ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

বিভাগীয় বিপিও সম্মেলন শুরু মঙ্গলবার

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২২ ঘণ্টা, মে ২২, ২০২৩
বিভাগীয় বিপিও সম্মেলন শুরু মঙ্গলবার

ঢাকা: শুধু রাজধানী শহরেই নয়, এবারই প্রথমবারের মতো ‘বিপিও সামিট বাংলাদেশ ২০২৩’ আয়োজিত হচ্ছে বিভাগীয় পর্যায়ে। আগামী মঙ্গলবার (২৩ মে) রাজশাহী বিভাগে ক্যারিয়ার ক্যাম্পেইনের মধ্য দিয়ে শুরু হবে এর যাত্রা।

বিভাগীয় পর্যায়ের বর্ণাঢ্য আয়োজনের অংশ হিসেবে থাকছে ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাস অ্যাক্টিভেশন, তরুণ প্রজন্মের জন্য চাকরি মেলা, ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং সেশন, স্থানীয় অংশীজনদের নিয়ে আয়োজিত পলিসি ডিসকাশন ইত্যাদি।

সাতটি বিভাগে পর্যায়ক্রমে আলাদা আলাদাভাবে বিভাগীয় বিপিও সামিট আয়োজনের পর কেন্দ্রীয় পর্যায়ে রাজধানী ঢাকায় চূড়ান্তভাবে অনুষ্ঠিত হবে ‘কেন্দ্রীয় বিপিও সামিট’।  

রোববার (২১ মে) রাজধানীর একটি রেস্টুরেন্টে সাংবাদিক সম্মেলনে এসব কথা বলেন বাক্কোর সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ হোসেন।  

দেশের বিপিও/আউটসোর্সিং শিল্পের জন্য নিবেদিত একক ও কেন্দ্রীয় বাণিজ্য সংস্থা ‘বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কনট্যাক্ট সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্কো)’-এর উদ্যোগে ও বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত ‘বিজনেস প্রোমোশন কাউন্সিল’-এর সার্বিক সহযোগিতায় মে-জুলাই মাসব্যাপী দেশজুড়ে আয়োজিত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশের বিপিও শিল্পের এ শীর্ষ সম্মেলন ‘বিপিও সামিট বাংলাদেশ ২০২৩’।

সংবাদ সম্মেলনে বাক্কোর কার্যনির্বাহী কমিটির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘বিপিও সামিট বাংলাদেশ ২০২৩’-এর শুভ সূচনার ঘোষণা করা হয়।

তৌহিদ হোসেন বলেন, বিপিও সামিটের মধ্য দিয়ে এবারে অন্তত এক হাজার মেধাবী তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থানের উদ্যোগ নিয়েছি আমরা। থাকছে বিভাগীয় পর্যায়ে ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং সেশন ও চাকরি মেলার আয়োজন। আপনাদের মধ্য দিয়ে এ খবর দেশবাসীর কাছে, তরুণ প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমাদের উদ্দেশ্য।

বাক্কোর সাধারণ সম্পাদক বলেন, এ আয়োজনের মাধ্যমে আইসিটি শিল্প বিকাশে আইসিটি পণ্য ও সেবা প্রদর্শনী, বিপিও খাতের অর্জন/সাফল্য ও সম্ভাবনা উপস্থাপন, তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক সেমিনার ও কর্মশালা আয়োজন, ই-গভর্নেন্স, ই-কমার্স, অবকাঠামোগত উন্নয়ন ইত্যাদি ক্ষেত্রে দেশের অর্জিত সাফল্য বিশ্ববাসীসহ বাংলাদেশের জনগণের কাছে তুলে ধরা হবে।  

তিনি আরও বলেন, ২০২০ সালে বৈশ্বিক মহামারি করোনার প্রভাবের ফলে বিপিও খাতে ৭০ শতাংশ ব্যবসা কমলেও তিন বছরে সে ক্ষতি পুষিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বিপিও শিল্প খাত। ফলে নতুন উদ্যোমে এগিয়ে গিয়ে ২০২৫ সালের মধ্যে বিপিও শিল্প খাত থেকে এক বিলিয়ন মার্কিন ডলার রাজস্ব আয় হবে। নতুন করে কর্মসংস্থান হবে এক লাখ মানুষের। এ সম্মেলনের মাধ্যমে এক হাজার তরুণের কর্মসংস্থান করা হবে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তৌহিদ হোসেন বলেন, বিপিও শিল্পে বর্তমানে কর্মরত জনসংখ্যা ৭০ হাজারেরও বেশি। এদের মধ্যে ৪০ শতাংশই নারী রয়েছেন। বিপিও খাতের ৩৫ শতাংশ কাজই হয় বিদেশি বাজারের জন্য। আর ৬৫ শতাংশ হয় দেশীয় বাজারের জন্য। এ বাজারের যোগ্য কর্মী গড়ে তুলতে বিপিও খাতে সাত লাখ তরুণকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এদের বেতন ১১ হাজার টাকা দিয়ে শুরু হলেও যোগ্যতা অর্জনের পর ওই তরুণরা ৩০ শতাংশই জব সুইচ করে। ক্যারিয়ার স্যাটিসফেকশনে না থাকার কারণে এমনটা হচ্ছে।

