বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) স্থানীয় সময় ভোর সাড়ে ৬টার দিকে কাজাকিস্তানে স্থাপিত রাশিয়ার বাইকোনার রকেটবন্দর থেকে ‘সুয়োজ এমএস-১৪’ মহাকাশযানে অন্যতম কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার রোবটটি উড্ডয়ন করে।
ফেদরকে বহনকারী রকেটটি শনিবার (২৪ আগস্ট) নাগাদ মহাকাশ কেন্দ্রে পৌঁছাবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সাধারণত পাইলটদের মাধ্যমেই সুয়োজ রকেটের উড্ডয়ন কাজ পরিচালিত হয়। কিন্তু এই প্রথম জরুরি উদ্ধার অভিযান বিষয়ক পরীক্ষা চালাতে পাইলটবিহীন সুয়োজে করে ‘আধা-মানব’কে মহাকাশে পাঠানো হলো। বরং বিশেষভাবে বানানো পাইলটের সিটে ফেদরকেই বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর তার হাতে শোভা পাচ্ছে রাশিয়ার একটি পতাকা।
মহাকাশের প্রথম নভোচারী ইউরি গ্যাগারিনের বিখ্যাত উক্তি ‘চলো যাই, চলো যাই’ বলতে বলতে ফেদর ভূ-পৃষ্ঠ ত্যাগ করে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়। রুপালি গাত্রবর্ণের মানবাকৃতির এ রোবটের উচ্চতা পাঁচ ফুট ১১ ইঞ্চি এবং ওজন ১৬০ কেজি।
ফেদরের ইনস্টাগ্রাম ও টুইটার অ্যাকাউন্টও রয়েছে। সেখানে তার সম্পর্কে বলা হয়, ফেদর সম্প্রতি নতুন নতুন কলা-কৌশল আয়ত্ত করছে। যেমন- পানির বোতল খোলা। মহাকাশ কেন্দ্রে স্বল্প মাধ্যাকর্ষণ বলের মধ্যে সে এসব কলা-কৌশল চর্চা করবে।
শুধু তা-ই নয়, সুয়োজ রকেটটি পৃথিবীর কক্ষপথে পৌঁছানোর পর ফেদরের টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে জানানো হয় যে, পরিকল্পনা অনুযায়ী উড্ডয়নের পর প্রথম ধাপের পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।
এ মহাকাশ যাত্রার আগ মুহূর্তে রাশিয়ার মহাকাশ সংস্থার অন্যতম পরিচালক আলেক্সান্দার ব্লোশেঙ্কো টেলিভিশনে বলেন, ফেদর বৈদ্যুতিক তার সংযোগ ও খোলা, স্ক্রু ড্রাইভার ব্যবহার ও অগ্নিনির্বাপনের কাজও করতে পারে। এছাড়া সে মানুষের চলাফেরা অনুকরণ করতে পারে। মহাকাশে বা পৃথিবীতে ঝুঁকিপূর্ণ উদ্ধার অভিযানে এটাকে কাজে লাগানো যাবে। এ প্রজাতির রোবট দিয়ে মহাকাশে হাঁটাচলার মতো বিপজ্জনক কাজও করানো যাবে বলে জানান ব্লোশেঙ্কো।
এসবের বাইরেও উচ্চ মাত্রার বিকিরণ ক্ষেত্র, মাইন অপসারণসহ বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ কাজে ফেদর সহায়তা করতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
রাশিয়ার মহাকাশ সংস্থার প্রধান দিমিত্রি রোগোজিন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ফেদরের ছবি দেখিয়ে এ অভিযান সম্পর্কে অবহিত করেছেন বলেও সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানানো হয়। আগামীতে গভীর মহাকাশ বিজয়ে এ রোবট সাহায্য করবে বলে জানান পরিচালক।
এদিকে, ফেদরই মহাকাশে পাঠানো প্রথম ‘আধা-মানব’ নয়। এর আগে ২০১১ সালে ‘রোবোনাট-২’ নামে মানব আকৃতির একটি রোবটকে মহাকাশে পাঠিয়েছিল নাসা। রোবোনাটও বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করতে সক্ষম ছিল। যদিও পরবর্তীতে ২০১৮ সালে যান্ত্রিক জটিলতার কারণে রোবটটিকে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনা হয়।
এছাড়া ২০১৩ সালে মহাকাশকেন্দ্রে ‘কিরোবো’ নামে আরেকটি ছোটো আকৃতির রোবট পাঠিয়েছিল জাপান। সেটি জাপানি ভাষায় কথোপকথনে সক্ষম ছিল।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০১৯
এইচজে/টিএ