ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

গ্রামীণফোন গ্রাহকদের জন্য বিনামূল্যের স্বাস্থ্যসেবা ‘টনিক’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫১ ঘণ্টা, জুন ৫, ২০১৬
গ্রামীণফোন গ্রাহকদের জন্য বিনামূল্যের স্বাস্থ্যসেবা ‘টনিক’ ছবি- শাকিল- বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর

ঢাকা: গ্রামীণফোন এবং টেলিনর হেলথ বাংলাদেশের গ্রাহকদের জন্য ‘টনিক’ নামে নতুন ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবা চালু করেছে।

রোববার (০৫ জুন) সন্ধ্যায় রাজধানীর ৠাডিসন হোটেলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম ‘টনিক’র উদ্বোধন করেন।


 
স্বাস্থ্য বিষয়ক তথ্য, ডাক্তারদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন ও আর্থিক সুবিধাদানের মাধ্যমে ‘ভালো থাকা’ অর্জন করতে সদস্যদের সহায়তা করবে বিনামূল্যের ‘টনিক’ সেবা। টনিকের লক্ষ্য, বাংলাদেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর সুস্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন বিষয়ে প্রাসঙ্গিক থাকা।
 
গ্রামীণফোনের মাধ্যমে টেলিনরের এ ধরনের ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবা চালু করা নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী নাসিম স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
 
স্বাস্থ্যসেবা ও স্বাস্থ্য সচেতনতা নিয়ে গ্রামাঞ্চলে ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রচারণার জন্য গ্রামীণফোনকে আহ্বান জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
 
ডিজিটাল এ স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে টেলিনর গ্রুপের ইভিপি ও প্রধান বিপণন কর্মকর্তা বিবেক সুদ বলেন, বাংলাদেশ ও এশিয়ার দেশগুলোর প্রতি টেলিনরের দায়বদ্ধতার একটি উদাহরণ হচ্ছে ‘টনিক’।
 
তিনি বলেন, প্রায় দু’বছর গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করার ফলে বাংলাদেশের সমাজের সঙ্গে আমার গভীর যোগাযোগ ও বোঝাপড়া তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশে ‘টনিক’ চালু হওয়ায় আমার জন্য খুবই আনন্দের বিষয়। প্রযুক্তিগত জ্ঞান ও স্বাস্থ্যখাতে গভীর দক্ষতার মিশেলে তৈরি এ সেবা নিয়ে আমরা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছানো এবং জাতীয় স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় আরও ইতিবাচক আবদান রাখার ব্যাপারে দারুণ রোমাঞ্চিত।
 
টনিক সদস্যরা চার ধরনের সুবিধা পাবেন বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।
 
‘টনিক জীবন’র মাধ্যমে টনিক সদস্যরা এসএমএস, ওয়েব ও ফেসবুকের মাধ্যমে প্রতিদিনকার সুস্থ জীবন-যাপনে ভালো খাওয়া, সক্রিয় থাকা এবং মানসিকভাবে সজীব থাকা নিয়ে বিভিন্ন টিপস ও তথ্য পাবেন।
 
‘টনিক ডাক্তার’ সদস্যদের সুযোগ করে দেবে সপ্তাহের সাত দিন ২৪ ঘণ্টা ফোনের মাধ্যমে অভিজ্ঞ ডাক্তারের তথ্যবহ ও বন্ধুত্বপূর্ণ পরামর্শ পাওয়ার।
‘টনিক ডিসকাউন্ট’ দেশজুড়ে স্বনামধন্য ৫০টিরও বেশি হাসপাতালে, হাসপাতাল ফি’র ওপর সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশ পর্যন্ত ডিসকাউন্টের সুযোগ করে দেবে।
 
‘টনিক ক্যাশ’র মাধ্যমে এর সদস্যদের তিন রাত কিংবা তারও বেশি হাসপাতালে প্রদত্ত বিল থেকে ৫০০ টাকা পরিশোধ করা হবে।  

 

গ্রামীণফোনের গ্রাহকরা বিনামূল্যে টনিকের সঙ্গে যুক্ত হতে এবং নিজ নিজ ‘ভালো থাকার মাস্টার প্ল্যান’ অর্জনে এর বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা কাজে লাগাতে পারবেন।

গ্রামীণফোনের যেকোনো গ্রাহক ইউএসএসডি *৭৮৯# নম্বরে ডায়াল করে অথবা www.mytonic.com ওয়েবসাইটে গিয়ে কিংবা ৭৮৯ নম্বরে কল করার মাধ্যমে বিনা খরচে টনিকের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবেন।
 
একজন গ্রাহক শুধু একবার টনিকের সঙ্গে যুক্ত হলেই হবে। পরবর্তী মাসে সদস্যপদ অব্যাহত রাখতে গ্রাহককে অবশ্যই তার গ্রামীণফোন সিম এর মাধ্যমে ফোন কল, এসএমএস অথবা ডাটা প্যাকেজ ব্যবহার করতে হবে।
 
