আবারো সক্রিয় হয়ে উঠল ইন্দোনেশিয়ার সর্বোচ্চ আগ্নেয়গিরি পূর্ব জাভার মাউন্ট সেমেরু। নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে ২ হাজার বাসিন্দাকে, জারি করা হয়েছে চতুর্থ স্তরের সতর্কতা।
স্থানীয় সময় রোববার দুপুর আড়াইটা থেকে লাভা উদ্গীরণ শুরু করেছে রাজধানী জাকার্তা থেকে প্রায় ৬৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত এই আগ্নেয়গিরি।
অগ্ন্যুৎপাতের কারণে সৃষ্ট ছাইয়ে ঢেকে গেছে পূর্ব জাভার একাধিক রাস্তা এবং বাড়িঘর। আগ্নেয়গিরির কাছে থাকা গ্রামগুলো থেকে প্রায় ২ হাজার বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে নিরাপদ আশ্রয়ে।
সোমবার (৫ ডিসেম্বর) আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়।
তাদের আশেপাশের স্কুল এবং সরকারি ভবনগুলোতে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
ইন্দোনেশিয়ার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা (বিএনপিবি) থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, লাভা বেরিয়ে আসার কারণে ঘন সাদা ধোঁয়ায় ঢেকে গেছে এবং ছাইগুলো ছিটকে এসে পড়ছে। তবে এখনো পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
স্থানীয়দের সেমেরুর অগ্ন্যুৎপাত কেন্দ্র থেকে কমপক্ষে ১৭ কিলোমিটার দূরে থাকার জন্য সতর্কতা জারি করেছে বিএনপিবি।
এদিকে, আগ্নেয়গিরির ছাই থেকে শ্বাসকষ্টজনিত রোগের ঝুঁকি কমাতে স্থানীয়দের হাতে ২০ হাজারের বেশি মাস্ক তুলে দেওয়া হয়েছে বলেও জানানো হয়।
‘ইন্দোনেশিয়াস সেন্টার ফর ভলক্যানোলডি অ্যান্ড জিওলোজিক্যাল হ্যাজার্ড মিটিগেশন’ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আগ্নেয়গিরির ছাই কেন্দ্রস্থল থেকে ১২ কিলোমিটার পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে। এ কারণে ওই এলাকায় চতুর্থ স্তরের সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
১২ হাজার ৬০ ফুট উচ্চতার মাউন্ট সেমেরু জাভার সবচেয়ে উঁচু এবং অন্যতম সক্রিয় আগ্নেয়গিরি। গত বছর এই আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতে ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত এবং হাজার হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়।
২০২১-সালের অগ্ন্যুৎপাতের চেয়েও রোববার শুরু হওয়া অগ্ন্যুৎপাত অনেক বেশি লাভা উদ্গীরণ করছে বলেও জানিয়েছে জাভা প্রশাসন। তাই এবার লাভা আরও বিস্তীর্ণ এলাকা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বাড়াতে পারে বলেও আশঙ্কা করছে প্রশাসন।
চলতি বছরের নভেম্বরেই পূর্ব জাভার পশ্চিম দিকে ধারাবাহিক ভূমিকম্পে প্রায় ৩০০ মানুষ প্রাণ হারায়। এর পরই জেগে উঠে ফুটন্ত লাভা উদ্গীরণ শুরু করে মাউন্ট সেমেরু।
এদিকে, মাউন্ট সেমেরুর জেগে ওঠার সপ্তাহখানেক আগেই জেগে ওঠে বিশ্বের বৃহত্তম জীবন্ত আগ্নেয়গিরি মাউনা লোয়া। দীর্ঘ ৩৮ বছর পর গত ২৭ নভেম্বর থেকে অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয় হাওয়াই দ্বীপের উত্তর-পূর্বে অবস্থিত এই আগ্নেয়গিরিটি।
১৯৮৪ সালে শেষ বার অগ্ন্যুৎপাত হয় মাউনা লোয়ায়। অগ্ন্যুৎপাতের ফলে উদ্গত লাভা থেকে বাঁচতে বাঁধ দেওয়ার প্রস্তুতি নেয় প্রশাসন।
মাউনা লোয়া মূলত হাওয়াই দ্বীপের প্রায় অর্ধেকটা জুড়ে অবস্থিত। ১৮৪৩ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত মোট ৩৩ বার জেগে উঠেছে আগ্নেয়গিরিটি।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৬, ২০২২
এনএস