ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইসলাম

হজের বিভিন্ন আমলের ফজিলত- ০৪

পবিত্র কাবা শরিফের মর্যাদা

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০১৫
পবিত্র কাবা শরিফের মর্যাদা

কাবা এলাকা আল্লাহতায়ালা কর্তৃক সংরক্ষিত একটি নিরাপদ স্থানে। এখানে মানুষ, পশু-পাখি,  মশা-মাছি, গাছপালা, ফুল এমনকি এখানকার ঘাসও সব ধরনের অনিষ্টতা থেকে মুক্ত।

প্রথম কাবা ঘর নির্মিত হয়েছিল হজরত আদম (আ.)-এর জীবদ্দশায়। পৃথিবীর প্রথম ইবাদত ঘর কাবা নির্মাণ শেষে তিনি তার চারদিকে প্রদক্ষিণ করেছিলেন। এরপর হজরত ইবরাহিম (আ.) এ ঘর পুনর্নির্মাণ করেছিলেন যাতে তার পরিবার ও বিশ্বের মুসলমানরা এখানে নামাজ আদায় করতে পারেন। পরে অবশ্য বহুবার এ ঘরের সংস্কার কাজ সাধিত হয়েছে।

পবিত্র কাবা ঘরের উচ্চতা ১৫ মিটার। এর দৈর্ঘ্য ১২ মিটার ও প্রস্থ ১০ মিটার। একটি সমতল ক্ষেত্রের মাঝখানে অবস্থিত এ ঘরের চারদিকে রয়েছে মসজিদুল হারাম। এই ঘর খুবই সাদামাটা ও জাঁকজমকহীন হওয়া সত্ত্বেও দেখতে খুবই আকর্ষণীয় এবং ঔজ্জ্বল্যে ভরপুর। কাবা ঘরের সাদামাটা সৌন্দর্য ও অনাড়ম্বরতাই একে দিয়েছে অনন্যতা এবং শ্রেষ্ঠত্ব।

আল্লাহতায়ারা কাবাঘরের স্থান নির্ধারণ করেছেন পাথুরে পাহাড় ও স্বল্প পানিযুক্ত একটি কম জনবসতিপূর্ণ এলাকায় তাদের জাগরণের ও দৃঢ়তার মাধ্যম হিসেবে। আল্লাহতায়ালা চেয়েছেন বনি আদম যেন এ ঘরমুখি হয় এবং তাদের মনকে এদিকে কেন্দ্রীভূত করে ও এ ঘরের চারদিকে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বা আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই- এ কথার স্বাক্ষ্য দেয়।

আল্লাহতায়ালার অভিপ্রায় হলে পৃথিবীর সবচেয়ে ভালো ও সুন্দরতম স্থানে কাবাবে প্রতিষ্ঠা করতে পারতেন। তিনি এ ঘরের পাথরগুলোকে সবুজ মর্মর বা লাল চুনি পাথরের করতে পারতেন। কিন্তু আল্লাহ তার বান্দাদের নানা বিপদ-আপদের মধ্যে পরীক্ষা করেন। তিনি চান তারা নানা অভাব-অনটনের মধ্যেও তার ইবাদত করুক। তাই তিনি তাদেরকে দুঃখ-দুর্দশায় নিপতিত করেন। এসব কিছুই দেয়া হয়েছে তাদের মন থেকে সব ধরনের অহংকার ও গরিমা দূর করার জন্য এবং তাদেরকে বিনয়ী করে তোলার জন্য এবং তার দয়া ও ক্ষমা সহজতর করার উপায় হিসেবে।

আল্লাহতায়ালা কাবা ঘরকে নিজের সঙ্গে সম্পর্কিত করে এ ঘরকে মহিমান্বিত করেছেন। কাবাকে মানুষের জন্য ইবাদতের স্থান হিসেবে নির্ধারণ করে এ ঘরের চারদিকে শিকারসহ গাছ উপড়ানো নিষিদ্ধ করে মক্কাকে মানুষের জন্য  নিরাপদ অঞ্চল করেছেন। আল্লাহ এ ঘরের মর্যাদা রক্ষার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি দূর-দূরান্ত থেকে মানুষকে এ ঘরের কাছে আসতে বলেছেন। যাতে তারা এ ঘরের মালিকের প্রতি বিনম্রতা দেখাতে পারে এবং তার আল্লাহর গুণে নিজেদের গুণান্বিত করতে পারে। ‘

কাবা ঘর এমন স্থান, যার চারদিকে প্রদক্ষিণ করেছেন নবী-রাসূলরা। ফেরেশেতারাও তওয়াফ করে এই পবিত্র ঘর। কাবা মুসলমানদের ইবাদতের মূল অক্ষ এবং মুসলমানদের সামাজিক জীবনের প্রাণকেন্দ্র। মুসলমানরা প্রতিদিন কাবামুখি হয়ে ৫ বার নামাজ আদায় করেন। আর জিলহজ মাসে বিশ্বের নানা প্রান্তের লাখ লাখ মুসলমান কাবাকে ঘিরে গড়ে তোলেন ঐক্য, সহমর্মিতা ও ভালোবাসার মিলনমেলা। এভাবে কাবাকে ঘিরে মুসলমানদের তথা আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পিত মানুষদের একত্ববাদের চেতনার সবচেয়ে সুন্দরতম ও সম্মিলিত শক্তির প্রকাশ ঘটছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০১০ ঘন্টা, আগস্ট ২২, ২০১৫
এমএ/

** হজে যাওয়ার আগে বান্দার হক পূরণ করে যেতে হবে
** হজের সফরে মৃত্যুবরণকারীর মর্যাদা
** হারাম শরিফে নামাজ ও তাওয়াফের ফজিলত
** হজের সফরে খরচের প্রতিদান ব্যয় অনুপাতে প্রদান করা হবে
** হজযাত্রীদের জন্য যা জানা জরুরি
** মক্কা শরিফের দর্শনীয় কিছু স্থান
** কবুল হজের জন্য যে আমল বেশি বেশি করা দরকার
** হজ ফরজ হওয়ার শর্ত ও প্রকারসমূহ
** বদলি হজ আসলে কী?

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।