সিরিয়ার নতুন অন্তর্বর্তীকালীন নেতা আহমেদ আল-শারার সঙ্গে প্রথমবারের মতো কথা বলেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতনের পর এটিই দুই দেশের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক সংলাপ।
বুধবারের (১২ ফেব্রুয়ারি) ফোনকলে আল-শারা দুই দেশের মধ্যে ‘দৃঢ় কৌশলগত সম্পর্ক’ গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
তিনি বলেন, এই সম্পর্ক শুধু দুই দেশের স্বার্থেই নয়, বরং সিরিয়ার স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেও গুরুত্বপূর্ণ। ফোনকলে পুতিন তাকে রাশিয়া সফরের জন্য আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
ক্রেমলিনের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রাশিয়া সিরিয়ার ঐক্য, সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় তার অবস্থান ধরে রাখবে। তবে বাস্তবতা হলো, রাশিয়ার মূল উদ্বেগ এখন সিরিয়ায় তাদের দুটি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ঘাঁটির ভবিষ্যৎ।
২০১৫ সালে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে রাশিয়া সরাসরি হস্তক্ষেপ করে বিদ্রোহীদের দমন করতে আসাদকে সাহায্য করেছিল। সেই সময় দামেস্কের পতনের সম্ভাবনা দেখা দিলে রাশিয়া সামরিক শক্তি নিয়ে এগিয়ে আসে এবং পরবর্তীতে আসাদকে আশ্রয়ও দেয়। আল-শারারের নেতৃত্বে বিদ্রোহীরা গত ডিসেম্বরে মস্কোর ঘনিষ্ঠ মিত্র আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করে, যার ফলে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে রাশিয়ার সামরিক উপস্থিতির ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
এখন সিরিয়ার নতুন সরকার আসার পর পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করেছে। রাশিয়া চায় তার নৌ ঘাঁটি তারতুস এবং বিমানঘাঁটি খেমেইমিম আগের মতোই সক্রিয় থাকুক, যা ভূমধ্যসাগরে রাশিয়ার উপস্থিতি বজায় রাখার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে রাশিয়া যদি তার সামরিক ঘাঁটি ধরে রাখতে চায় তার বিনিময়ে আসাদকে ফেরত চায় দামাস্ক।
মস্কোর জন্য এটি একটি কঠিন সমীকরণ— একদিকে সিরিয়ায় সামরিক প্রভাব বজায় রাখা, অন্যদিকে নতুন সরকারের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলা।
আগামী দিনে এই পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয়, তা নির্ভর করবে মস্কোর পরবর্তী পদক্ষেপের ওপর। পুতিন ও আল-শারারের মধ্যে আলোচনার ফলাফল ভবিষ্যতে সিরিয়ায় রাশিয়ার ভূমিকাকে নির্ধারণ করতে পারে।
সূত্র: আল জাজিরা
বাংলাদেশ সময়: ১২১১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৫
এমএম