ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, গত সোমবার (২২ জুলাই) পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে প্রথমবারের মতো দ্বি-পক্ষীয় বৈঠকে বসেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এসময় তিনি দাবি করেন, সম্প্রতি জাপানের ওসাকায় অনুষ্ঠিত জি২০ সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাকে কাশ্মীর সমস্যা সমাধানে মধ্যস্থতাকারী হতে অনুরোধ জানিয়েছেন।
ট্রাম্প বলেন, দুই সপ্তাহ আগে আমি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ছিলাম ও আমরা এ বিষয়ে (কাশ্মীর) কথা বলেছি। তিনি (মোদী) বলেছেন, আপনি কি মধ্যস্থতাকারী বা সালিশকারী হতে চান? আমি বললাম, কোথায়? (মোদী বললেন) কাশ্মীর।
‘কারণ এটা (বিরোধ) অনেক অনেক বছর ধরে চলছে। এত সময় দেখে আমি অবাক! এটা চলছেই…’ ইমরান খান জানান, ৭০ বছর।
ট্রাম্প বলেন, আমার মনে হয়, তারা (ভারতীয়রা) এর সমাধান দেখতে পছন্দ করবে। মনে হয়, আপনিও (ইমরান খান) এটা পছন্দ করবেন। আর, যদি সাহায্য করতে পারি, সেক্ষেত্রে আমি মধ্যস্থতাকারী হতে পারি। এটাই হওয়া উচিৎ… দু’টি চমৎকার দেশ, যাদের অত্যন্ত বুদ্ধিমান নেতৃত্ব আছে, (তারা) এমন একটা সমস্যার সমাধান করতে পারবে না? কিন্তু, যদি আপনারা আমাকে মধ্যস্থতা করতে বলেন, আমি তাতে রাজি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, সব সমস্যার সমাধান হওয়া উচিৎ। তিনিও (মোদী) আমার কাছে সেটাই বলেছেন। হতে পারে তিনি তার (ইমরান) সঙ্গে কথা বলবেন। নাহয়, আমি তার সঙ্গে কথা বলবো। দেখা যাক, কিছু করা যায় কি-না।
এসময় ট্রাম্পের এ প্রস্তাবকে স্বাগত জানান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট (ট্রাম্প), যদি সত্যিই এ ইস্যুতে মধ্যস্থতা বা সমাধান করতে পারতেন, আপনাকে বলতে পারি, এ মুহূর্তে একশ’ কোটির বেশি মানুষের প্রার্থনা আপনার সঙ্গে থাকতো।
তবে, ট্রাম্পের এ দাবি অস্বীকার করেছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রাবেশ কুমার এক টুইটবার্তায় বলেন, ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে মধ্যস্ততা করার বিষয়ে সংবাদমাধ্যমের কাছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মন্তব্য আমরা দেখেছি। বাস্তবে মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছে প্রধানমন্ত্রী এ ধরনের কোনো অনুরোধ করেননি।
আরেক টুইটবার্তায় তিনি বলেন, পাকিস্তানের সঙ্গে অমীমাংসিত সব ইস্যুর ক্ষেত্রে ভারত বরাবরই দ্বি-পক্ষীয় আলোচনার পক্ষে। তবে যেকোনো কার্যক্রমের জন্য পাকিস্তানকে অবশ্যই আগে সীমান্ত-সন্ত্রাস বন্ধ করতে হবে। ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার দ্বি-পক্ষীয় সব ইস্যু সমাধানের ভিত্তি শিমলা চুক্তি ও লাহোর ঘোষণাতেই আছে।
এদিকে, কাশ্মীর নিয়ে ট্রাম্পের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে স্টেট ডিপার্টমেন্ট জানিয়েছে, এটি একান্তই ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার বিষয়। তাদের আলোচনাকে সবসময়ই স্বগত জানাবে যুক্তরাষ্ট্র। আর, এর জন্য তারা প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা দিতেই প্রস্তুত।
বাংলাদেশ সময়: ১০৫০ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০১৯
একে