ঢাকা: আদালতে দুই হাজার কোটি টাকা পাচারের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন মানিলন্ডারিং মামলার আসামি দুই ভাই। যাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে থেকে বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়েছেন স্বীকারোক্তিতে তাদের নামও উল্লেখ করেছেন তারা।
আসামি দুই ভাই হলেন—ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন ওরফে বরকত ও তার ভাই ফরিদপুর প্রেসক্লাবের বহিষ্কৃত সভাপতি ইমতিয়াজ হাসান রুবেল।
শনিবার (২৫ জুলাই) ঢাকা মহানগর হাকিম মাহমুদা আক্তারের আদালতে তারা এই জবানবন্দি দেন।
দুই হাজার কোটি টাকা মানি লন্ডারিং মামলায় দুই দফায় পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে তদন্ত কর্মকর্তা অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সহকারী পুলিশ সুপার উত্তম কুমার বিশ্বাস আসামি দুই ভাইকে আদালতে হাজির করেন।
পরে ঢাকা মহানগর হাকিম মাহমুদা আক্তারের আদালতে তাদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। এ সময় তারা কীভাবে অবৈধভাবে বিপুল অর্থ উপার্জন করেছেন এবং কীভাবে বিদেশে এই অর্থ পাচার করেছেন সে বিষয়ে আদালতকে জানান। বক্তব্য রেকর্ড করার পর ম্যাজিস্ট্রেট তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
সিআইডি পরিদর্শক এস এম মিরাজ আল মাহমুদ এই দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের অভিযোগে গত ২৬ জুন রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলা করেন। মানি লন্ডারিংয়ের ওই মামলায় দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে দুই হাজার কোটি টাকার সম্পদ অবৈধ উপায়ে উপার্জন ও পাচারের অভিযোগ আনা হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উত্তম কুমার বলেন, রুবেল ও বরকত স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে যাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে থেকে হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদের মালিক হয়েছেন তাদের সবার নাম উল্লেখ করেছেন।
গত ১৩ জুলাই ভার্চ্যুয়াল আদালতের মাধ্যমে সিআইডি ১০ দিনের রিমান্ড চায়। ওই সময় ফরিদপুর জেলা কারাগারে থাকা অবস্থায় জেলগেটে জুম অ্যাপসের মাধ্যমে শুনানিতে উপস্থিত থাকেন বরকত ও রুবেল। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতিকুল ইসলাম দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গত ১৯ জুলাই ভোরে সিআইডি দুই ভাইকে ফরিদপুর জেলখানা থেকে নিজেদের জিম্মায় নেয়। তাদের সরাসরি ঢাকার মালিবাগে সিআইডি কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়। দুই দিন রিমান্ড শেষে সিআইডি গত ২১ জুলাই ফের পাঁচ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত তিনদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তিনদিনের রিমান্ড শেষ হওয়ার পর শনিবার রুবেল ও বরকতকে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতিকুল ইসলামের আদালতে সোপর্দ করা হলে তারা দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন।
গত ৭ জুন ফরিদপুর শহরের গোলচামত এলাকায় জনৈক সুবল চন্দ্রের বাড়িতে হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে সাজ্জাদ, রুবেলসহ ৯ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৫৭ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০২০
এমজেএফ