সুমিত মণ্ডল জানান, বায়ুদূষণে তৈরি হচ্ছে কার্বন ডাই-অক্সাইড। পানির সঙ্গে মিশে তা তৈরি করে কার্বনিক অ্যাসিড। বৃষ্টি পানির সঙ্গে অ্যাসিড হিসেবে তা নেমে এসেই ক্ষতির মুখে ফেলছে খোলসযুক্ত এ প্রাণীগুলোকে। এ গবেষণার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবরেটরিতে তৈরি হয়েছিল কৃত্রিম প্রকৃতি।
এ পদ্ধতি অস্ট্রেলিয়া থেকে শিখে এসেছিলেন সুমিত। তারপর সুন্দরবনের দূষণমুক্ত অঞ্চল থেকে ধরে আনা হয় বেশ কিছু মাড ক্র্যাব প্রজাতির কাঁকড়া। সেগুলোকে কৃত্রিম দূষিত পানির মধ্যে রেখে চালানো হয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা। দেখা গেছে পানির অম্লতা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে সেগুলোর খোলস পাতলা হয়ে যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, এদের বৃদ্ধিও হ্রাস পাচ্ছে।
গবেষকরা বলছেন, এটা দুভাবে ক্ষতি করছে। খোলসযুক্ত এ প্রাণীগুলোর আত্মরক্ষার প্রধান সহায় খোলস। সেটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে সমুদ্রের বড় মাছ সহজেই এগুলোর খোলস ভেঙে খেয়ে ফেলতে পারবে। অন্যদিকে উপকূল অঞ্চলের মাছ চাষেও বড় প্রভাব ফেলছে এ অম্লতা। পানির অ্যাসিডিটি বেড়ে যাওয়ার কারণে গলদা, বাগদা বা কাঁকড়ার বৃদ্ধি থমকে যাচ্ছে।
তারা বলছেন, এ ধরনের প্রাণীগুলোর দাম এদের আকার-আয়তনের ওপর নির্ভর করে। সমুদ্রের পানির ওপর ভরসা করে যে ভেড়িগুলো চলে, সেগুলো প্রবল ক্ষতির মুখে পড়তে চলেছে। কারণ সমুদ্র ও মহাসমুদ্রের বর্তমান পিএইচ ফ্যাক্টর আটের ওপরে। তবে তা দ্রুত হারে তা কমছে। অর্থাৎ পানির ক্ষারীয় ভাগ কমে অম্লতা বাড়ছে। এর ফলে কয়েক বছরের মধ্যে সমুদ্রে আর কোনও প্রবাল অবশিষ্ট থাকবে না।
সুমিত মণ্ডল জানিয়েছেন, যেসব উপকূলের কাছে বড় নগরী রয়েছে, সেখানে সমস্যা আরও বেশি। কারণ সেখানে দূষণের মাত্রা বেশি। পানিতে অম্লতা বৃদ্ধির সঙ্গে গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মতো কাজ করছে মাছ ধরার ট্রলারের ডিজেল। ফলে এ প্রজাতির প্রাণীগুলোর বিপদ অনেক গভীরে।
বাংলাদেশ সময়: ০১২৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৬, ২০২২
ভিএস/আরবি