চা পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় পানীয়গুলোর একটি। এটা যেমন আমাদের ক্লান্তি দূর করে, তেমনি স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী।
চায়ের উল্লেযোগ্য পরিমাণে ক্যাফেইন ও থিয়ানাইন নামে দুটি উপাদান রয়েছে। এগুলো মস্তিষ্ককে উদ্দীপিত করে এবং মনোযোগের ক্ষমতা বাড়ায়। এগুলো কাজের সময় ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করে।
চায়ের ট্যানিন নামে এক ধরনের উপদান আছে, এটা হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে। খাবার খাওয়ার পর এক কাপ চা হজমে সহায়ক হতে পারে, বিশেষত গ্রিন টি ও আদা চা।
চায়ে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট আছে। এগুলো ব্লাড প্রেসার ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে, রক্তের ধমনিগুলোকে সুস্থ রাখে, ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব রিডিং-এর পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান বিভাগের গবেষক ড. নিকোলাস ডি. টাউনসেন্ড বলেন, চা পানে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে।
পলিফেনল ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট নামে দুটি উপদান আছে চায়ে। এ উপাদান দুটি দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এটি শরীরকে ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ থেকে রক্ষা করে।
গ্রিন টি বা ওলং চা মেটাবলিজম বাড়ায়। এগুলো শরীরের অতিরিক্ত চর্বি পোড়াতে সাহায্য করে। অর্থাৎ চা স্বাস্থ্যকর উপায়ে ওজন কমাতে সাহায্য করে।
চা রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। বিশেষ করে ব্ল্যাক টি ও গ্রিন টি ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে কার্যকর।
চায়ের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ত্বকের কোষগুলিকে সজীব রাখে, ত্বককে উজ্জ্বল করে এবং বার্ধক্যের ছাপ কমায়।
চায়ের নামে এক ধরনের উপাদান থাকে। থিয়ানাইন মস্তিষ্ককে শিথিল করে এবং স্ট্রেস কমায়। এটি মানসিক চাপ দূর করতে এবং বিষণ্ণতা কমাতে সাহায্য করে।
চায়ে থাকা পর্যাপ্ত পরিমাণে ফ্লুরাইড এবং হাড়ের জন্য অন্যান্য উপাদান আছে। সেগুলো হাড়কে শক্তিশালী করে এবং অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি কমায়। বিশেষ করে বয়স্কদের জন্য উপকারী। ফ্লুরাইড দাঁতের সুরক্ষা নিশ্চিত করে।
আগেই বলেছি চায়ে পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট আছে। শরীরের কোষগুলো ক্ষতি কমিয়ে দেয় এই অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। ফলে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। বিশেষ করে গ্রিন টি এবং হোয়াইট টি এ ক্ষেত্রে বেশি কার্যকর।
এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউটস অব হেলথের গবেষক ড. মেগান আর. স্টাবল বলেন, চায়ের পলিফেনলস এবং ফ্ল্যাভোনয়েডস উপাদানগুলো ফ্রি র্যাডিক্যালস তৈরিতে বাধা দেয় এবং কোষের কোষের ক্ষয় ও অস্বাভাবিক বৃদ্ধি রুখে দেয়। ফলে চা ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক হয়ে ওঠে।
সতর্কতা
দিনে ২-৩ কাপের বেশি চা পান করবেন না।
চায়ে অতিরিক্ত চিনির ব্যবহার এড়িয়ে চলুন।
গ্রিন টি, আদা চা, বা লেবু চা বেশি স্বাস্থ্যকর বিকল্প হতে পারে।
খালি পেটে চা না পান করার চেষ্টা করুন, এটা অ্যাসিডিটি বাড়াতে পারে।
চা শুধু আমাদের পানীয় নয়, এটি স্বাস্থ্যের জন্য এক আশীর্বাদ। সঠিক সময়ে এবং সঠিক পরিমাণে চা পান করলে এটি শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই, পরিমিত চা পান করুন এবং এর অসাধারণ উপকারিতা উপভোগ করুন!
এএটি