বাক্কোর সহ-সভাপতি তানভীর ইব্রাহীম বলেন, বাংলাদেশ ২০৩৫ সালের মধ্যে বিশ্বের সর্ববৃহৎ ও সর্বাধিক শক্তিশালী অর্থনীতিসমৃদ্ধ দেশগুলোর মধ্যে পঁচিশতম অবস্থানে চলে আসবে এবং ট্রিলিয়ন ডলার অর্থনীতির মাইলফলক স্পর্শ করবে। আর এ অবস্থান অর্জনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাত রাখবে অন্যতম ভূমিকা। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাত বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ঘোষিত একটি সম্ভাবনাময় খাত। কেননা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের ক্ষেত্রে সর্বাধিক সম্ভাবনাময় খাত হিসেবে তৈরি পোশাক শিল্প খাতের পরপরই এর অবস্থান।

বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিলের সহকারী নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফয়সাল খান বলেন, বিপিও শিল্পে অনেক ধরনের চাকরির সুযোগ রয়েছে। বিপিও মানেই শুধু কল সেন্টার নয়। আমাদের তরুণদের এ খাতের চাকরির বৈচিত্র্য সম্পর্কে জানাতে হবে। তাদের সে সমস্ত কাজের জন্য প্রশিক্ষিত করতে হবে। বাক্কোর সঙ্গে একত্রিত হয়ে বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিল ইতোমধ্যেই দুইশ’রও বেশি ফ্রিল্যান্সারকে উদ্যোক্তায় পরিণত করার উদ্দেশে প্রশিক্ষিত করেছে। এ প্রশিক্ষণ কর্মসূচি ভবিষ্যতেও চলমান রাখারই পরিকল্পনা রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই বিগত বিপিও সামিটগুলোর কার্যক্রম ও অর্জনের প্রতি আলোকপাত করা হয়। এরপর বর্তমান সামিটের সম্ভাব্য কার্যক্রম ও পরিকল্পনা সম্পর্কে অবহিত করা হয়।  

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, তিন বছর বিরতির পর আগামী ২৩ মে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও পিলিটেকনিক থেকে শুরু হচ্ছে বিপিও সামিট। তবে ২৪ মে নাটোরে এ সম্মেলন উদ্বোধন করবেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। সীমানা পেরিয়ে বিপিও প্রত্যয়ে ২০ জুলাই পর্যন্ত সাত বিভাগেই হবে এ সম্মেলন। শেষ হবে হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালে ঢাকা সম্মেলনের মধ্য দিয়ে। সেই সম্মেলনে থাকবেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- বাক্কোর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. তানজিরুল বাসার, অর্থ সম্পাদক মোহাম্মদ আমিনুল হক, বেসিস পরিচালক আবু দাউদ খান, আহমেদুল ইসলাম বাবু, বাংলাদেশ ফ্রিল্যান্সার ডেভেলপমেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান ডা. তানজিবা রহমান, মুসনাদ ই আহমেদ ও বাক্কো-এসইআইপি প্রকল্পের প্রধান সমন্বয়ক মো. মাহতাবুল হক।

বিশেষ অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস)-এর সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান ভূঁইয়া, টেকনোলজি মিডিয়া গিল্ড বাংলাদেশ (টিএমজিবি)-এর সভাপতি মোহাম্মদ কাওছার উদ্দীন, বাংলাদেশ উইম্যান ইন টেকনোলজি (বিডব্লিউআইটি)-এর সহ-সভাপতি নাজনীন কামাল, ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব)-এর সভাপতি শমী কায়সার এবং ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি)-এর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ এ কাইয়ুম রাশেদ।

বিপিও সামিট আয়োজনে সার্বিক সহযোগিতায় আছে বিজনেস প্রোমোশন কাউন্সিল। এছাড়া এ আয়োজনে সহযোগী হিসেবে থাকছে তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক বাণিজ্যিক সংগঠনগুলো। এগুলো হলো- আইএসপিএবি, বিসিএস, টিএমজিবি, ই-ক্যাব, বিডব্লিউআইটি, বেসিস, উই, বিআইজেএফ, বিএফডিএস।

বাংলাদেশ সময়: ১৩২১ ঘণ্টা, মে ২২, ২০২৩
আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।