সোমবার (২২ জুলাই) স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ৪৭ মিনিটে অন্ধ্র প্রদেশের শ্রীহরিকোটা মহাকাশ স্টেশন থেকে ‘চন্দ্রযান-২’ নামে এ মহাকাশযান উৎক্ষেপণ করা হয়।
ভারতের মহাকাশ বিষয়ক সংস্থা ইসরো’র প্রধান কে সিভান জানান, এক সপ্তাহ আগে নির্ধারিত প্রথম দিনের অভিযান বাতিলের পর আজ সফলভাবে চন্দ্রযান-২ উৎক্ষেপণ সম্ভব হয়েছে।
প্রায় এক হাজার ২৬৭ কোটি টাকা অর্থমূল্যের এ অভিযানের মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে কোনো মহাকাশযান সফলভাবে অবতরণ করবে বলে আশাবাদী ভারত।
টেলিভিশন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার (ইসরো) কর্মীদের অ্যাকাউন্টগুলোতে সরাসরি এ উৎক্ষেপণ অভিযান সম্প্রচারিত হয়। সফল উৎক্ষেপণের কয়েক মিনিটের মাথায় মহাকাশযানটি বাইরের বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের পরপরই সংস্থার নিয়ন্ত্রণ কক্ষে সবাই করতালি দিতে থাকেন। এ যাবৎ এটিই ছিলো ইসরোর সবচেয়ে দুরূহ অভিযান।
ইসরোর প্রধান কে সিভান আরো বলেন, ‘এর মধ্য দিয়ে চাঁদে এক ঐতিহাসিক অভিযানের শুরু হলো। ’ এ কাজে সংশ্লিষ্ট সবাইকে তিনি অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানান। ‘এ অভিযানের সঙ্গে যুক্ত সবাইকে স্যালুট জানানো আমার কর্তব্য’, বলেন তিনি।
এর আগে ১৫ জুলাই কারিগরি ত্রুটির কারণে মহাকাশযান উৎক্ষেপণের ৫৬ মিনিট আগে তা বাতিল করা হয়। ক্রায়োজেনিক ইঞ্জিনের হিলিয়াম গ্যাস বোতলে একটি ছিদ্রের কারণে ওই দিনের উৎক্ষেপণ বাতিল করা হয় বলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানায়। পরবর্তীতে রকেটের জ্বালানি নির্গমন করে বিজ্ঞানীরা ওই সমস্যার সমাধান করেন।
ইসরোর এক সূত্র জানায়, ‘খুব সাধারণ ত্রুটি হলেও ওইদিন পুরো অভিযানে ব্যর্থ করে দিতে তা যথেষ্ঠ ছিল। ’
এর আগে ২০০৮ সালে প্রথমবারের মতো চন্দ্রযান-১ নামে চাঁদে রকেট পাঠায় ভারত। কিন্তু সেটি চাঁদের মাটিতে অবতরণ করেনি। সেবার রাডার ব্যবহার করে প্রথমবারের মতো চাঁদে পানি বিষয়ক বিস্তারিত অনুসন্ধান চালায় মহাকাশযানটি। এবারে চন্দ্রযান-২ চাঁদের স্বল্প আবিষ্কৃত দক্ষিণ মেরুতে অবতরণের চেষ্টা চালাবে। এছাড়া এটি চাঁদের মাটি, পানি ও খনিজ এবং চন্দ্রকম্প বিষয়ে অনুসন্ধানের চেষ্টা করবে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
এ অভিযানে ভারত তার সবচেয়ে শক্তিশালী জিএসএলভি এমকে-৩ নামক রকেট ব্যবহার করছে। এটির ওজন ৬৪০ টন ও উচ্চতা ৪৪ মিটার, যা একটি ১৪তলা ভবনের সমান। চলতি বছরের ৬-৭ সেপ্টেম্বরের দিকে এটি চাঁদে অবতরণ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৫ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০১৯
এইচজে/জেডএস