ভূমি সংশ্লিষ্ট সেবাদাতাদের জন্য খাস ও অর্পিত সম্পত্তি চিহ্নিতকরণ, রক্ষণাবেক্ষণ ও দাপ্তরিক কাজের সুবিধার্থে এবং সাধারণ নাগরিকের জমি ক্রয়-বিক্রয় বা তথ্য সংগ্রহে অযথা হয়রানি ও দীর্ঘসূত্রিতা থেকে মুক্তির লক্ষ্যে জমি সংক্রান্ত মোবাইল অ্যাপ উদ্বোধন করা হয়েছে।

আন্ড্রয়েড ভিত্তিক “খাস ও ভিপি জমি সনাক্তকরণ” শীর্ষক অ্যাপটি তৈরি হয়েছে কটিয়াদী উপজেলা ভূমি অফিসের উদ্যোগে।

কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোঃ আজিমুদ্দিন বিশ্বাস সম্প্রতি অ্যাপটি উদ্বো্ধন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, কটিয়াদী সহ উপজেলার জনপ্রতিনিধি সহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
 
অ্যাপটির পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন করেছেন আবদুল্লাহ আল জাকী, সহকারী কমিশনার (ভূমি), কটিয়াদী, কিশোরগঞ্জ। নির্মাণে সহায়তা করেছে কোডেক্স সফটওয়ার সলিউশন লিমিটেড।

গুগল প্লে-স্টোরে “খাস ও ভিপি জমি সনাক্তকরণ” লিখে সার্চ দিলেই পাওয়া যাবে অ্যাপটি। এছাড়াও https://goo.gl/mehuNP লিংকে এবং কিশোরগঞ্জ জেলা পোর্টালে (www.kishoreganj.gov.bd) পাওয়া যাবে।

সংশ্লিষ্ট সুত্র মতে, এই অ্যাপলিকেশন ব্যবহারের ফলে ভূমি সংশ্লিষ্ট সেবাদাতারা যেসকল সুফল ভোগ করবেন তা হলো

-অ্যাপটি অফলাইন ভিত্তিক হওয়ায় যেকোন স্থান থেকে ইন্টারনেট সংযোগ না থাকা সত্বেও স্মার্টফোন থাকলেই একটি মৌজার কোন নির্দিষ্ট জমি খাস বা ভিপি কিনা তা যাচাই করা যাবে।
-খুব সহজেই এস.এ দাগ-খতিয়ানের তথ্য জানা যাবে বিধায় ইউনিয়ন ভূমি অফিস, উপজেলা ভূমি অফিস ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের রেকর্ড রুমের অত্যন্ত মূল্যবান এস.এ রেকর্ডসমূহ সুরক্ষিত ও অক্ষুণ্ন থাকবে।

-জরিপকালে অ্যাপটি ব্যবহারের ফলে জরিপ প্রক্রিয়া অত্যন্ত সহজতর, নির্ভুল ও সময় সাশ্রয়ী হবে।

-উপজেলা ভূমি অফিসে একটি নামজারি মোকদ্দমা নিষ্পন্নের প্রক্রিয়ায় একই এস.এ বা আর.এস ভলিউম ন্যূনতম ৩ বার একাধিক কর্মকর্তা দ্বারা ব্যবহৃত হয়, কিন্তু এটি ব্যবহার করা হলে উক্ত ভলিউমসমূহ বিশেষ ক্ষেত্র ছাড়া ব্যবহারের প্রয়োজন হবে না।

-ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল ও দেওয়ানী আদালতে দায়ের করা মোকদ্দমার আরজিভিত্তিক দফাওয়ারী জবাব সঠিকভাবে ও সময়মত দাখিল না করার ফলে এসকল মামলায় সরকারি স্বার্থ ক্ষুণ্ন হয়। এই অ্যাপ ব্যবহারের ফলে স্বল্প সময়ে নালিশী জমির সাবেক এস.এ রেকর্ডীয় মালিকানার তথ্য জানা যাবে। এছাড়াও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা কর্তৃক জবাবটি নিরীক্ষাকালে অ্যাপের মাধ্যমে সহজেই তথ্য যাচাই করা যাবে।

-দলিল রেজিস্ট্রির সময় সাব-রেজিস্ট্রার তফসিলে উল্লিখিত জমি খাস বা ভিপি কিনা তা সহজেই যাচাই করা যাবে। ফলে ভুয়া দলিল সৃজন করে খাস ও ভিপি জমি ক্রয়-বিক্রয় হ্রাস পাবে।

-বিভিন্ন মোকদ্দমা, উচ্ছেদ, আবেদন বা অভিযোগের বিষয়ে সরেজমিনে তদন্তকালে সহকারী কমিশনার (ভূমি), কানুনগো, সার্ভেয়ার বা সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তার মুঠোফোনে অ্যাপটি থাকলে তদন্ত কার্যক্রম অত্যন্ত সহজতর ও সময় সাশ্রয়ী হবে।

-মাঠ পর্যায়ে জেলা প্রশাসক থেকে শুরু করে সহকারী কমিশনার (ভূমি) পর্যন্ত কর্মকর্তাগণ নাগরিক সেবা বৃদ্ধি ও প্রশাসনকে জনবান্ধব করার লক্ষ্যে নিয়মিত গণশুনানির আয়োজন করেন। তাই এই অ্যাপ ব্যবহার করে গণশুনানির সময় তাৎক্ষণিকভাবে খাস জমি বেদখল বা ভূমিহীনকে বন্দোবস্তি বা যেকোন তথ্য যাচাই করা সম্ভব হবে।

-ভূমি অধিগ্রহণের সময় প্রস্তাবিত জমিতে খাস বা ভিপি সম্পত্তি আছে কিনা তা বের করা সম্ভব হবে।     

উল্লেখ্য, একবারর ডাউনলোড করার পর পুনঃরায় ইন্টারেনেট সংযোগের প্রয়োজন হবে না। অনলাইন এবং অফলাইন দু’ভাবেই ব্যবহার করা যাবে অ্যাপটি।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৬, ২০১৬
এসজেডএম