ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

জিপি’র 4G নিয়ে গ্রাহক প্রতিক্রিয়ার ৪২ পৃষ্ঠা

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১৯ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০১৬
জিপি’র 4G নিয়ে গ্রাহক প্রতিক্রিয়ার ৪২ পৃষ্ঠা

গ্রামীণফোন মোবাইলফোন ইন্টারনেটে যে 4G চালুর ঘোষণা দিয়েছে তারই প্রেক্ষিতে পাঠকের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিলো এই মোবাইলফোন অপারেটরের 3G নিয়েই সাধারণ মানুষের অভিজ্ঞতা কী। গত প্রায় চব্বিশ ঘণ্টায় বাংলানিউজের নির্দিষ্ট ই-মেইলে তিন শতাধিক বার্তা এসেছে।

সংবাদটির ফেসবুক পোস্টেও ছিলো মন্তব্য দেওয়ার সুযোগ। তাতে পাঠকরা জানিয়েছেন তাদের প্রতিক্রিয়া। প্রায় হাজার খানেক মন্তব্য জমা পড়েছে। যা পৃষ্ঠার হিসাবে ৪২ পৃষ্ঠা দাঁড়িয়েছে।

এই সব মন্তব্যে সমর্থন জানিয়ে লাইক, রিঅ্যাক্ট করেছেন আরও হাজার হাজার গ্রাহক। ফেসবুকে বাংলানিউজের পোস্টটি শেয়ার করেছেন আড়াইহাজার পাঠক। রিচ হয়েছে ১ লাখ ২৯ হাজার জনের কাছে। আর প্রত্যেক পাঠকের ফেসবুক বন্ধুদের কথা ধরলে এই পোস্ট পৌঁছেছে দেড় কোটিরও বেশি বাংলানিউজ পাঠকের কাছে। প্রতিক্রিয়াগুলো এখানে তুলে ধরা হলো।  

ফরহাদ খান লিখেছেন, আরে ভাই নেটওয়ার্ক পাক না পাক সেটা কথা না 4G চালু করলে সেই হিসাবে টাকাতো নিতে পারবে। তাদের ধান্দা তো পূরণ হবে।

সালেহ উদ্দিন পলাশ জানিয়েছেন তার এলাকায় থ্রিজিতো দুরের কথা টুজি নেটওয়ার্কও নাই। এ বিষয়ে গ্রামীণফোনে কম করেও ১৫০ বার অভিযোগ করে কোন ফল পাননি তিনি। সালেহ উদ্দিন বলেন, অভিযোগ করার পর বেশ কয়েক বার তাদের নেটওয়ার্ক টিম এসে নেটওয়ার্ক টেষ্ট করে জানায় আমার এলাকায় ১টা বিটিএস বসানো ছাড়া উন্নয়ন সম্ভব নয়। কিন্তু আমার এলাকায় তারা নাকি বাণিজ্যিকভাবে লাভে নাই তাই আমার এলাকার নেটওয়ার্কও উন্নয়ন নাই। প্রশ্ন একটা কোম্পানির কি দেশের সব জায়গায় লাভ করতে হবে?

তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখালেও পলাশ তার এলাকার নামটি উল্লেখ করেননি। তবে হোক সে যেকোনও স্থানে। একজন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সালেহ উদ্দিন পলাশের এই মন্তব্য প্রনিধানযোগ্য।

গোল্ডফিশ তার ফেসবুক নাম। মন্তব্যে লিখেছেন, থ্রি জি তে নেটের মাথা প্রায় ঘন্টাখানেক ঘোরে। তার পর বলে আমি আর পারছি না পরে চেষ্টাকরুন। সেখানে ফোর জির কিঅবস্থা হবে বুঝতেই পারছেন।

ইনজামামুল হক তার সঙ্গে কণ্ঠমিলিয়ে বলেছেন, 2G পাই না ঠিক মতো, আবার ফোর জি। ধাপ্পাবাজির তো একটা সীমা আছে নাকি?

ইনজামাম আরও জানান, থ্রিজি দেবার নামে ডাটা প্যাকের জন্য টাকা নিচ্ছে গ্রামীণফোন, আর স্পিড তো বেশির ভাগ সময়ই নেই... টু জি পেলেও বলা যেত।

কিছুটা পরামর্শও জিপিকে দিয়েছেন এই গ্রাহক। বলেছেন, চটকদার বিজ্ঞাপনে না মজে, গ্রাহক সেবার দিকে ঝোকা উচিৎ প্রতিষ্ঠানটিকে। এর বিটিআরসিকেও এ বিষয়ে মনিটরিং বাড়াতে হবে। নইলে গ্রাহক টাকা দিয়ে কেবল ভোগান্তিই কিনবে, বলেন ইনজামামুল হক।