গ্রাহকরা বিনামূল্যে ‘টনিক জীবন’, ‘টনিক ডিসকাউন্ট’ ও ‘টনিক ক্যাশ’ সুবিধা পাবেন। শুধুমাত্র ‘টনিক ডাক্তার’ সেবা নেওয়ার জন্য কল দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রতি মিনিটের খরচ পড়বে ভ্যাট ও অন্যান্য কর ছাড়া ৫ টাকা।

টনিক নিয়ে টেলিনর হেলথের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সাজিদ রহমান বলেন, শিশু মৃত্যুহার ও মাতৃস্বাস্থ্যের উন্নয়নের মতো সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাংলাদেশ অবিশ্বাস্য রকমের অগ্রগতি অর্জন করেছে। বাংলাদেশ এর সব বয়সের মানুষের জন্য সুস্থজীবন ও ভালো থাকা নিয়ে নতুন টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা সামলে উঠেছে। এ ধারাবাহিকতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার আমাদের নির্ভরযোগ্য মনে করেছে এজন্য আমরা সম্মানিত ও একইসঙ্গে বিনীত বোধ করছি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে এক্ষেত্রে আমাদের ছোট্ট ভূমিকা রাখার ব্যাপারে আমরা উন্মুখ হয়ে আছি।

বিটিআরসি চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ, বাংলাদেশে নিযুক্ত নরওয়ের রাষ্ট্রদূত মেরেতে লুন্ডেমু, স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

টেলিনর গ্রুপের স্বাস্থ্যভিত্তিক অঙ্গ প্রতিষ্ঠান টেলিনর হেলথ নরওয়েতে নিবন্ধিত এবং এটি টনিক এবং এর সার্বিক কর্মকাণ্ডের জন্য চিকিৎসা সম্পর্কিত সর্বোচ্চ মানসহ অর্জনের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। প্রতিষ্ঠানটির রয়েছে নিজস্ব ক্লিনিক্যাল টিম। এ টিমের দায়িত্বে রয়েছেন অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন উঠতি বাজারে ব্যাপক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন একজন প্রধান মেডিকেল কর্মকর্তা।

টেলিনর হেলথ এর স্বাস্থ্য বিষয়ক সব লেখা শীর্ষস্থানীয় বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠান বুপা ও মায়ো ক্লিনিক থেকে নিয়ে থাকে। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানটির পরামর্শ নেওয়ার ক্ষেত্রে রয়েছে পৃথক মেডিকেল উপদেষ্টা প্যানেল। যে প্যানেলে রয়েছেন দেশের প্রখ্যাত সব চিকিৎসকরা। এদের মধ্যে আছেন অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আব্দুল মালিক, জাতীয় অধ্যাপক এম. আর খান এবং অধ্যাপক আজাদ খান।

দায়বদ্ধতার প্রতি সঙ্গতি রেখে ও ‘সমাজের ক্ষমতায়ন’ নিয়ে সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে টেলিনর গ্রুপ টনিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্যসেবা অধিদপ্তরের (ডিজিএইচএস) সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারিত্বেরও ঘোষণা দিয়েছে।

স্বাস্থ্যসচিব সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম অনুষ্ঠানে এ অংশীদারিত্বের ঘোষণা দেন।

ডিজিএইচএস ও টেলিনর হেলথের অংশীদারিত্বের লক্ষ্য ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের সুযোগ বৃদ্ধির মাধ্যমে বাংলাদেশের সব মানুষের জন্য মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণের সুযোগ বৃদ্ধি করা। এ অংশীদারিত্বের অংশ হিসেবে টেলিনর হেলথ ডিজিএইচএস’র বিদ্যমান স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক হেল্পলাইন স্বাস্থ্য বাতায়ন উদ্যোগে কার্যকরী ভূমিকা রাখবে।

এছাড়াও ইউনিভার্সাল হেলথ কভারেজ, স্বাস্থ্যসেবা সংক্রান্ত তথ্যপ্রযুক্তিগত আন্তঃপরিবর্তন এবং অসংক্রামক রোগ নিয়ে ডিজিএইচএস’র নতুন সব প্রকল্প উদ্বোধনে টনিক ডিজিএইচএস’র সঙ্গে যৌথ অংশীদারিত্বে কাজ করবে।

টনিকের এ উদ্যোগ শুধুমাত্র বাংলাদেশে অভিনব ডিজিটাল সেবার উদ্বোধনই নয় এছাড়াও এটা টেলিনর হেলথের প্রথম কোনো সেবার উদ্বোধন। এর লক্ষ্য উচ্চমানসম্পন্ন স্বাস্থ্য বিষয়ক তথ্য, পরামর্শ ও সেবা বিস্তৃতশীল এশিয়ার সব গ্রাহকের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া।
 
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৮ ঘণ্টা, জুন ০৫, ২০১৬
এমআইএইচ/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।