বীরেন সিংহ মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করার চার দিন পর ভারতের মণিপুরে জারি করা হলো রাষ্ট্রপতি শাসন। এরই সাথে রাজ্য বিধানসভাকে স্থগিত অবস্থায় রাখা হয়েছে।
২০২৩ সালের মে মাস থেকে মণিপুরে জাতিগত সহিংসতা চলছিল, যা রাজ্যের রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করে তুলেছিল।
ভারতীয় সংসদের দুই কক্ষ বাজেট অধিবেশনের অবশিষ্ট অংশের জন্য ১০ মার্চ পর্যন্ত মুলতবি করে বিরতিতে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর এই সিদ্ধান্ত দেন। মণিপুরের রাজ্যপাল অজয় কুমার ভল্লার দেওয়া একটি প্রতিবেদনের ভিত্তিতে রাষ্ট্রপতি শাসনের এই ঘোষণা করা হয়েছে।
রাষ্ট্রপতি শাসন জারির আগে, রাজ্যে একটি নিরাপত্তা পরিকল্পনা প্রস্তুত করা হয়েছিল। রাজ্য পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করছিল, যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়ানো যায়। এই পদক্ষেপটি রাজ্যের শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য নেওয়া হয়েছিল।
গত ৯ ফেব্রুয়ারি মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংহ পদত্যাগের মাধ্যমে মণিপুরের বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারের পতন ঘটে। তার পদত্যাগের পর রাজ্যে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল।
রাষ্ট্রপতি শাসনের ঘোষণার আগে, বিজেপির উত্তর-পূর্ব সমন্বয়ক সাম্বিত পাত্র ইম্ফালে বিজেপি বিধায়ক এবং এনডিএ জোটসঙ্গী— নাগা পিপলস ফ্রন্ট ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির সঙ্গে তিন দিনের বৈঠক করেন। এই বৈঠকের মাধ্যমে বীরেন সিংহের উত্তরসূরি হিসেবে মুখ্যমন্ত্রী পদের জন্য একটি সর্বসম্মত প্রার্থী খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হচ্ছিল বলে জানা গেছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, মণিপুরের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন সে বিষয়ে ঐকমত্যে না পৌঁছাতে পারার কারণেই সেখানে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা হয়েছে।
গত বছর অক্টোবর মাসে এন বীরেন সিংহকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে অপসারণের দাবিতে বিজেপির ১৯ জন বিধায়ক প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিয়েছিলেন।
৬০ সদস্যের মণিপুর বিধানসভায় বিজেপির ৩৭ জন এবং তাদের জোটসঙ্গীদের ১১ জন বিধায়ক রয়েছেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও ওই রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করতে হয়েছে মূলত নতুন মুখ্যমন্ত্রী নিয়ে মতভিন্নতার কারণেই।
রাষ্ট্রপতি শাসন মণিপুরের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। তবে, রাজ্যের মানুষ এখনও শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য অপেক্ষা করছেন। আশা করা যায়, রাষ্ট্রপতি শাসনের সময়ে রাজ্যের পরিস্থিতি উন্নতি হবে এবং ভবিষ্যতে একটি স্থিতিশীল সরকার গঠিত হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২৫
এমএম