আর মোবারক হোসেনের মত হচ্ছে, রাজধানীতে গ্রামীণফোনের নেটওয়ার্ক চলতিমানের হলেও রাজধানীর বাইরের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

‘ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আমার গ্রামের বাড়িতে থ্রিজি দূরের কথা টুজি নেটওয়ার্কও সোনার হরিণ। মোবাইল চালু থাকলেও অন্য কলারদেরকে মোবাইল বন্ধের কথা শোনায়। কল করতে পারলেও ভাঙ্গা ভাঙ্গা শব্দ আর বারবার সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়া নিত্যদিনের ঘটনা। তাই বাধ্য হয়ে টেলিটক, রবি, বাংলালিংক কিংবা এয়ারটেলে সুইচ করতে হচ্ছে অনেক গ্রাহকের,’ মন্তব্য মোবারক হোসেনের।

এইচ এম তারেক তার মন্তব্য নিয়ে কিছুটা গ্রামীণফোনের পাশেই দাঁড়িয়েছেন। তিনি লিখেছেন তার সৌদিআরবের অভিজ্ঞতার কথা। সেখানে অনেক সিটিতে এখনও 3G ঠিকমত পাওয়া যায়না তবে তারা এখন 5G চালু করতে যাচ্ছে। এমন কি দু এক জায়গায় চালুও করেছে।

‘বাংলাদেশ অনেক প্রতিযোগি তাই সব কোম্পানিই চাইবে কার আগে কে কি সেবা নিয়া আসতে পারে, মন্তব্য তারেকের।

মিজানুর রহমান সোহেল নামের এক গ্রাহকের মন্তব্য, বেশি কিছু বলতে চাই না। তবে মাস খানেক আগে যখন গ্রামীণফোন ঘোষণা দিল দেশজুড়ে ১০ হাজারের বেশি বিটিএস (টাওয়ার) থ্রিজিতে রূপান্তরিত হয়েছে তখন অনেক আশা জেগেছিল। ঈদে গ্রামে যাওয়ার পর বুঝলাম এগুলো গালগল্প ছাড়া কিছুই নয়। পাবনা সদর উপজেলার শহরতলীতে ঈদে গ্রামীণফোন ইন্টারনেট ব্যবহার করতে গিয়ে আমার নাজেহাল হতে হয়েছিল। কখনও প্রধান সড়কে কখনও বা উঁচু স্থানে গিয়ে আমার নেট ব্যবহার করতে হয়েছে। তারপরেও অনেক স্লো।

আসলে ঢাকা-চট্টগ্রাম কেন্দ্রিক ইন্টারনেট সেবার উন্নয়ন ঘটালেই দেশ পরিবর্তন হবে না। সবার জন্য সমান গুরুত্ব দিয়ে থ্রিজি বা ফোরজির সম্প্রসারণ প্রয়োজন। অন্যথায় মানুষ এসব লোভনীয় কথা শুনেও তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, মন্তব্য মিজানুরের।
Engr Md Masud Rana পেশায় প্রকৌশলী মাসুদ রানা জানিয়েছেন, তার বাসা নওগাঁ মহাসড়ক রাজশাহী এয়ারপোর্ট টু রাজশাহী রেলস্টেশন এর মাঝে (৮ কি: মি:) সেখানে এখনো 3G সার্ভিস নেই।

‘বাংলাদেশের প্রায় সব স্থানে তৃতীয় প্রজন্মের (3G) সেবা পৌঁছে দেওয়ার পর 4G’র উদ্যোগ বলে যে জিপির বক্তব্য তাকেও একহাত নিয়েছেন এই প্রকৌশলী।


এদিকে ফেণীর তৌহিদ মজুমদারের কথা শুনুন। তিনি লিখেছেন, আমার গ্রামের বাড়ি ফেনী জেলার একেবারে উত্তরের থানায়। কাজে অথবা ছুটিতে বাড়িতে গেলে গ্রমীণফোনের থ্রিজি তো দূরের কথা, ভয়েস কল করতে মারাত্মক অসুবিধায় পড়তে হয়। আর কিছুই বলবোনা। বুঝে নিবেন।

আর লোকমান সামির মন্তব্য কত ***জি দেখবে জাতি, এখনও অনেক স্হানে নেটওয়ার্ক ই পাওয়া যায়না ঠিকমত।

খোদ রাজধানীর অভিজ্ঞতা জানিয়েছেন শাহীন জুয়েল। লিখেছেন, আমি মিরপুর ডিওএইচএস এ থাকি। 3G তো
দূরের কথা মোবাইল নেটওয়ার্ক ঠিকমত থাকেনা। 3G খুঁজতে বাসা থেকে মেইন রাস্তায় যেতে হয়। GP'র উচিত আগে 3G ঠিক করা তারপর 4G নিয়ে চিন্তা করা।

চলবে....

বাংলাদেশ সময় ১০১০ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০১৬

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।