অধিকার আদায়ের রাষ্ট্রীয় ও আইনগত পন্থা হলো আদালতে মামলা করা। কিন্তু মামলা করার প্রক্রিয়া সম্পর্কে সঠিক ধারণা না থাকার ফলে সাধারণ মানুষ নানা ধরনের হয়রানির শিকার হন।
আমাদের বিদ্যমান বিচার ব্যবস্থায় অধিকাংশ মামলাই স্বত্ব বা জমি-জমা সংক্রান্ত। আর দেওয়ানি মামলার বেশিরভাগই স্বত্বের মামলা। তাই এ সংক্রান্ত মামলার ধারবাহিক স্তরগুলো জানা খুবই প্রয়োজন।
দেওয়ানি মামলার স্তরগুলো জানা থাকলে একজন বাদী, বিবাদী ও আইনজীবীর পক্ষে মামলা পরিচালনা করা অনেক সহজ হয়। তবে শুধু দেওয়ানি মামলাই নয় যেকোনো মামলাতেই কয়েকটি স্তর প্রযোজ্য হয়।
দেওয়ানি মামলায় সর্বপ্রথম স্তর হলো সেরেস্তাদারের কাছে মামলার আরজি (লিখিত বিবরণ) দাখিল করা। আরজির সাথে ওকালতনামা, যে সমস্ত দলিল বা কাগজপত্রের ওপর বাদীর মামলার প্রমাণ নির্ভর করে সে সমস্ত দলিল ও কাগজপত্র প্রয়োজনীয় কোর্ট ফি, প্রসেস ফি, সমন এবং ডাকযোগে সমন জারির জন্য প্রয়োজনীয় প্রাপ্তিস্বীকারপত্র দাখিল করতে হয়। বাদী স্বয়ং বা তার আইনজীবীর মাধ্যমে আরজি পেশ করতে পারেন।
আরজি দাখিলের সঙ্গে সঙ্গেই কিছু বিষয় পালন করতে হয়। যেমন:
-মামলার বিষয়বস্তুর মূল্যায়ন সঠিকভাবে হয়েছি কি-না এবং আরজিটিতে যথার্থভাবে কোট ফিস প্রদান করা হয়েছে কি-না ইত্যাদি।
আরজিতে উপরোক্ত কাগজপত্র প্রদান করা না হলে বা সঠিকভাবে পূরণ না করা হলে বা ত্রুটিপূর্ণ রয়ে গেলে আদালতের নির্দেশ অনুসারে অনধিক ৭ দিনের মধ্যে তা পূরণ করতে হবে এবং তা পূরণ না করা হলে আদালত দেওয়ানি কার্যবিধির অনুসারে আরজি নাকচ করে দিতে পারেন।
আরজি ও আরজির সাথে সংশ্লিষ্ট সব কিছু যথাযথভাবে পরীক্ষার পর কোনো ত্রুটি দেখা না গেলে সেরেস্তাদার আনুষ্ঠানিকভাবে মামলা শুরু করার জন্য আরজিটি পেশকারের কাছে পাঠিয়ে দেন। কোর্ট ফিস, প্রসেস ফিস, সমন ইত্যাদি সঠিক না হলে বা দাখিলকৃত দলিল এবং ওকালতনামা ইত্যাদির মধ্যে কোনো ত্রুটি বা অনিয়ম থাকলে বা আরজিতে অন্য কোনো ত্রুটি থাকলে সেরেস্তাদার ত্রুটি বা অনিয়মগুলো দূর না হওয়া পর্যন্ত স্থগিত রাখতে পারেন। বাদী বা মামলা কারী সঠিকভাবে পূরণ করে দিলেই আনুষ্ঠানিকভাবে মামলা শুরু করা হয়।