ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

৮০টিরও বেশি দেশে ভ্যাকসিন দিয়েছে ভারত: মোদী

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০২১
৮০টিরও বেশি দেশে ভ্যাকসিন দিয়েছে ভারত: মোদী

ঢাকা: প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও ৮০টিরও বেশি দেশে ভারত ভ্যাকসিন সরবরাহ করেছে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

দিল্লিতে রাইসিনা সংলাপের উদ্বোধনী অধিবেশনে তিনি একথা বলেন।

২০২১ সালে আয়োজিত রাইসিনা সংলাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, মানবসভ্যতার ইতিহাসের এক সন্ধিক্ষণে  এবারের রাইসিনা সংলাপ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। একটি বৈশ্বিক মহামারি এক বছরের বেশি সময় ধরে পৃথিবীজুড়ে তাণ্ডব চালাচ্ছে। সবশেষ এক শতাব্দী আগে এ ধরনের বৈশ্বিক মহামারি হয়েছিল। যদিও মানবসভ্যতা তখন থেকেই অনেকগুলি সংক্রামক রোগের মুখোমুখি হয়েছে, কিন্তু বিশ্ব আজ কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত নয়।  

‘আমাদের বিজ্ঞানী-গবেষক এবং শিল্প কিছু প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে। এই ভাইরাস কী? কীভাবে এটি ছড়িয়ে পড়ে? আমরা কীভাবে সংক্রমণের মাত্রা ধীর করতে পারি? আমরা কীভাবে টিকা তৈরি করবো? আমরা কীভাবে দ্রুতগতিতে বেশি পরিমাণে ভ্যাকসিন উৎপাদন করবো? এই জাতীয় অনেক প্রশ্ন যেমন উঠেছে, তেমনি অনেকগুলি সমাধানও উদ্ভূত হয়েছে। নিঃসন্দেহে সামনে আরও অনেক সমাধান আসবে। তবে বৈশ্বিক চিন্তাবিদ এবং নেতা হিসেবে আমাদের অবশ্যই আরও কিছু প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে হবে নিজেদের। ’

ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক বছরেরও বেশি সময় ধরে আমাদের সমাজের সব বিজ্ঞজনেরাই এই মহামারিটি মোকাবিলায় নিয়োজিত। বিশ্বের সব রাষ্ট্রব্যবস্থা তাদের সমস্ত পর্যায়ে এই মহামারিটি নিয়ন্ত্রণ এবং প্রতিহত করার চেষ্টা করছে। এটা কেন হলো? এর কারণ কি এই যে, অর্থনৈতিক উন্নয়নের দৌড়ে মানবতার কল্যাণ পিছিয়ে পড়েছে? এর কারণ কি প্রতিযোগিতার যুগে মানুষ সহযোগিতার চেতনা ভুলে গেছে? এই জাতীয় প্রশ্নের উত্তর আমাদের সাম্প্রতিক অতীতে পাওয়া যাবে।

নরেন্দ্র মোদী বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি আমাদের বিশ্বব্যবস্থা পুনর্গঠন এবং আমাদের নতুন করে চিন্তা করার একটি সুযোগ দিয়েছে। আমাদের অবশ্যই এমন একটি ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে যা আজকের সমস্যা এবং আগামীর চ্যালেঞ্জগুলির সমাধান করবে। কেবল আমাদের সীমার এপারে যারা রয়েছেন তাদের কথা না ভেবে আমাদের অবশ্যই সমগ্র মানবতার কথা চিন্তা করতে হবে। সামগ্রিকভাবে মানবতা আমাদের চিন্তাভাবনা ও কর্মের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকতে হবে।  

‘বন্ধুরা! এই মহামারি চলাকালীন নিজস্ব উপায়ে ও সীমিত সংস্থানের মধ্যেও আমরা ভারতে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছি। আমরা নিজেদের ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন নাগরিককে মহামারি থেকে রক্ষা করার চেষ্টা করেছি। একই সঙ্গে আমরা অন্যদের মহামারি মোকাবিলায় সমর্থন করার চেষ্টা করেছি। ’

তিনি বলেন, সংকট প্রতিরোধে আমাদের সমন্বিত আঞ্চলিক প্রতিক্রিয়াকে উৎসাহিত করেছি। গত বছর আমরা দেড় শতাধিক দেশের সঙ্গে ওষুধ ও সুরক্ষা সরঞ্জাম ভাগ করে নিয়েছি। আমরা বুঝতে পেরেছি যে, পাসপোর্টের রং নির্বিশেষে আমরা প্রত্যেকেই এ মহামারি থেকে বেরিয়ে না আসা পর্যন্ত মানবজাতি মহামারিকে পরাভূত করবে না। এ কারণেই এবছর অনেক প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও আমরা ৮০টিরও বেশি দেশে ভ্যাকসিন সরবরাহ করেছি।  

‘আমরা জানি, বিশাল চাহিদার বিপরীতে সরবরাহগুলি পরিমিত ছিল। আমরা জানি যে, পুরো মানবজাতিকে টিকা দিতে অনেক সময় লাগবে। আমরা এও জানি যে, আশাহত হতে নেই। এটি সবচেয়ে ধনী দেশগুলির নাগরিকদের পক্ষে যতটা গুরুত্বপূর্ণ ততটাই গুরুত্বপূর্ণ যারা দরিদ্র দেশগুলোতে জন্মেছেন তাদের জন্যেও। তাই আমরা মহামারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমাদের অভিজ্ঞতা, আমাদের দক্ষতা ও আমাদের সংস্থানগুলি সমগ্র মানবতার সঙ্গে ভাগ করে নেবো।

তিনি বলেন, এবছর আমরা ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে রইসিনা সংলাপে অংশ নিয়েছি। আমি আপনাদের সবাইকে মানবতাকেন্দ্রিক পদ্ধতির জন্য একটি শক্তিশালী কণ্ঠস্বর হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার আহ্বান জানাই। আমরা পরিকল্পনা-এ এবং পরিকল্পনা-বি ব্যবহার করে অভ্যস্ত হতে পারি, কিন্তু আমাদের কোনো প্ল্যানেট-বি নেই, পৃথিবী আমাদের অদ্বিতীয় গ্রহ। তাই আমাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে, আমরা এই গ্রহটিকে কেবল আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য রক্ষা করছি।

আমি আশা করি, এ বিষয়ে আগামী কয়েকদিনে আপনারা অত্যন্ত গঠনমূলক আলোচনা করবেন। উপসংহারে পৌঁছানোর আগে আমি এই আলোচনায় অংশগ্রহণকারী সব সম্মানিত ব্যক্তিকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। সংলাপের এই অধিবেশনে তাদের মূল্যবান উপস্থিতির জন্য রুয়ান্ডার রাষ্ট্রপতি ও ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই। আমি আমার বন্ধু অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী এবং ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্টকেও ধন্যবাদ জানাতে চাই যারা পরবর্তীকালে সংলাপে যোগ দেবেন। সবশেষে সব সংস্থার কাছে আমার অশেষ কৃতজ্ঞতা এবং আন্তরিক অভিনন্দন। তারা বিভিন্ন ধরনের চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও এই বছরের রাইসিনা সংলাপকে বাস্তবায়িত করার জন্য দুর্দান্তভাবে কাজ করেছে।

প্রতি বছরের মতো এবারো দিল্লিতি গত ১৩ এপ্রিল রাইসিনা সংলাপ শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) এই সংলাপ শেষ হচ্ছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০২১
টিআর/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।