সৌদি সংবাদমাধ্যম আরব নিউজ জানিয়েছে, শনিবার (২৪ আগস্ট) থেকে অটোমেটিক আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেমে (এআইএস) সাবেক ‘গ্রেস-১’ নামধারী ট্যাংকারটির নতুন গন্তব্য তুরস্কের মারসিন বন্দর দেখা যাচ্ছে।
জাহাজের গতিবিধি বিষয়ক ওয়েবসাইট মেরিনট্রাফিক ডটকমে দেখা যায়, ভূমধ্যসাগরীয় দ্বীপ সিসিলির দক্ষিণে অবস্থান করছে আদ্রিয়ান দারিয়া-১।
ইউরোপীয় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সিরিয়ায় তেল নিয়ে যাচ্ছে- অভিযোগে গত ৪ জুলাই জিব্রাল্টার প্রণালী থেকে ট্যাংকারটি আটক করে যুক্তরাজ্যের রাজকীয় নৌবাহিনী। এর প্রতিক্রিয়ায় পারস্য উপসাগর থেকে একটি ব্রিটিশ ট্যাংকার আটক করে ইরান। এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে চরম উত্তেজনা দেখা দেয়।
অবশ্য ইরান শুরু থেকেই সিরিয়ায় তেল নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছিল। শেষমেশ, ইউরোপীয় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সিরিয়া বা অন্য কোথাও ট্যাংকারটি যাবে না, এমন শর্তে ইরান লিখিত প্রতিশ্রুতি দিলে সেটি ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় জিব্রাল্টার কর্তৃপক্ষ।
কিন্তু, শুক্রবার (১৬ আগস্ট) ইরানের ওই ট্যাংকার আটক করতে যুক্তরাষ্ট্রের আদালত পরোয়ানা জারি করলে এর মুক্তিতে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। ট্যাংকারটি যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেছে বলে ওই আদেশে উল্লেখ করা হয়। যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ করে, তেলবাহী ট্যাংকারটি ইরানের ‘এলিট বাহিনী’ রেভল্যুশনারি গার্ডের (আইআরজিসি) সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক কোম্পানির। কিছুদিন আগে এ বাহিনীকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। একারণে ট্যাংকারটি না ছাড়তে জিব্রাল্টার কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানায় তারা।
তবে, জিব্রাল্টার প্রশাসন জানায়, তাদের পক্ষে ওয়াশিংটনের অনুরোধ রাখা সম্ভব নয়। কারণ, এ অঞ্চল ইউরোপীয় আইনের প্রতি দায়বদ্ধ। ইরানের ব্যাপারে আরোপিত মার্কিন নিষেধাজ্ঞা ও ইউরোপীয় নিষেধাজ্ঞা ভিন্ন। তাছাড়া ইউরোপ, যুক্তরাজ্য বা জিব্রাল্টারের কাছে আইআরজিসি সন্ত্রাসী সংগঠনও নয়।
আরও পড়ুন> ট্যাংকার না আটকাতে যুক্তরাষ্ট্রকে হুঁশিয়ারি ইরানের
পরে, গত ১৯ আগস্ট জিব্রাল্টার থেকে ছাড়া পেয়ে গ্রিসের কালামাতা শহরের উদ্দেশে রওয়ানা দেয় আদ্রিয়ান দারিয়া-১। এটি ২১ লাখ ব্যারেল তেল বহন করছে, যার অর্থমূল্য প্রায় ১১৫ মিলিয়ন পাউন্ড।
তবে, জিব্রাল্টার ছেড়ে যাওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র সুপার ট্যাংকারটি ফের আটক করতে পারে- এমন গুঞ্জন শুরু হলে এ বিষয়ে কড়া হুঁশিয়ারি দেয় ইরান। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, এধরনের কিছু ঘটলে উন্মুক্ত সমুদ্রপথ জাহাজ চলাচলের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠবে। এরপরও, মার্কিন প্রশাসন ইরানি ট্যাংকারটির ওপর নজরদারি করছিল বলে খবর ছড়ায় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে।
খবরে বলা হয়, গন্তব্য বদলালেও আদ্রিয়ানা দারিয়া-১ সত্যি সত্যি তুরস্কে নাও যেতে পারে। কারণ, নাবিকরা যেকোনো সময় ইচ্ছামতো এআইএসে গন্তব্য বদলে দিতে পারেন। এটি ট্রাম্প প্রশাসনের চোখে ধুলো দেওয়ার কোনো কৌশল হতে পারে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০১৯
একে